১. নিম্নে কয়েকটি মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা উল্লেখ করা হলো :
ক. পর্যায়বৃত্ত ধর্ম কি?
খ. উল্লেখিত গ্রুপের মৌলগুলো গ্রুপ 'ও' এর অন্তর্ভুক্ত- ব্যাখ্যা কর।
গ. প্রদত্ত মৌলগুলোর পারমাণবিক ব্যাসার্ধ কিভাবে পরিবর্তিত হয় ব্যাখ্যা হয়।
ঘ. 'ণ' এবং 'ত' মৌলের অঙ্াইড ভিন্নধর্মী- ব্যাখ্যা কর।
২. নিচের বিক্রিয়াগুলো লক্ষ্য কর এবং নিম্নের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ক. সংশ্লেষণ বিক্রিয়া কি?
খ. সকল সংশ্লেষণ বিক্রিয়াই সংযোজন বিক্রিয়া, তবে সকল সংযোজন সংশ্লেষণ নয়- ব্যাখ্যা দাও।
গ. ii.. নং বিক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপ এর মান সর্বদা ধ্রুব থাকে কেন?
ঘ. iii. নং বিক্রিয়ায় জারণ এবং বিজারণ একই সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে-ব্যাখ্যা কর।
১ নং প্রশ্নের উত্তর :
ক. মৌলসমূহের কতিপয় ধর্ম পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়। তাকে পর্যায়বৃত্তিক ধর্ম বলে।
খ. উল্লেখিত গ্রুপের মৌলসমূহের ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নে দেখানো হলো :
আমরা জানি ইলেকট্রন বিন্যাসই পর্যায় সারণীর মূলভিত্তি। মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস অনুযায়ী তাদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন সংখ্যাই তার গ্রুপ সংখ্যা।
যেহেতু মৌলসমূহের প্রত্যেকটিরই সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে একটি ইলেকট্রন বিদ্যমান তাই এরা গ্রুপ র এর অন্তর্ভুক্ত।
গ. প্রদত্ত মৌলগুলো একটি গ্রুপ এবং একটি পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। একই গ্রুপের মৌলগুলো ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায় যে, উপর থেকে নিচের দিকে মৌলসমূহের পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শেল/শক্তিস্তর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, ফলে পারমাণবিক ব্যাসার্ধও বৃদ্ধি পায়।
অপরদিকে একটি পর্যায়ের যতই বামদিক থেকে ডানদিকে যাওয়া যায় পারমাণবিক ব্যাসার্ধ ততই হ্রাস পায়। এর কারণ হলো : একই পর্যায়ের বাম থেকে ডানদিকে গেলে পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শেল সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে, অর্থাৎ একই শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা বাড়তে থাকে।
ইলেকট্রন সংখ্যা যেমনি বৃদ্ধি পায় তেমনি নিউক্লিয়াসে প্রোটন সংখ্যাও বাড়তে থাকে। অর্থাৎ ধনাত্দক ঋণাত্দক চার্জ সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শেলটি নিউক্লিয়াস কর্তৃক বেশি জোরে আকর্ষিত হয়।
তাই একই পর্যায়ের ডান মৌলের পারমাণবিক ব্যাসার্ধ ছোট হয়।
ঘ. Y মৌলটি অ্যালুমিনিয়াম (Al) যার পারমাণবিক সংখ্যা ১৩। অপরদিকে Z মৌলটি ক্লোরিন (Cl) যার পারমাণবিক সংখ্যা 17.
অ্যালুমিনিয়াম এর অঙ্াইড হলো Al2O3,, অপরদিকে ক্লোরিন এর অঙ্াইড হলো Cl2O7
এ দুটি অঙ্াইডই ভিন্নধর্মী।
অ্যালুমিনিয়াম অঙ্াইড একটি উভধর্মী অঙ্াইড। এটি এসিড এবং ক্ষার উভয়ের সঙ্গেই বিক্রিয়া করে লবণ পানি উৎপন্ন করে।
Al2O3+6HCl ® 2AlCl3 + 3H2O (Al2O3 এর ক্ষার ধর্মের প্রমাণ)
Al2O3 + 2NaOH ® NaAlO2+H2O (Al2O3 এর অম্ল ধর্মের প্রমাণ)
অপরদিকে Cl2O7 অম্লধর্মী অঙ্াইড, এটি পানির সঙ্গে বিক্রিয়া করে তীব্র অম্ল পারক্লোরিক এসিড উৎপন্ন করে, আবার ক্ষারের সঙ্গে বিক্রিয়ায় পারক্লোরেট লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
Cl2O7 + 2NaOH = 2NaClO4 + H2O, তাই বলা যায় Y এবং Z মৌলের অঙ্াইড ভিন্নধর্মী।
২ নং প্রশ্নের উত্তর :
ক. যে বিক্রিয়ায় কোনো যৌগ তার উপাদান মৌলসমূহের প্রত্যক্ষ সংযোগে উৎপন্ন হয় তাকে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া বলে।
যেমন : 2Na+Cl2= 2NaCl
খ. যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো যৌগ তার সরলতম উপাদানসমূহের প্রত্যক্ষ সংযোগে উৎপন্ন হয় তাকে সংযোজন বলা হয়।
যেমন : 2Na+Cl2= 2NaCl
আবার যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো যৌগ শুধু তার উপাদান মৌলসমূহের প্রত্যক্ষ সংযোগে উৎপন্ন হয় তাকে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া বলে।
যেমন : 2Na+Cl2=2NaCl
তাই বলা যায় সকল সংশ্লেষণই সংযোজন বিক্রিয়া তবে সকল সংযোজন সংশ্লেষণ বিক্রিয়া নয়।
গ. ii.নং বিক্রিয়াটি একটি প্রশমন বিক্রিয়া। আমরা জানি, এসিড এবং ক্ষার বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে এবং তাপ উৎপন্ন করে।
অর্থাৎ এটি একটি তাপোৎপাদী বিক্রিয়া
ii. নং বিক্রিয়াটিতে একটি তীব্র এসিড এবং তীব্র ক্ষার বিক্রিয়া করে লবণ পানি উৎপন্ন করে।
যে কোনো তীব্র এসিড এবং তীব্র ক্ষার মূলত নিম্নোক্ত রূপে আয়নিত হয়ে বিক্রিয়া করে H++Cl-+ Na++OH- ®Na+Cl-+ H2O H++Cl-+k+OH-® k+Cl-+H2O..
অর্থাৎ তীব্র এসিড এবং তীব্র ক্ষারের বিক্রিয়ায় সব সময় এক মৌল পরিমাণ পানি উৎপাদিত হয়
H++OH-®H2O
তাই এতে উৎপন্ন তাপের পরিমাণ ধ্রুব থাকে।
ঘ. উদ্দীপকের ররর. নং বিক্রিয়াটিতে জারণ এবং বিজারণ একই সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে।
ইলেকট্রনীয় মতবাদ অনুযায়ী, যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন ত্যাগ করে তাকে জারণ এবং যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাকে বিজারণ বলে।
উল্লেখিত বিক্রিয়ায় H2SO4 আয়নিত হয়ে নিম্নোক্ত রূপে অবস্থান করে।
জিংক মৌলটি ২টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে Zn2+ আয়ন গঠন করে যা একটি জারণ বিক্রিয়া। অপরদিকে H+ আয়ন সেই ইলেকট্রন গ্রহণ করে H2 ও পরিণত হয় যা একটি বিজারণ বিক্রিয়া।
Zn-2e-= Zn2+(জারণ)
2H++2e-= 2H(বিজারণ),H+H=H2
যেহেতু কোনো মৌল ইলেকট্রন ত্যাগ করলে অন্য কোনো মৌল সেই ইলেট্রন গ্রহণ করে তাই বলা যায় উল্লেখিত বিক্রিয়ায় জারণ বিজারণ একই সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।