আম্মাগো লাশ,ঐখানে একটা লাশ। "৭ বছরের কাব্যের এমন অনেক কথাই করিমনকে এড়িয়ে যেতে হয়। বাচ্চা মানুষ,কি বলতে কি বলে। কিন্তু লাশ শব্দটা ও শিখল কোথ্থকে। ঐটুকুন বাচ্চা কই প্রজাপতির ডানায় রংচড়াবে কিংবা বুনো ফড়িংয়ের গলায় মালা পরাতে পারেনি বলে অভিমান করবে তা না?সারাটা দিন কেমন ভয়ে কুকড়ে থাকে।
ওর বাবাটা সারাদিন অফিসে থাকেন । রাত করে ফিরেও কখনো কাব্যের ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে ছোট্ট করে নিঃশ্বাস নেন "আহা"। করিমন অনেকদিন এই আহা শব্দের মানে খুজেছে। মধ্যবিত্তের সংসারে এত মানে খুজতে হয়না। কাব্য আবার চেচায় আম্মা লাশ,না না নড়ছে তো।
এবার করিমনকে উঠতেই হ্য়। জানালার ফাক দিয়ে দেখে একটা লাল চাদরে মোড়ানো মানুষকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু কেউ এগিয়ে যায়না। হয়ত ভয়ংকর কেউ হবে হ্য়ত। লাশটা এবারএকটু নড়ে উঠে।
কিন্তু সমস্যা হল মুখটা দেখা যাচ্ছেনা। করিমনের সেই ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ভয়ংকর মানুস দেখবে। কি করে ভয়ংকর হল জানবে। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের কাউকে এত কিছু জানতে হয় না। মানুষটা আর নড়ছে না।
পুলিশের গাড়ি েসেছে লাশটা নিয়ে যেতে। যাক তাতে ওর কি মনে মনে পুলিশকে হাজারটা ধন্যবাদ দেয়। ওহ ভাতটা পুড়ল বোধহয়। করিমন ফিরে যায় নিজের কাজে।
কাব্যটা আরো মুষড়ে পড়ে।
পুলিশ,বন্দুক ,রক্ত একসাথে কখনো দেখেনিতো.......করিমনের সময় এগিয়ে চলে না জানতে পারার শত ব্যর্থতায়.
পরিশিষ্ট
ভোররাতে কাব্যের বাবার লাশটা বাসায় আসে। এলাকার সবাই তন্ময় হয়ে দেখতে আসে ভয়ংকর একটা মানুষের লাশ। করিমন শুধু ভাবে ইস একটাবার যদি জানতে পারতাম মানুষ কি করে ভ্য়ংকর হয়?ওর চোখে অশ্রু নেই। সেই মধ্যবিত্ত পরিবারের না জানতে পারার তৃষিত ক্ষণ। কাব্যটা এককোণে বসে থাকে।
সবাই সেই ভয়ংকর মানুষটার পুত্রের ভয়ংকর ভবিষ্যতে শিহরিত হয়। একদল মানুষ চরম স্বস্তিতে মহল্লায় মিষ্টি বিতরণ করে। করিমনের খুব ইচ্ছা করে একটা মিষ্টি খেতে। একটা ভয়ংকর মানুষতো!!!!!!!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।