'রাজনীতি করলে খুন-ধর্ষণ সব করতে পারব' আমাদের এমন একটা সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে। ক্রাইমের রাজনীতিকীকরণের কারণেই এটা হচ্ছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় হলো। এখন কিছু দল এটা নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছে। এটাই ক্রাইমের রাজনীতিকীকরণ।
এখান থেকে বের হতে হবে। তাহলেই আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বদলাবে। শনিবার চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের টকশো 'পূর্বাপর'-এ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ এ কথা বলেন।
ফারাবী হাফিজের উপস্থাপনায় তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন সবকিছু রাজনৈতিক। অনেকে ফুটপাত নিয়ে কথা বলেন।
ঢাকা শহরের ফুটপাতে কোনো দোকান নেই দেখতে পারলে আমি হতাম সবচেয়ে সুখী মানুষ। কিন্তু আপনি যখনই ফুটপাত থেকে দোকান তুলে দেবেন, তখনই রাস্তায় মিছিল হবে, কিছু লোক সরকারের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যাবে। এখানে ভালো আর খারাপ যাই করেন সবকিছুর পেছনে রাজনীতি আছে। ভালো কাজ করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়। কেউ হাইকোর্টে গিয়ে একটা রায় নিয়ে আসেন, আমরা ঢাকা সিটিকে পরিষ্কার করে দেব মাত্র ছয় ঘণ্টায়।
পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের মতো আচরণ করছে- বিএনপির এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদ বলেন, শাহবাগ মোড়ে যারা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন তাদের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলে কি গ্রেফতার করা যাবে না? রাজনৈতিক পরিচয় থাকার কারণে কি খুন করে পার পেয়ে যাবেন তিনি? এটা কি আমার কোনো দলের পক্ষে কাজ করা? যখন বাংলামোটরে পুলিশ সদস্যকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয় এবং আমরা দেখি একটা দলের ইয়ং ফ্রন্টকে এগুলো করার নির্দেশ দেওয়া হয়, করতে পারলে বড় পদে বসানো হয়, তখন ওই সহিংসতা সৃষ্টিকারীকে গ্রেফতার করা কি অন্যায়? তিনি বলেন, আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব শতভাগ প্রতিপালন করার চেষ্টা করি। আমাকে প্রায় ৩৬ হাজার পুলিশ সদস্যের নেতৃত্ব দিতে হয়। সেখানে কারও যদি কোনো দলের প্রতি ব্যক্তিগত আনুগত্য থাকে তা বের করা কঠিন। তবে পুলিশ কাজ করে আইনের কাঠামোর আওতায়। এখানে ইচ্ছা করলেই সবকিছু করা যায় না।
আবার ইচ্ছা করলেই সবকিছু এড়িয়ে যাওয়া যায় না। মনে রাখতে হবে এখানে সিভিল সোসাইটি ও মিডিয়া অনেক শক্তিশালী। বিচারব্যবস্থা স্বাধীন। ফলে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা যদি আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করেন তাহলে রাষ্ট্রের এসব মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নজরদারির বাইরে যেতে পারবে না। অভিযোগ আছে ঢাকা শহরের সব থানায় হয় ওসি, না হয় সেকেন্ড অফিসার গোপালগঞ্জের।
গোপালগঞ্জের মানুষ হিসেবে এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?- সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা অপপ্রচার। ঢাকা শহরে এসপি পর্যায়ের ৪২টি পদ আছে। এর মধ্যে মাত্র দুজনের বাড়ি গোপালগঞ্জে। ৪৯ থানার মধ্যে মাত্র পাঁচ-ছয়জন ওসির বাড়ি গোপালগঞ্জ। এ ছাড়া কারও বাড়ি গোপালগঞ্জ হওয়া নিশ্চয়ই তার অযোগ্যতা নয়।
বাড়ি, গায়ের রং, বংশ এগুলো বিবেচনা করা হীনম্মন্যতা। ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত। ঢাকা শহরে ৪৯টি থানা আছে। তার মধ্যে মাত্র ১২টি সরকারি জায়গার ওপর। বাকিগুলো ভাড়া বাড়িতে।
পুলিশের থানা করার জন্য বাড়ির মালিক সেটি তৈরি করেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।