আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই শেয়ার বাজারের অস্থিরতা বাড়ে, কারসাজি শুরু হয় এবং মূলধন হরিলুট হয়। আমরা ১৯৯৬ সালে দেখেছি কেমন করে তাদের কারসাজিতে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিঃস্ব সর্বস্বান্ত হয়েছিলো। বলাই বাহুল্য যে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিলো যে সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে শেয়ার বাজারের ঘটনাটি ঘটেছিলো। তখন সবারই ধারণা হয়েছিলো যে নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে যারা অর্থ সাহায্য দিয়ে জিতিয়েছিলো, তারাই তাদের পুঁজি উঠিয়ে নেয়ার জন্য শেয়ারবাজারকে বেছে নিয়েছিলো।
সুদূর হংকং এর ভারতীয় বংশোদ্ভুত কিছু মারোয়ারী ব্যবসায়ীও এ সুযোগ নিয়েছিলো। বলা হয়ে থাকে যে তারাও আওয়ামী লীগকে অর্থ যুগিয়েছিলো। এ থেকে এটা প্রমানিত যে শেয়ার বাজারের মূলধন লুটের ঘটনায় তৎকালীন সরকারের নীরব সম্মতি ছিল।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলো। জনগণ ধরে নিয়েছিলো যে এবার আওয়ামী লীগ আগের মত ভুল করবে না।
কিন্তু ক্ষমতায় আসার কয়েকমাসের মধ্যেই চাঙ্গা শেয়ার বাজারে অস্থিরতা শুরু হলো এবং ক্রমাগত দর পতনের মধ্য দিয়ে অসংখ্য ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে এবং আরও অনেকেই সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ ব্যাপারে সরকারের ভূমিকা স্বচ্ছ নয়। মাঝে মাঝেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী এবং সরকারের অন্যান্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ’সতর্ক হওয়ার’, ’অতি লোভ না করার’, উপদেশ বা জ্ঞান দান করেন। তাদের জন্য কেউ কেউ আবার মায়াকান্নাও দেখান। ব্যাপারটা অনেকটা ’গোড়া কেটে আগায় জল দেয়ার’ মত।
কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছে এ উপদেশ ’গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার মত।
এ দেশের অনেক শিক্ষিত বেকার, যারা চাকুরী না পেয়ে হতাশায় ভুগছিলো, তারা জমি, অলঙ্কার, ইত্যাদি বিক্রী করে শেয়ার বাজারে মূলধন খাটিয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলো। জীবনকে নিয়ে নূতন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলো। এরই মধ্যে আওয়ামী সরকারের মদদে কিছু অসাধু, অসৎ, লোভী ব্যবসায়ীর কারসাজি তাদের বেঁচে থাকার এ শেষ সুযোগটাও কেড়ে নিলো। শেয়ার বাজারের ধ্বসের পেছনে কারা ভূমিকা রেখেছে? কেন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? বারবার কেন তারা পাড় পেয়ে যাচ্ছে? এর জবাব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেবেন কি? অসম্পূর্ণ হলেও জনাব ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত (?) রিপোর্ট অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন এখনও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? সরকার কাদের স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত? আওয়ামী ঘরানার কতিপয় অসৎ, অসাধু ও লোভী ব্যবসায়ী শেয়ার বাজারের মূলধন ছিনতাইয়ে জড়িত বলেই কি তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে না? আপনারা ক্ষমতায় - ইচ্ছে করলেই অসহায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে পারেন কিংবা তাদের ধ্বংসও করে দিতে পারেন? মনে রাখবেন ’এক মাঘে শীত যায় না’।
প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিদের খুজে বের করুন এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। আর তা না হলে এ বাংলার মাটিতে গণ-আদালতে আপনাদের বিচার করা হবে। এখানেই আপনাদের জীবন্ত কবর দেয়া হবে। অতএব, সাবধান! ভুল করলে এভাবেই ভুলের খেসারত দিতে হবে। তাই আকুল আবেদন, অনতিবিলম্বে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং তাদের দ্বারা লুন্ঠিত অর্থ শেয়ার বাজারে ফিরিয়ে আনুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।