সত্য অথবা মিথ্যা দুটোই হতে পারে। বিশ্বাস করা আর না করা আপনার ব্যপার। রাত ৯.০০ টা
ইবনে সিনা হাসপাতাল। ৫ তালার একটি কেবিনের বারান্দায় দাড়িয়ে আছে শিপা। মা মাত্র ঘুমালো।
কতক্ষন আর বই পরতে ভাল লাগে? বারান্দাটাও এমন দাড়ালে শুধু চারপাশে বিল্ডিং দেখা যায়। ভালো লাগে না। ক্রিং, ক্রিং। ইমুর কল। যাক এখন কারো সাথে কথা বলা যাবে।
ইমু: ফোন ধরতে এতখন লাগে?কি করিস?
শিপা: বারান্দায় দাড়ায় আছি।
ইমু: লাফ দিবি? লাফ দেনা দোস্ত। প্লিজ....
শিপা: কেন?আমি লাফ দিলে তোর লাভ কি?
ইমু: আরে কি কস !! তোর চল্লিশা হবে আর একটা জটিল খাওয়া দিমু।
শিপা: তুই ফোন রাখ।
ইমু: সরি দোস্ত।
আর কমুনা। তোর আম্মা কি করে?
শিপা: ঘুমায়।
ইমু: খাওয়া-দাওয়া হইছে?
শিপা: না। মা ওঠলে তারপর হবে।
ইমু: মা এখন কেমন?
শিপা: মা আমার।
আর তুই মা মা করিস কেন?
ইমু: আরে আজব!! কয়দিন পর আমার শ্বাশুরি হইব এখন তারে আন্টি কইতে ইচ্ছা করে তুই বল?
শিপা: আমি রাখি।
ইমু: ওকে রাখ। আর তুই কিন্তু রাতে খাইস না। এমনেই তোর ওজন মাশাল্লাহ আর কিছু কইলাম না।
কলটা কেটে দিয়ে মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল শিপার।
রাগে তখন গা জ্বলছে। মা ডাকলো মনে হয়।
রাত ১০.৩০ টা
খাওয়া মাত্র শেষ হলো আম্মুর।
শিপা: মা শুয়ে পর।
মা: তুই খাবি না?
শিপা: না।
ইচ্ছা করছে না। সকালে ওঠতে হবে তোমাকে। ঘুমাও।
মা: খেয়ে নিস।
শিপা: একটু বাইরে যাই?
মা: যা।
দেরি করিস না।
পাশ ফিরে শুয়ে পরলেন মা। একটু পর বুঝা যাচ্ছে মা ঘুমিয়ে গেছেন। শিপা বাইরে করিডরে হাটতে থাকে। সময় কাটছে না।
মা ঘুমিয়ে তাই টিভি ও দেখা যাবে না।
রাত ১১.০০ টা
ক্রিং, ক্রিং। ইমুর কল। মনে পরল একটু আগে কি বলছিল। লাইনটা কেটে দিল শিপা।
ধরব না। জীবনেও আর কথা বলব না। ১বার,২বার,৩বারের সময় শিপার মনে হলো আচ্ছা দেখি না কি বলে। একটু কথা বলেই রেখে দিব।
শিপা: কেন কল করছিস? আর জীবনেও আমাকে কল দিবি না।
ইমু: আচ্ছা দিব না। কি করিস?
শিপা: একজনকে বদদোয়া দিচ্ছি।
ইমু: আমাকে দিস না। এমনেই কষ্টে আছি।
শিপা: কিছু বলবি?
ইমু: বলতেই তো কল করছি।
মনে কইরো না যে তোমার কথা শুনতে কল করছি। মা ঘুমাইছে?
শিপা: হ্যা।
ইমু: বাচলাম। নিচে আয়। আমি নিচে দাড়ায় আছি।
শিপা: এখন?????
ইমু: কাল ইচ্ছা হলে নিচে আসতে পারো। কিন্তু আমি ততখন দাড়ায় থাকতে পারবো না।
শিপা: আমি পারবো না।
ইমু: ২ মিনিটের জন্য আয়। প্রমিজ তোকে কিডন্যাপ করবো না।
শিপা: ২ মিনিট। ঠিক তো?
ইমু: আয়।
শিপা একবার মায়ের দিকে তাকায় তারপর সিড়ির দিকে পা বাড়ার। তখন খেয়াল হয় লিফট আছে না??আবার লিফটে গিয়ে ডুকে। নিচে নেমে দেখে ইমু দাড়িয়ে।
শিপাকে দেখে ইমু কাছে আসে। দুইজনই চুপ করে থাকে। একটু পর ... একটা প্যাকেট তুলে দেয় শিপার হাতে।
ইমু: সিনেমার কাহিনী নকল করছি মনে করিস না। আসলে সমস্যাটা হল আমি যাই তোকে নিয়ে ভাবি তার সবই আগে ঐ সিনেমায় দেখায় ফেলছে।
তাই সবাই ভাবে আমি নকল করি। আমার কি দোষ বল??
শিপা: এটাতে কি?
ইমু: পরোটা আর ডিম ভাজি। তুই পছন্দ করিস তাই আনলাম।
শিপা: এখন কই পাইছিস?
ইমু: আমাকে দিয়ে সব সম্ভব। শুধু একটা কাজ পারব না।
তোকে ভুলতে পারবো না।
শিপা: সব জেনেও এমন করিস কেন?তুই এমন কেন?
ইমু: আমি এমনই। তুই রুমে যা।
বলে হেটে চলে যেতে থাকে ইমু। পেছন থেকে শিপা তাকিয়ে থাকে।
বুঝতে পারে ইমু কাদছে।
রাত ১১.৩০টা
আবার সেই বারান্দায়। ক্রিং,ক্রিং।
শিপা: বল।
ইমু: ঘুমাস নাই কেন?আমার কথা ভাবতে হবে না।
ঘুমা।
শিপাএকটু হাসি)।
ইমু: একটা কথা তখন বলা হয় নাই।
শিপা: আবার ঐ কথা শুরু করিস না।
ইমু: না বলব না।
শিপা: তাইলে বল।
ইমু: তুই যদি আজ না এসে কাল নিচে আসতি আমি ঠিকই দাড়িয়ে থাকতাম ।
শিপা: আমি খুবই সরি ইমু।
ইমু: তুই সরি বলিস কেন? তুই আমাকে সহ্য করিস এটাই অনেক। ঘুমাতে যা।
রাখি।
লাইনটা কেটে যায়। কান থেকে তবু ফোনটা নামায় না শিপা। মনে হয় আরও কিছু কথা বলা বা শুনার বাকি ছিল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।