একটা মেয়ের একটু কথা।
উইলহ্যামদের বিরাট লনওয়ালা প্রাসাদপম বাড়ি। মেইনডোর হাট করে খোলা। দোতলায় কোনার একটা ঘরে হলুদ বাল্বের আলো জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। হলুদ আলোটাই কেমন জানি অসুস্থ একটা আলো।
পুরো বাড়িটায় অসুস্থ একটা পরিবেশ। এমন সময় কেউ একজন এসে মেইনডোরটি লাগিয়ে দেয়। পুরো বাড়ি ভর্তি অন্ধকার। পিছনের গার্ডেনে জুতোর খসখস শব্দ হচ্ছে। বাড়ির বেসমেন্টে একটা কুকুরকে মোটা শেকল দিয়ে খাচায় বন্দী করে রাখা হয়েছে।
যার মুখ আবার মোটা স্কচটেপ দিয়ে আটকানো। পুরোপুরি অসুস্থ একটা আবহাওয়া পাক খাচ্ছে বাড়িটি ঘিরে।
(১)
হঠাৎ কেন জানি ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ খোলার চেষ্টা করতে করতে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলো সে। ঘুম যখন ভেঙ্গেই গেছে তখন কেন ভাঙ্গলো সেটা নিয়ে চিন্তা করা অর্থহীণ।
পানির পিপাসা মেটানো যাক আগে। প্রবল পানির পিপাসা পেয়েছে। দপদপ করছে মাথার শিরা। আর ভীষন গরম লাগছে। পিপাসার কারণ বুঝতে পারলেও গরম লাগার কারণ বুঝতে পারছে না সে।
বেডটেবিলেই পানির বোতল থাকার কথা। আজ রাতে কি ডিমলাইটটা জ্বালানো হয়নি? আশ্চর্য রকমের অন্ধকার ঘরে। এতটা অন্ধকার কখনো দেখেনি সে! মনে হচ্ছে ঘরে কেউ কালো কালি গুলিয়ে মিশিয়ে দিযেছে। বিরক্তি আর ক্লান্তির সম্মিলিত একটা অনুভুতি হচ্ছে। পানি খেতে উঠতে গিয়ে কপালে ঠকাস করে বাড়ি খেল সে।
সে কিছু বুঝতে পারলো না প্রথমে। কিছুক্ষণ শুয়ে বোঝার চেষ্টা করলো। আবারো উঠতে গেল। আবারো ঠকাস করে বাড়ি খেল! মাথার উপর কি এটা! ছাদটা নীচে নেমে গেল নাকি! গা বেয়ে ঘামের স্রোত বয়ে গেল। তার লজিক সবসময়ই পরিষ্কার।
প্রথমেই তার মাথায় আসলো যে তাকে আটকে ফেলা হয়নি তো! এটাকে তো মনে হচ্ছে একটা বাক্স। দুপাশে হাত দিয়ে অনুভব করলো সে বাক্সটাকে। পা দিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করলো, বাক্সটা কত বড় হতে পারে। বেশী বড় না। একটা কফিনের সমান হবে! অন্ধকারেই দুচোখ বিস্ফোরিত হলো তার।
প্রথম প্রতিক্রিয়া হিসেবে গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিলো সে। সেই চিৎকারে তার নিজের মাথাই ঝনঝন করে উঠলো! নিজেকে প্রবোধ দিলো সে। হয়তো কোন দুঃস্বপ্ন দেখছে এই ভাবনাও মাথায় এলো। আঙ্গুলে প্রাণপণে কামড় দিয়ে রক্তের নোনা স্বাদ পেল! অবশেষে সেই ভাবনাও ত্যাগ করলো সে। এই প্রথম সব লজিক এলোমেলো হয়ে আসছে তার।
কিছুই মাথায় ঢুকছে না। ভয় করছে কেন জানি! বাক্সের ভিতর অক্সিজেন ফুরিয়ে যাবে এই ভয় পেয়ে বসলো তাকে। কতক্ষণ ধরে সে আছে বাক্সটার ভিতরে এটাও জানে না। বাক্সটা বেশী হলে আটফুট লম্বা হবে। প্রস্থ অনুমান করলো তিনফুট।
আর উচ্চতা দুফুট হলে আয়তন কত হবে? সুত্র মনে পড়ছে না। ঘনকের সুত্র হবে? নাকি আয়তক্ষেত্রের? আর আয়তন বের করে কি করবে সে? ভিতরে কতটুকু অক্সিজেন আছে বের করার আগেই তো অক্সিজেন শেষ হয়ে যাবে মনে হয়। আচ্ছা বাক্সটা কি নিরেট? নাকি ফাঁকফোকর আছে। ফাঁকফোকর থাকলে তো কিছু আলো ভিতরে প্রবেশ করতো! নিকষ কালো অন্ধকারে তার দুটি চোখ তৃষিতের মতো একফোটা আলো খুঁজতে থাকে। নাহ! নেই! আচ্ছা এমনও তো হতে পারে যে অন্ধকার ঘরে রাখা হয়েছে বলে আলো আসছে না! মাথায় আরেকটা ভয়ঙ্কর ভাবনা এলো! এমনও তো হতে পারে তাকে বন্দী করে গার্ডেনের পিছনে গর্ত খুড়ে পুতে ফেলা হয়েছে বাক্সসহ।
জীবনে এই প্রথম তীব্র আতংক পেয়ে বসলো তাকে। গলা শুকিয়ে এসেছে। তাকে এভাবে মেরে ফেলা হবে আগে জানলে ঘরে রাখা রিভলবারটার একটা গুলি খুলিতে পাঠিয়ে দিতো কবেই!
আতংক কাটছে না। আতংক বেড়েই চলেছে। ঠিক যেন অটোমেটিক কোন সিস্টেমে মস্তিষ্কে আতংকের লেভেল বেড়ে চলেছে।
বাক্স থেকে মুক্তি পাবে কিভাবে মাথায় আসছে না। বেঁচে থাকার আদিম প্রবৃত্তি অনুসারে অনেকবার চিৎকার করেছে সে! হাত পা দিয়ে বাক্সটার গায়ে আঘাত করেছে। কিন্তু তাতে কোন লাভ হলে এতক্ষণে হয়ে যেত। ক্ষীণ আশা, যদি তার চিৎকার লাইসার কানে যায়! লাইসা তার কুকুর! তার অন্ধকার জীবনে কোন মানুষকে ভরসা সে করতে পারে না কিন্তু এই কুকুরটাকে করতে পারে। লাইসা শুনতে পেলে হয়তো ঘেউ ঘেউ করে বাড়ি মাথায় তুলবে! মাটি খুড়তে শুরু করবে বা সবাইকে ডেকে নিয়ে আসবে এখানে! অতি ক্ষীণ আশা।
কিন্তু ডুবন্ত মানুষ খড়কুটো আকড়ে ধরে। বার কয়েক চিৎকার করে শক্তিক্ষয় করে সে ক্লান্ত হয়!
(২)
মনে করার চেষ্টা করলো শেষ কখন সে মুক্ত ছিল! দুদিন না ঘুমিয়ে ক্লান্ত হয়ে গতকাল দুপুরে দুটো স্কচ শেষ করে বিছানায় এলিয়ে পড়ে। ঘন্টা দুয়েক পরে আধো ঘুম আধো জাগরণে গ্রিলড চিকেনের খানিকটা খায়। কোন স্বাদ পাচ্ছিল না সে। এই অবস্থাতেই আকণ্ঠ পান করে সে।
পান করা সেদিন জায়েজ ছিল কারণ শত্রুদের কেউ বাসায় নেই। তার ভাই রোমেল আর ভাইবৌ রিসা কেউ ছিল না। এরপর আর মনে নেই। কিছুতেই মনে করতে পারছে না এরপর কিছু হয়েছিল কিনা। তবে তার এখন সবকিছু অর্থহীণ মনে হচ্ছে।
প্রয়োজন ছাড়া এক পা ফেলে না যে লোক তার কাছে নিশ্চিত মৃত্যু সামনে দেখে সব কিছু অর্থহীণ মনে হচ্ছে। এমনকি চিন্তা করাটাও। সে এটাও জানে না তাকে বন্দী করা হয়েছে কতক্ষণ হয়েছে। তবে রাতের মাঝের দিকে করা হতে পারে। এই সময়টায় ঘুম সবচেয়ে গাঢ় হয় তার আর এলিজাও ঘুমায় এই সময়ে।
তাহলে এখন কি দিন? উহু মনে হচ্ছে না কেন জানি। হয়তো রাতের শেষ!
তবে কে করতে পারে এই কাজ এটা নিয়ে ভাবা যেতে পারে। এতে দুটো লাভ হবে। আতংক কিছুটা কমে আসবে আর কে করেছে অনুমান করতে পারলে হয়তো মৃত্যুর আগে কিছুটা শান্তি লাভ করবে তার খুনি কে বুঝতে পেরে। কিন্তু তাতেও কি লাভ! কোন লাভ নেই বুঝে! তবে তার মস্তিষ্ক সাথে সাথে চিন্তা শুরু করে দিয়েছে।
মস্তিষ্কও একটা জিনিশ! কোন অবস্থায় কাজ করা ছেড়ে দেয় না! বাসায় রোমেল আর রিসা ছিল না তার মানে এই না যে কিছুক্ষণ পরে তারা আসেনি। কিন্তু শনিবার রাতে মেইনডোরে যে বিশেষ লকার লাগানো থাকে তার চাবি তো কারো কাছে নেই! তারা এলেও ভিতরে ঢুকতে পারবে না। চাবি এলিজার কাছে থাকে। এলিজা! তার স্ত্রী! সে লকার খুলে রোমেল রিসাকে বাসায় ঢুকিয়েছে তাহলে! কিন্তু এলিজা এমনটা করতে পারে বলে বিশ্বাস হচ্ছে না তার। না এই অবিশ্বাসের উৎস ভালবাসা মাখানো আবেগ না।
বাকপ্রতিবন্ধী রূপসী মেয়েটিকে সে বিয়ে করেছে শুধু নিজের বেডরুম সেইফ রাখার জন্যে। শুধু বাক প্রতিবন্ধী না মেয়েটার এক পা অসাড়। হুয়িল চেয়ারে বসে থাকতে হয় মেয়েটাকে। অপ্রয়োজনীয় কিন্তু সুন্দর একটা শোপিস হিসাবে মেয়েটাকে ঘরে রেখেছে সে। একদিন মেয়েটার অসাড় পা টাতে সজোরে লাথি মেরেছিল সে।
মেয়েটার চোখ দিয়ে পানি বের হয়েছিল শুধু। কাগজে কলমে তার স্ত্রীর পদে থাকা মেয়েটির দিকে তাকানোও তার কাছে সময় নষ্ট। আর কিছু মাথায় আসছে না! মাথাটা ভার ভার লাগছে কেন জানি! সে প্রবল বিস্ময়ে আবিষ্কার করলো তার ক্ষুধা পেয়েছে! সামান্য ক্ষুধা না রীতিমতো ভয়াবহ ক্ষুধা! প্রথমে আস্তে আস্তে এরপর খানিকটা জোরে সে হাসলো কিছুক্ষণ। কেন জানি সবকিছু স্বাভাবিক লাগছে এখন। মনে হচ্ছে এই তো এটাই স্বাভাবিক! সে একটা কফিনের নিকষ কালো আধারে ডুবে আছে।
খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা মনে হচ্ছে। ঠিক প্রতিদিন নাস্তা করা বা একেক দিন একেক জন রূপসীর সাথে বিছানায় যাবার মতোই স্বাভাবিক। মনে হচ্ছে এই ঘটনাটা না ঘটলে তার জীবন অপূর্ণ রয়ে যেত। ফিসফিস করে সে গাইলো
“আই ওপেন মাই আইস লাস্ট নাইট
এন সৌ ইউ ইন দ্যা লৌ লাইট!”
(৩)
অক্সিজেন কমে আসছে কারণ ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিতে হচ্ছে তাকে। তার মানে বাক্সটা নিরেট।
স্কচটেপ বা এরূপ কিছু দিয়ে লক করা হয়েছে সমস্ত ফাকফোকর। হুম! হঠাৎ করে মনে পড়লো তার! এত অপরাধের মাঝে সব ঘটনা মনে থাকে না আজ মনে পড়লো ঠিক পনেরো বছর আগে একটা ফাসির সেলে সাইজ রুমে হ্যাঁ কিছু একটা হয়েছিল! কি হয়েছিল জানি! ও হ্যাঁ একটা মেয়েকে একটা মেয়েকে কি? মেয়েটার সাথে কি করা হয়েছিল? মনে পড়ছে না কেন! আচ্ছা রুমটা যেন কোথায়? মনে পড়ছে না তার। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে আরো। ভাবনা গুলো গুলিয়ে যাচ্ছে তবে এখনো একটা বিষয়ে সে উৎসাহ পাচ্ছে যেটা হলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে নাকি অনেক ভ্রম হয়। এলোমেলো জিনিশ দেখা যায়।
যৌবনে বিষয়টা নিয়ে সে পড়েছিল কিন্তু কখনো ফালতু এসব কাজে উৎসাহ পায়নি। এখন কেন জানি জিনিশটা নিয়ে উত্তেজিত বোধ করছে সে। ইতিমধ্যেই সে দেখলো
কিছুটা ঘোর ঘোর লাগছে তার কাছে। মনে হচ্ছে কোথাও হারিয়ে যাচ্ছে। বুক হাপড়ের মতো উঠানামা করছে।
দেহের সমস্ত শক্তি একত্র করে কফিনটাতে জোরে ধাক্কা দেয় সে। নাহ! লাভ হয় না! অক্সিজেন শেষ হয়ে আসছে। তার মনে হচ্ছে কেউ কড়া কোন ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়েছে তাকে। এটা কি মৃত্যু? নাকি সে মুর্চ্ছা যাচ্ছে? সে জেগে থাকতে চায়। মৃত্যুকে নিজ চোখে দেখতে চায় মৃত্যুর আগমুহুর্তে মানুষ কি ভাবে সেটাও জানতে চায়।
প্রবল ক্ষুধার অনুভুতি ভোতা হয়ে এসেছে। খাবারের ঘ্রাণ পাচ্ছে কেন জানি! সে চমকে উঠলো। না খাবারের না। মিষ্টি কোন ঘ্রাণ ভেসে আসছে। মিষ্টি ঘ্রাণের উৎস কি! সে ভাবতে চাচ্ছে না।
অক্সিজেনের অভাবে বুকটা ফেটে যাচ্ছে তার। বুক ভরে শ্বাস নিতে লাগলো কিন্তু অক্সিজেন বিহীন বাতাস তার ফুসফুসটা চিড়ে দিয়ে বেরুতে লাগলো। মাথাটা ভারি হয়ে আসছে আরো। আর কিছু ভাবতে ইচ্ছা করছে না তার। সমস্যা হলো এলিজা মেয়েটির জন্যে কিছুটা ভালবাসাও বোধ করছে সে!
(৪)
এলোমেলো চিন্তা ভাবনা মাথায় আসছে।
কফিনের ভেতরে অক্সিজেন মনে হয় আর নেই। সে মুর্চ্ছা যাচ্ছে। দেহ অসাড় হয়ে আসছে। নিকষ আধাঁরেও কয়েকটা রং দেখতে পাচ্ছে সে। লাল রং এর প্রাধান্যই বেশী।
তবে একটা দৃশ্য ভাসছে চোখে।
পাঁচ বছর বয়েসী খাড়া খাড়া চুল ওয়ালা একটা ছেলে নাম তার কটন উইলহ্যাম। জুতোর ফিতে বাঁধার চেষ্টা করছে। জুতোর ফিতে বাধতে গিয়ে সে ভুল করে বারবার। ওদিকে সময় নাই, কিছুক্ষণ পরেই দৌড় প্রতিযোগীতা।
“জুতোর ফিতে বাঁধতে পারে না যে, সে দৌড়াবে কি?” তার বাবার এই কটাক্ষের চেয়ে এখন জুতোর ফিতে বাঁধাই তার কাছে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা মনে হচ্ছে। অসহায় বোধ করছে ছেলেটি কিন্তু কাঁদবে না পণ করে রেখেছে। শুধু হেরে যাওয়ার বেদনা স্পর্শ করছে তাকে।
তার ঘুম পাচ্ছে খুব। মিনিট বিশেক পরে তার জীবনের উচুনিচু সব রেখা সমান্তরাল হয়ে গেলো! কারন সে আর জোর করে নিঃশ্বাস নেয়ার চেষ্টা করছে না।
কফিনের ভেতর ঠোকাঠুকিরও অবসান হয়েছে। শুধু একটা নিঃশ্বাস বন্ধ করা অনুভুতি পাঁক খাচ্ছে কফিনের ভিতরে।
দুদিন পরে ঠিক মাঝ রাতে এলিজা, রোমেল আর রিসা মিলে বিশাল বাড়িটার গার্ডেনের পিছন থেকে একটা কফিন বের করলো। এলিজা মেয়েটাকে লেমন ইয়োলে টপস আর কালো স্কার্টে দারুন মানিয়েছে। যে মানুষটাকে জীবিত অবস্থায় বিশ্বাস করেনি মৃত অবস্থায়ও বিশ্বাস করে না তারা।
কফিনের সিলগালা খুলে কফিনের মুখটা খুললো তারা। ভক করে একটা গন্ধ লাগলো নাকে। সেটা কেটে যেতেই দেখলো কটনের মুখে আশ্চর্য একটা অভিব্যাক্তি ফুটে আছে। কিছুটা হতাশা আর কিছুটা দুঃখ। সেটা কি তার করুণ মৃত্যুর জন্যে নাকি সেই ছোট্ট ছেলেটার জুতার ফিতা বাঁধতে না পারার বেদনা, সেটা শুধু মৃত ব্যাক্তিটিই জানে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।