অন্য সব মায়ের মতোই ছেলে ভক্ত নার্গিস আক্তার। ছেলের যে কোনো কাজকে উৎসাহিত করেন মন উজার করে। ঘর গৃহস্থালী সাজানোর পাশাপাশি ছেলেকে উৎসাহিত করতে মাঠে বসে খেলা দেখেছেন বছরের পর বছর। দেখেছেন সাধারণ দর্শকের কাতারে বসে। কখনো উৎফুল্ল হয়েছেন ছেলের পারফরম্যান্সে।
আবার কখনো মনোকষ্টও পেয়েছেন। সাফল্য-ব্যর্থতার এই জড়াজড়িতেই সব সময় প্রার্থনা করেছেন ছেলের সাফল্যের জন্য। অপেক্ষায় থেকেছেন কবে, কখন খোকা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়াবেন। শেষ পর্যন্ত মায়ের এ কষ্ট শেষ হয়েছে। হাসি ফুটেছে মুখে।
কথা হচ্ছিল আরাফাত সানীর মাকে নিয়ে। যিনি গত ৪-৫ বছর ধরে নিয়মিত ছেলের খেলা দেখতে ছুটে এসেছেন মাঠে। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে খেলছেন তার ছেলে। খেলবেন আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপেও। অভিষেক ম্যাচেই বাজিমাত করেন আরাফাত।
৩ ওভারের ছোট্ট স্পেলে নিজেকে প্রমাণ করেন। জবাব দেন অবহেলিত রাখার। প্রথম ম্যাচে তিন ওভারে রান দিয়েছিলেন ১৭ এবং উইকেট নিয়েছিলেন ২টি। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন। প্রথম ম্যাচে প্রথম ও তৃতীয় ওভারে নিয়েছিলেন উইকেট গতকাল দ্বিতীয় ওভারেই বোল্ড করেন তিলকরত্নে দিলশানকে।
দীর্ঘ ১২ বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। গত দশ বছর ধরে ২৭ বছর বয়স্ক আরাফাত দেশের শীর্ষ পাঁচ বোলারের তালিকায় থাকছিলেন অবলীলায়। তারপরও সুযোগ পাচ্ছিলেন না। সুযোগ পাচ্ছিলেন না বলে পাঁচ বছর আগে খেলাই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন আরাফাত, এমনটাই জানিয়েছেন মা নার্গিস, 'পাঁচ বছর আগে হতাশা থেকেই ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন আরাফাত। ওই সময়টা খুবই কঠিনভাবে পার করেছি আমরা।
তবে আমার বিশ্বাস ছিল, সেদিন বেশি দূরে নেই, যখন আমার ছেলে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়িয়ে খেলতে নামবে। আজ খেলছে। আমি খুবই খুশি। আমার ছেলে জাতীয় দলে খেলছে বলে আমি গর্বিত। ' আরাফাত এক যুগ ধরে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ খেলেছেন ৬১টি।
উইকেট নিয়েছেন ২৩১টি। লিস্ট-এ ম্যাচ ৫৩টি এবং টি-২০ ম্যাচ ৪১টি। অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার অন্য যে কোনো ক্রিকেটারের চেয়ে বেশি। তারপরও প্রথম ম্যাচে বোলিং করতে এসে নার্ভাস ছিলেন, অকপটে স্বীকার করেছেন আরাফাত, 'প্রথম বল করার সময় আমি নার্ভাস ছিলাম। যদিও আমি অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট খেলেছি।
তারপরও প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ বলে কথা!' আরাফাত সানী দলে জায়গা পাওয়ায় বাদ পড়ার তালিকায় চলে এসেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাক রাজ। কেননা ভবিষ্যতের চিন্তায় সাকিবের সঙ্গী হওয়ার সব ধরনের রসদই যে রয়েছে তার ভাণ্ডারে। সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন টি-২০ সিরিজে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।