আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কলঙ্ক মুছে এবার এগোনোর পালা

প্রচণ্ড গরমের পর হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেলে প্রকৃতিতে থম থমে ভাব বিরাজ করে। মনের অবস্থা হয়ে যায় 'কিংকতর্ব্যবিমূঢ়'। দেশের ক্রিকেটপাগল ভক্তদের মনের অবস্থাও এখন অনেকটা তেমনই। আইসিসির নিরাপত্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশন (আকসু) ৯ জনকে অভিযুক্ত করে ফিক্সিংয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর থেকেই যেন অস্বস্তিতে দেশবাসী! পবিত্রতার প্রতীক হয়ে ওঠা ক্রিকেটেও শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে 'কালো অধ্যায়' উন্মোচিত হলো। ছি, শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটও কলঙ্কিত হলো! -অনেকে আবার ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার চিন্তাও করছেন।

কেউ কেউ আবার এজন্য মিডিয়াকে দোষারোপ করছেন। ক্রিকেট বোর্ডের গোষ্ঠী উদ্ধারও করছেন কেউ কেউ। আকসুকে দেড় কোটি টাকায় নিয়োগ না দিলে তো দেশের কলঙ্কের কথা বিশ্বব্যাপী জানা জানি হতো না। আরও কত ভাবনা এসে যাচ্ছে!

কিন্তু একটু ভেবে দেখুন তো। সামান্য ব্যথার কথা চিন্তা করে যদি টিউমারকে প্রাথমিক পর্যায়েই অপসারণ করা না যায়, তবে এক সময় তা যে ক্যান্সারে পরিণত হবে।

তখন হয়তো জীবন দিয়ে সেই বোকামির চরম মূল্য দিতে হবে। তাই শুরুতেই অপসারণ করে টিউমার ফেলে দেওয়া কী বুদ্ধিমানের কাজ নয়! ম্যাচ ফিক্সিং অবশ্যই দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে 'কালো অধ্যায়'। তাই বলে এটা ভাবার উপায় নেই যে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি চিরতরে কলুষিত হলো। বরং বিসিবি আকসুকে দিয়ে ক্রিকেটের পবিত্রতাকে রক্ষা করতেই কালো অধ্যায়কে মুছে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। বিসিবির এই সাহসিকতাকে সাধুবাদ জানিয়েছে আইসিসিও।

তাই কালো অধ্যায় নয়, ফিক্সিং বিষ উপড়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়ায় 'ভালো' অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। এখন স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে নবোদ্যোমে শুরু করবে টাইগাররাও।

বিপিএল ফিক্সিং কেলেঙ্কারি আমাদের জাতীয় দলে আঘাত হানতে পারেনি- একথা বলাই যায়। কেননা দেশের বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে অপরাধীর কাঠগড়ায় থাকা মোহাম্মদ আশরাফুল, মোশারফ হোসেন রুবেল ও মাহবুবুল আলম রবিন জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য নন। ফিক্সিংয়ে জড়িত ৯ জনকে আলাদা করায় জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও এখন আতঙ্কমুক্ত।

কেননা আকসুর তদন্ত প্রতিবেদনের আগে দোষ না করলেও সবার মধ্যে একটা অজানা ভয় ছিলই। কার নাম হঠাৎ যুক্ত হয়, বলা তো যায় না। কিন্তু এখন তো আর সে আশঙ্কা নেই। তাই ফিক্সিংয়ের প্রভাবটা জাতীয় দলে পড়ছে না।

আগামী অক্টোবরেই বাংলাদেশ সফরে আসছে নিউজিল্যান্ড।

২০১০ সালে দেশের মাটিতে কিউইদের 'হোয়াইটওয়াশ' করেছিল টাইগাররা। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সব শেষ সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা, অনেক আন্তর্জাতিক সিরিজ না থাকা এবং ফিক্সিং কেলেঙ্কারি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে পিছিয়ে রেখেছে- এমনটাই মনে করছেন ক্রিকেটামোদীরা। তাছাড়া জাতীয় দলের অধিকাংশ ক্রিকেটার নিয়ে গড়া বাংলাদেশ 'এ' দলও তো ইংল্যান্ডে একের পর হেরেই চলেছে। তবে সব কিছুর মধ্যেই সম্ভাবনার আভাস খুঁজে পাচ্ছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।

কেননা ইংল্যান্ডে 'এ' দল হারলেও জাতীয় দলের তারকারা কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে ভালোই করছেন। জিয়াউর রহমান ও এনামুল হক বিজয় সেঞ্চুরি করেছেন। নিয়মিত রান পাচ্ছেন নাঈম ইসলামও। 'এ' দল হারলেও এই সফর থেকে নিজেদের ভুলগুলো শুধরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। দেশের দুই সেরা তারকা সাকিব-তামিমও ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লিগে দারুণ খেলছেন।

তাই দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক সিরিজ না থাকলেও খেলার মধ্যেই রয়েছেন ক্রিকেটাররা।

ঈদের ছুটি কাটিয়ে আজ থেকে আবার অনুশীলনে নামছেন মুশফিকরা। হাতে সময় খুব বেশি নেই। তাই কিউইদের ঘায়েল করতে হলে জঞ্জালযুক্ত নিকট অতীতকে ভুলে নতুন করে শুরুর বিকল্প নেই। তাছাড়া ফিক্সিং কাণ্ডে আমাদের ক্রিকেটে যে অশুভ অাঁচড় লেগেছে, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে তা চিরতরে মুছে দিতে পারেন টাইগাররাই।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।