আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাষাশহীদ স্মরণে শ্রদ্ধাবনত জাতি

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের এই দিনে বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ, আর যার পথ ধরেই অর্জিত হয় স্বাধীনতা।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাঙালির এই আত্মত্যাগের দিনটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে সারাবিশ্বে। এই দিবস সব ভাষাভাষীর অধিকার রক্ষার দিন।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সারি দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সবাই ফুল নিয়ে অপেক্ষায় ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

শহীদ মিনারে প্রথমে ফুল দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, তার সঙ্গেই ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর শহীদ বেদিতে ফুল দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তাদের শ্রদ্ধা জানানোর পর শুরু হয় রাজনৈতিক দলগুলোসহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের এই পালা চলবে শুক্রবারও।

সকালে নামবে মানুষের ঢল। সবার কণ্ঠে থাকবে অমর সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি..।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মিছিলে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্দেশে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সালাম, রফিক, বরকত, শফিউরসহ নাম না জানা অনেকে।

এর পর বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়ই ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পায়।

ঢাকার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় শহীদ মিনারেও একুশের প্রথম প্রহর থেকে ফুল দেয়ার পালা শুরু হয়।

শহীদ মিনারে ফুল দেয়া ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শোক এবং সেই সঙ্গে অধিকার অর্জনের এই দিনটি স্মরণ করবে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠান হবে। জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনেও অনুষ্ঠান হবে।

২১ ফেব্রুয়ারি দেশে সাধারণ ছুটির দিন। ভাষা শহীদদের স্মরণে এদিন জাতীয় পতাকা থাকবে অর্ধনমিত।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতা দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, “মহান ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক ঐতিহাসিক ও অতীব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এ আন্দোলন ছিল আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এবং পাশাপাশি এটি ছিল আমাদের জাতিসত্তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র রক্ষারও আন্দোলন। এ আন্দোলন অবিনাশী প্রেরণা হয়ে পরবর্তীকালে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে শক্তি যুগিয়েছে। ”

ভাষা দিবসে পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষের যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি লুপ্তপ্রায় ভাষাগুলো যাতে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে উজ্জীবিত থাকে সেই প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ভেদাভেদ ভুলে একুশের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।

“অমর একুশে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক,” বলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই রক্তস্নাত গৌরবের সুর বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ ১৯৩টি দেশের মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ভাষা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।




সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।