একজন লঘু কবি
১. সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় একটি চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ভুল ভাবে উপস্থাপন করার জন্য ব্যাপক সমালোচনা হয়, এরই প্রেক্ষিতে সবাই যেভাবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে!
২. ভারত কি এমন কাজ এটাই প্রথমবার করল? উত্তর সহজ কথায়- না!
আমিই অন্তত কয়েক হালি ভারতীয় সিনেমার কথা বলতে পারি যেখানে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে পাক- ভারত ৩য় যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে! কই তখন তো কেউ কিছু বলেনি!!
৩. স্বাধীনতার ইতিহাস আমরা নিজেরাই বহুবার বিতর্কিত করেছি, মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক ইতিহাস সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে প্রবলভাবে ব্যর্থ হয়েছি!
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল ওয়ার মিউজিয়ামে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে স্বীকৃতিই দেয়নি! যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছিল বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ যথাযথ মাধ্যমে যোগাযোগ করলে তারা ভুল শুধরে নেবে; বাংলাদেশের অতি বিদেশ ভ্রমন পিয়াসী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এতবার লন্ডন এসেছিলেন তাকে কখনো এ ব্যাপারে কিছু বলতে শুনিনি!!!
৪. আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস ভুলভাবে উপস্থাপন করার জন্য আজ বহুজাতিক বুদ্ধিবৃত্তিক ষড়যন্ত্র চলছে অথচ তা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের কোনো প্রস্তুতি নেই!
আমাদের এই সদিচ্ছার অভাবের সুযোগ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামে আইএসআই এজেন্ট শর্মিলা বোস, জামাতি এজেন্ট টবি ক্যাডম্যান ও ডেভিড বার্গম্যানের মত পা চাটা কুকুর! বলতে বাধ্য হচ্ছি এদের প্রপাগান্ডার জবাব দেয়ার জন্য যথেষ্ট গবেষণা করার সময় আমাদের নেই কিন্তু টেন্ডারবাজি করার সময় আছে!
বাংলাদেশ সরকার এত মেধাবীদের বৃত্তি দিয়ে বিদেশে গবেষণা করতে পাঠায় অথচ তাদের কেউই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গঠনমূলক প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণা করেননা!!
তাই শর্মিলা বোসের গবেষণা প্রকাশের সময় সেখানে উপস্থিত বাঙালি পন্ডিতেরা জানেন না শর্মিলা কি ভয়ংকর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের রূপরেখা দিচ্ছিলেন!!!
তাই অন্যের দিকে আঙ্গুল তোলার আগে আমাদের জেনে নেয়া দরকার মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য আমরা নিজেরা কি করছি বা আদৌ কিছু করেছি কিনা?
শেষ:
একটা আশঙ্কার কথা দিয়ে শেষ করি- মার্কেটিং পড়ার সময় ব্রান্ডিং এবং কো- ব্রান্ডিং নিয়ে অল্প বিস্তর কাজ করার সুযোগ হয়েছে তাই আমার জানা আছে নিজস্ব ব্রান্ডিং শক্তিশালী না হলে কো-ব্রান্ডিং হোস্ট ব্রান্ডের জন্য কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে!!
আমি আন্তর্জাতিকীকরণের বিরুদ্ধে নই তবে যেভাবে মহান শহীদ দিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে তাতে আমার উপরের কো- ব্রান্ডিং এর কথাই মনে পরছে!
বিশ্বের ১৯০ টির কিছু বেশি দেশে একযোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হচ্ছে অথছ এই দেশগুলোর প্রত্যেকের কাছে কি ভাষা দিবস, শহীদ দিবসের সঠিক ইতিহাস পৌছে দেয়া হয়েছে? বা আদৌ দেয়া হবে কিনা??
আর এটা করতে আমরা যদি ব্যর্থ হই তাহলে এই দুটি বিষয়ের মাঝে যে আপাত শুন্যতা তৈরী হবে তা দখল করে নেবে অন্য কোনো মিস বোসের মনগড়া কোনো ইতিহাস আর এভাবেই শহীদ দিবস হয়ত একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে!!! গো. আজম রা হবেন ভাষা সৈনিক!!!!!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।