আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথিবীর পরের ইতিহাস (বিজ্ঞান কাহিনী )



প্রথম পর্ব

পৃথিবীর বিখ্যাত ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারের ১০০ তলায় দাড়িয়ে এখন রোয়ানা এবং আইভানা। । ৯/১১ ঘটনার পরে ওয়াল্ড ট্র্রেড সেন্টার ধ্বংস হয়েছিল তারা খবরে দেখছিল এখন সেই সেন্টারকে দেখলে বোঝার উপায় নাই এই সেন্টারের উপর দিয়ে এত বিপর্যয় হয়েছিল। কত প্রানহানি হয়েছিল। আপাতত আবার আগের মত সগৌরবে মাথা উচু করে এই সেন্টারটি আকাশের উচ্চতায় দাড়িয়ে আছে।



রোয়ানার ইচ্ছায় তারা পৃথিবীতে একদিনের ট্রানজিট নিয়েছে। আইভানা বিরক্ত হচ্ছিল মায়ের ইচছায় সমর্পন করে। আইভানার বয়স এই জুলাইতে বার হয়েছে মাত্র। এই বয়সী একটা মেয়ের সাধারনত স্বাধীন ইচ্ছা অনিচ্ছা তৈয়ারী হয়না। আইভানার ক্ষেত্রে তা ব্যাতিক্রম হয়েছে আইভানার বাবা তাদের ছেড়ে যাওয়ার পর।

আইভানা সম্পূর্নভাবে তার বাবাকে ফলো করতে ভালবাসে। তার মনে এখনও তার পাগল বৈজ্ঞানিক বাবার স্মৃতি জাগুরুক হয়ে আছে। আজ থেকে আট বছর আগে যখন আইভানার বয়স মাত্র ছিল চার একদিন পৃথিবীর পথে পাড়ি জমিয়েছিলেন এক গবেষনার কাজে। তার জিন্ক গালভানাজিং সূর্যের তাপ ব্যাতিরেকে ঘরে কৃত্রিম তাপে করতে চেষ্টা করছিলেন। তিনি এবং তার এক সহকারী ২০১৩ সালের ১০০ তম বিজ্ঞান মেলায় যোগদানের উদ্দেশ্য পৃথিবীতে এসেছিলেন।

এরপরে আর তাকে দেখা যায়নি। সম্পূর্ন ভোজভাজীর মত পৃথিবী থেকে মিলিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

মহাশূন্য যানের ছায়াপথে গ্যালাক্সি এবং দূর নিহারীকাকে দেখলে আইভানা বেশ আবেগপ্রবন হয় বাবার কথা মনে করে যদিও পৃথিবী নিয়ে মায়ের মত তার কোন আবেগ কাজ করেনা। মায়ের কাছে দুটো পুরানো ডকুমেন্টারী মূভি দেখেছে পৃথিবীর বিভিন্ন গোলার্ধ সম্পর্কিত ঘটনার। ডকুমেন্টারীতে দেখেছে পৃথিবীতে প্রাগৈতিহাসিক মানবসভ্যতার উথ্থান থেকে ক্রমবর্ধমান সভ্যতা।

চিত্র দেখতে দেখতে পৃথিবী সম্পর্কে তার ধারনা হয়ে গিয়েছে বিরুপ। সে দেখেছে কল্পনায় পৃথিবীর আবহাওয়ায় কাদা বালিতে মানুষের মনে হিংস্রতার জন্ম নেয় বেশী।

আমি বুঝতে পারছিনা মাম্মী এই হিংসুটে পৃথিবীতে তুমি কি মহার্ঘ জিনিস খুজতে এসেছ। এখানে আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি। সেটা কি তুমি ভূলে গিয়েছ মামনি?মাকে শাসনের ভঙ্গিতে সে বলে।


আইভানা তুমি শুধু একপেশে কথা বলছ মামনি। তোমার মা আমি পৃথিবীর একজন মানুষ। তোমার যে বাবাকে তুমি এত ভালবাস সে পৃথিবীতে জন্মেছিল। পৃথিবীর মানুষ আবেগপরায়ন। দোষে গুনে মানুষ।

কেও কেও যেমন হিংসুটে আছে তোমার কথামত আবার কেও ভালবাসার জন্য অন্যের জন্য নিজের প্রান বিসর্জন দিয়ে দেয়।

আমরা আমাদের ভাষার জন্য প্রান দিয়েছি। দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে গিয়ে ত্রিশলক্ষ প্রান দিয়েছি আইভানা সে অনেক যুগ আগে। আবেগে রোয়ানার গলা কাপতে থাকে।

সরি মা তোমাকে হার্ট করার জন্য ওই যে দেখ সামনে আঙ্গুল দিয়ে আইভানা রোয়ানার দৃষ্টি আকর্ষন করে।



দুইটা ছেলে আনুমানিক ষোল থেকে আঠার বছর পরস্পরকে কিল ঘুষি মেরে যাচ্ছে সবার সামনে। সবাই মজা পেয়ে হাসছে এমনকি সিকিউরিটি ও সবার দেখাদেখি হাসছে।

দিস ইজ ব্রুটাল মাম্মি। আইভানা রেগে উঠে।

ইটস নট রোয়ানা হেসে দেখায় দে আর প্লেয়িং ইটস লাইক ফান বেবী লুক নাউ
আইভানা তাকিয়ে দেখে দুইজন দুইজনকে জড়িয়ে ধরে এখন হাসছে ।

একজন আরেকজনের জ্যাকেট খুলে আরেকজনকে পরিয়ে দিচ্ছে।

আইভানা লজ্জা পেয়ে হেসে ফেলল। ওহ ইটস ফান রিয়েলী?

হ্যা মাম বাট এখানে সত্যিকার মারামারি হানাহানি হয় এটা ঠিক আইভানা। তবে এখন ও এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি কি জান?মানুষে মানুষে আবেগ ভালবাসা। পৃথিবীতে ভালবাসায় আবেগে মানব সন্তান তৈয়ারী হয় আর আমাদের গ্রহে আমরা কৃত্রিমভাবে প্রান তৈয়ারী করি সেজন্য আমরা হয়ে যাচ্ছি অনেকটা ই যান্ত্রিক আবেগ বর্জিত।



নো মাম্মি আমি বিলিভ করছিনা আমি যান্ত্রিক অর তুমি যান্ত্রিক।

তুমি পৃথিবীতে আমার আর তোমার বাবার ভালবাসায় জন্মেছ আইভানা। এই প্রথম মেয়েকে সত্যি কথাটি বলল রোয়ানা।

মায়ের ছলছল চোখ দেখে আইভানা চোখ ও এখন ছলছল হয়ে উঠল।

এই প্রথম আইভানা ও আবেগ ঘন চোখে বাহিরের পৃথিবীকে দেখতে লাগল ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারের গ্লাসের ভিতর দিয়ে।



এলিভেটর থেকে বের হতে তারা পড়ল স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্রধারী দশবারজন সেন্ট্রির বূহ্যের ভিতরে।

আইভানা আর রোয়ানার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের পাওয়ার টেলিষ্কোপিক ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা। অনুমতি ব্যতিরেকে তারা সংবেদনশীল এরিয়াতে ছবি তুলছিল।

রোয়ানা যতই বলছিল তারা একদিনের ট্রানজিটে মহাশূন্যযান থেকে পৃথিবীতে নেমেছে। সেন্ট্রিদের কিছুতে তা বিশ্বাস করানো সম্ভব হচ্ছিলনা।



আধাঘন্টার মধ্যে তারা নিক্ষিপ্ত হল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোনিকৃষ্ট কারাগার গুয়ানতানামোয় গুপ্তচর সন্দেহে।

(পরবর্তীতে)।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.