কোনো বাধাই আমাদের রুখতে পারবেনা
বাগেরহাট জেলার একটি গ্রামকে জামায়াতমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ঐ গ্রামের প্রবেশদারে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে ‘‘জামায়াতমুক্ত গ্রাম- আজব এ গ্রামের কয়েকজন মহিলার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে তাদের কথায় যা ফুটে উঠেছে তা হচ্ছে- কানাডা প্রবাসী এক ইসলাম বিদ্ধেসী কুলাংগার যাকে আল্লাহ ও রাসূলের দুশমন-ও বলা যায়, তার পরিকল্পনা ও সহায়তায় এ গ্রামে এ কার্যক্রম চলছে। গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত এবং অক্ষরজ্ঞানহীন সাধারণ জনগণ যাদের ইসলামের গভীর জ্ঞান তো দূরে- থাক কুরআন হাদীসের সামান্যতম জ্ঞানও নেই- তাদের বোঝানো হয়েছে ‘‘ইসলামী শরীয়াহ একটি ভয়ংকর বিষয়, ইসলামী শরীয়াহ মানুষের বাক স্বাধীনতা এবং অধিকারের কথা স্বীকার করে না।
ইসলামী শরীয়াহ নারীদের উপর জুলুম নির্যাতন করার হাতিয়ার, ইসলামী শরীয়াহ নারী উন্নয়ন, উন্নতি এবং নারীর কর্মসংস্থানের প্রতিবন্ধক’’ এ জন্য ইসলাম বিদ্ধেসী বিভিন্ন বুকলেট তৈরী করে লোকদের মাঝে পাঠ করে শোনানো হয়। কানাডা থেকে ইসলামী বিদ্ধেষী ডিভিডি তৈরী করে তা গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে প্রদর্শন করা হয়।
আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সমাবেশের এ সব সমাবেশে ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষকে বোঝানো হচ্ছে ইসলামী শরীয়াহ মানলে মানুষের স্বাধীনতা থাকে না। নারী পুরুষ একত্রিত করে গ্রামে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন নাচ,গান এবং উদ্দাম নৃত্যের- এ সবের উদ্দেশ্য মানুষ যাতে ধর্মীয় বিধি বিধান পালন থেকে দুরে থাকে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ঐ গ্রামের বিকৃত মস্তিস্ক মহিলাদের কথায়- তারা বলেছে ‘‘ আমরা এখন খুশী, এখন আর ঘরে আবদ্ধ থাকতে হয় না, স্বামীর খেদমত করতে হয় না, আমরা আয় উন্নতি করতে পারছি, ইসলামী শরীয়াহ মানলে এ সব করা সম্ভব হতো না। ’’ তারা বলেছে তারা ইসলামী শরীয়াহ মানতে চায় না, বরং ইসলামী শরীয়াহর বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম চলবে।
অতএব ঐ গ্রামের লোকদের কথায় বোঝা যায় ‘‘জামায়াত মুক্ত’’ এর নামে মূলত ইসলাম মুক্ত সমাজ গড়ার, ধর্মীয় মূল্যবোধমুক্ত সমাজ গড়ার এক ভয়ংকর নীল নকশা নিয়ে মাঠে নেমেছে কানাডা প্রবাসী ঐ ইসলাম বিদ্ধেসী কুলাংগার।
এ জন্য তারা বেছে নিয়েছে গ্রামের অসহায় দরিদ্র, অল্প শিক্ষিত এবং অক্ষরজ্ঞানহীন সাধারণ জনগণকে।
তাদের কথার জবাবে সাধারণতই প্রশ্ন আসে ইসলামী শরীয়াহ কি জামায়াতে ইসলামীর আবিস্কৃত কোন বিধান? ইসলাম কি জামায়াতে ইসলামী নামক কোন দলের সম্পদ? অবশ্যই না--
কিন্তু আজ ইসলামী বিধি বিধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। মানুষকে বোঝানো হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী ইসলামী শরীয়াহ বাস্তবায়ন করতে চায়; এটা করতে দেয়া যাবে না। তারা মূলত জামায়াত বিরোধীতার নামে মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে রাখার জন্য চতুর্মূখী ষড়যন্ত্রের জাল বুনে সামনে অগ্রসর হচ্ছে।
ইসলাম আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।
কেউ যদি ইসলামের কোন বিধান না মানে অথবা মানতে না পারে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু ইসলামী শরীয়াহর কোন একটি বিধানের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করার অধিকার কারো নেই। ইসলামের কোন একটি বিধানের বিরুদ্ধাচরণ করলে তিনি আর নিজেকে মুসলমান বলে পরিচয় দেয়ার অধিকার রাখেন না।
গ্রামের যে কয়জন মহিলার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে তাদের একজন বলেছে ‘‘ ১.ইসলামী শরীয়াহ মানলে শুধু স্বামী আর সংসারের খেদমত করা লাগতো- এখন আমরা শরীয়াহ মুক্ত তাই আমাদের এখন তা করতে হয় না। ২. ইসলামী শরীয়ায় কোন স্বামী তার স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তিনবার তালাক বললে তালাক হয়ে যায়-এটা আমরা মানি না।
৩. ইসলামী শরীয়ায় হিল্লা বিয়ে?? আছে এটা আমরা মানি না। ৪. তারা বলেছে ইসলামী শরীয়ার বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম চলবে’’
আমি তাদের উপরোক্ত চারটি মন্তব্যের সংক্ষিপ্ত জবাব দেয়ার চেস্টা করবো
১. ইসলামী শরীয়াহ মানলে স্বামীর খেদমত করতে হয়। তার মানে তারা আর স্বামীর খেদমত করতে রাজী নয়-সংসার ধর্ম পালন করতে রাজী নয়। দাম্পত্য জীবনে আমাদের চিরায়ত যে নিয়ম বিধান তা মানতে রাজী নয়। তারা আমেরিকা অথবা কানাডার মতো উগ্র জীবন যাপন করতে চায় যাদের সামাজিক জীবনে এবং পারিবারিক জীবনে সূখ শান্তি বলতে কিছু নেই।
যেখানে অর্থ উপার্জন আর জৈবিক চাহিদা পূরণকেই মূখ্য হিসেবে ধরা হয়। বিয়ের পূর্বে তারা লিভ টুগেদার করে। বিয়ে হলেও সংসার টিকে না। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক শুধু অর্থ আর জৈবিক চাহিদার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। সামান্য মনো মালিন্য থেকে সংসার ভেঙ্গে যায়।
পিতা সন্তানের কোন সম্পর্ক থাকে না। বৃদ্ধদের স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রমে। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ-ই শুধু নয়, পৃথিবীর যেখানেই মুসলমানরা বাস করে, যাদের ব্যক্তিগত পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ অটুট আছে সে সব সংসারে যেমন আছে শান্তি তেমনি আছে নিরাপত্তা। আজ মিথ্যে প্রচারণা আর পশ্চাত্যের মেকী আনন্দের মোহজালে জড়িয়ে গ্রামের মানুষকে মূলত ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে দুরে সরিয়ে নেয়ার জন্য ‘‘জামায়াত জুজুর’’ শ্লোগানকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র পুরোমাত্রায় বাস্তবায়িত হলে আমাদের দেশের পারিবারিক জীবনে যেমন নেমে আসবে অশান্তি তেমনি তৈরী হবে নানা সামাজিক অনাচার।
তারা বলেছে তাদের আয় বেড়েছে- ইসলাম কোন মহিলাকে আয় উন্নতি করার জন্য বাঁধা প্রদান করে না। ইসলামের নির্দেশ মেনে একজন নারী যে কোন প্রকার কর্মক্ষেত্রে বিচরণ করার অধিকার রাখে। একজন নারী চাকুরী করা, ব্যবসা করা, শিক্ষকতা করা, চিকিৎসা সেবা প্রদান করা অথবা বিদ্যা শিক্ষা করার জন্য বিদ্যালয়ে যাওয়া কোন কিছুতে বাঁধা তো দেয়ই না বরং উৎসাহ প্রদান করে। তবে শর্ত হচ্ছে একজন নারী যখন ঘরের বাইরে যাবে ইসলামী শরীয়াহর নির্দেশ অনুযায়ী সে পর্দা রক্ষা করে চলবে। যারা নারীর স্বকীয়তা, শালীনতা, মর্যাদা সর্বোপরী আল্লাহর বিধানকে মানতে চায় না, যারা নারীকে ভোগের সামগ্রী মনে করে, বিজ্ঞাপনের পন্যের সাথে নারীকেও খোলামেলা ভাবে উপস্থাপন করে নিজেদের অবৈধ ইচ্ছাকে চরিতার্থ করতে চায় তারাই ইসলামী শরীয়াকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে নারীদেরকে ইসলামের ব্যাপারে বিতশ্রদ্ধ করে তোলে।
এমনকি যেই জামায়াতে ইসলামীকে নারী বিদ্ধেশী হিসেবে অথবা নারী উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধক হিসেবে অপপ্রচার চালানো হয়। সেই জামায়াতে ইসলামীর আলাদা মহিলা বিভাগ রয়েছে- যে বিভাগের অধিকাংশ কর্মী শুধু শিক্ষিতই নয় উচ্চ ডিগ্রিধারী এবং বড় বড় প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত সুনামের সাথে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করছে।
চলতি উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের ২১ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিজয়ী হয়েছে। অতএব যারা ইসলামকে অথবা ইসলামী শরীয়াহকে নারী উন্নয়নের প্রতিবন্ধক হিসেবে প্রচার চালিয়েছে ইসলামী শরীয়াহর বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেমেছে তারা মূলত আল্লাহ, আল্লাহর রাসুল এবং তার প্রেরিত জীবন বিধান আল ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় জাতির সামনে স্পস্ট করেছে। জনগণ অবশ্যই তাদের এ ডাকে সাড়া দিবে না।
দ্বিতীয়- কথা হচ্ছে ইসলামী শরীয়াহ জামায়াতে ইসলামীর সম্পদ নয়, ইসলামী বিধি বিধানও জামায়াতে ইসলামীর আবিস্কৃত কোন মতবাদ নয়- যারা জামায়াত বিরোধীতার নামে ইসলামের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিচালনা করছে তারা মূলত ইসলামের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
তৃতীয়ত জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে যারা নারী বিদ্ধেষের অভিযোগ আনছেন তারা না জেনেই তা আনছেন- বরং বর্তমান সময়ে জামায়াতে ইসলামীতে নারী কর্মীর সংখ্যা যেমন বিপুল তেমনি সমাজের উচ্চ শিক্ষিত অসংখ্য মহিলা (যারা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার) জামায়াতে ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ত। অতএব বর্তমান বাস্তবতায় জামায়াতের বিরুদ্ধে নারী বিদ্ধেষের অভিযোগ একটি মিথ্যা অভিযোগ।
২. কোন স্বামী তার স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তিনবার তালাক বললে তালাক হয়ে যায়- এমন বিধান তারা মানতে রাজী নয়। এখানে প্রথম কথা হচ্ছে এটা ইসলামী শরীয়াহর একটি বিধান।
কোন পরিবারে যদি শান্তি-সূখ বিরাজমান থাকে সেখানে তিনবার কেন একবারও এ শব্দটি উচ্চারিত হবার সম্ভাবনা থাকে না। তালাক ইসলামী শরীয়াহর একটি বিধান। তবে অত্যন্ত ঘৃণাভরে আল্লাহ এ বিষয়টি জায়েজ করেছেন। কোন পরিবার গঠিত হবার পর তা যাতে ভেঙ্গে না যায় এ বিষয়ে কুরআন হাদীসে অসংখ্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পারিবারিক জীবন একটি ছেলে খেলার বিষয় নয় যে একজন পুরুষ মনে চাইলো অমনি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিলো।
যদি কোন কারণে কোন পরিবারে স্বামী স্ত্রী দাম্পত্য জীবন যাপন করতে না পারে, তারা যদি একে অপরের প্রতি বিশ্বাস এবং ভালবাসা হারিয়ে ফেলে তবে উভয়ের সম্মতির ভিত্তিতে স্বামী তার স্ত্রীকে তিনটি ইদ্দতের সময়কালে তিনবারে তালাক দিবে।
এক তালাক দেবার পর যদি দেখা যায় তাদের সমস্যা সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা আছে তবে স্বামী তার এক তালাকের ঘোষণা ফিরিয়ে নিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে পারবে। আর যদি তা না হয় তাবে দ্বিতীয় এবং পরবর্তীতে তৃতীয় তালাক কার্যকরী হবে। তবে হ্যা কোন স্বামী যদি একবারেই তিন তালাক দিয়ে ফেলে তবে সেটা উপরের নিয়েম মতো না হলেও তালাক কার্যকরী হয়ে যাবে। এটাই ইসলামের বিধান।
একবার এক লোক রাসূলে কারীম সা. এর কাছে এসে বললো হে আল্লাহর রাসুল আমি তো আমার স্ত্রীকে একবারে তিন তালাক দিয়ে দিয়েছি এখন কি এটা ফিরিয়ে নেয়ার কোন সূযোগ আছে? রাসূলে কারীম সা. অত্যন্ত রাগত স্বরে বললেন তুমি কেন একত্রে তিন তালাক দিয়ে দিলে-কেন একত্রে তিন তালাক দিয়ে দিলে। এ হাদীস দারা প্রমাণিত একত্রে তিনবার তালাক প্রদান করলে বাইন তালাক বা পূর্ণাঙ্গ তালাকের বিধান কার্যকরী হয়ে যাবে। যে বা যারা ইসলামের এ বিধান মানতে প্রস্তুত নয় সে মূলত ইসলামের বিরুদ্ধে তথা রাসুলে কারীম সা. এর হাদীসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলো- এটার সাথে ‘‘জামায়াতে ইসলামী মুক্ত গ্রাম’’- শ্লোগাণের সম্পর্ক নেই। তাই বোঝা যায় যারা জামায়াত মুক্ত গ্রাম গড়ার শ্লোগান দিচ্ছে তারা জামায়াত বিরোধীতার নামে মূলত ইসলামী বিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। করাণ তালাকের বিধানটি জামায়াতে ইসলামীর আবিস্কৃত কোন বিধান নয়।
এটা ইসলামী হুকুম তথা আইন।
৩. হিল্লা বিয়ে শব্দটি ইসলামী কোন পরিভাষা নয়। আমাদের সমাজে হিল্লা বিয়ে নামে যে কুসংস্কার চালু আছে তা ইসলাম স্বীকৃত নয়। এটা গ্রাম্য শালিসদার অথবা ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ কোন নামধারী মৌলভীর আবিস্কার। কোন স্বামী তার স্ত্রীকে পূর্ণাঙ্গ তালাক দিয়ে দিলে তাকে আর ফিরিয়ে নেয়ার কোন সূযোগ নেই।
এ জন্য ইসলাম তালাক শব্দটিকে অত্যন্ত ঘৃণাভরে জায়েজ করেছে। তালাক দেয়ার আগে ইসলাম এ বিষয়ে বার বার ভাবতে বলেছে- এমনকি তিনটি ইদ্দত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছে- সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে হচ্ছে বায়েন তালাক বা পূর্ণাঙ্গ তালাক। আমি অগেও উল্লেখ করেছি আবারও লিখছি দাম্পত্য জীবন বা একটি সংসার গড়া কোন ছেলে খেলা নয় যে মন চাইলো ভেঙ্গে দিলোম আবার মন চাইলো জোড়া লাগালাম। তাই তালাক দেবার পর তাকে হিল্লা নামক কুসংস্কারের মাধ্যমে ফিরিয়ে নেয়া আদৌ জায়েজ নয়। আর একবার বায়েন তালাক বা পূর্ণাঙ্গ তালাক দেবার পর আবার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার কোন সূযোগ ইসলামী শরীয়ায় নেই- তবে হ্যা- যদি এমন হয় কোন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেয়।
এরপর ঐ স্ত্রীর যদি কোথাও বিয়ে হয় এবং সেখানে কিছুকাল সংসার করার পর যদি সেই সংসারও ভেঙ্গে যায় অতপর যদি কোন কারণে আবার তাদের পরিচয় ঘটে তবে তাদের দুজনের মধ্যে বিয়ে জায়েজ হবে। কিন্তু তালাক দেবার পরিকল্পিতভাবে কারো আবার মন চাইলো জোড়া লাগালাম। তাই তালাক দেবার পর তাকে হিল্লা নামক কুসংস্কারের মাধ্যমে ফিরিয়ে নেয়া আদৌ জায়েজ নয়। আর একবার বায়েন তালাক বা পূর্ণাঙ্গ তালাক দেবার পর আবার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার কোন সূযোগ ইসলামী শরীয়ায় নেই- তবে হ্যা- যদি এমন হয় কোন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। এরপর ঐ স্ত্রীর যদি কোথাও বিয়ে হয় এবং সেখানে কিছুকাল সংসার করার পর যদি সেই সংসারও ভেঙ্গে যায় অতপর যদি কোন কারণে আবার তাদের পরিচয় ঘটে তবে তাদের দুজনের মধ্যে বিয়ে জায়েজ হবে।
কিন্তু তালাক দেবার পরিকল্পিতভাবে কারো কাছে কিছু দিনের জন্য বিয়ে দিয়ে তার কাছ থেকে তালাক নিয়ে আবার পূর্বের স্বামীর কাছে বিয়ে দেবার যে কুসংস্কার কোথাও কোথাও চালু আছে তা আদৌ ইসলাম সম্মত নয়-এটা ইসলামী শরীয়াহ আদৌ সমর্থন করে না। অতএব হিল্লা বিয়ে ইসলামী শরীয়ার কোন টার্ম নয়- এটা ইসলামের দুশমনদের আবিস্কৃত একটি ষড়যন্ত্র।
৪. শরীয়াহ শব্দের অর্থ হচ্ছে আইন- কুরআন হাদীসের পরিভাষায় আল্লাহর পক্ষ থেকে তার রাসূলের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাস্ট্রীয় জীবনের জন্য যে আইন ও বিধান দেয়া হয়েছে তাকে বলে ইসলামী শরীয়াহ। অতএব যারা শরীয়াহ মানতে রাজী নয়, শরীয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার ঘোষণা দেয় তারা নিজেদের মুসলমান বলে পরিচয় দিলেও কুরআন হাদীসের দৃস্টিতে তারা আর মুসলমান থাকে না। এরা মূলত আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।