পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর মধ্যে একটি অভিযোগপত্রে ঐশীর সঙ্গে তার বন্ধু জনি ও রনিকে আসামি করা হয়েছে। অন্যটিতে গৃহকর্মী সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিশোর আদালতে বিচারের সুপারিশ করে আলাদা অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে ৫৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এ ছাড়া আটটি জব্দ তালিকায় প্রায় ৮০ প্রকার আলামত জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ঐশীকে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়ায় সে বাইরের পরিবেশের প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে নিজ পরিবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এ কারণে মা-বাবার শাসনকে অমানুষিক আচরণ হিসেবে গণ্য করত সে। একপর্যায়ে খুনের ঘটনার ২-৩ মাস আগে ঐশী তার ড্যান্স মাস্টার জনির সঙ্গে দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এ জন্য ঐশী তার বাবার কাছে ৩০ হাজার টাকা চায়।
কিন্তু ঐশীর বাবা মাহফুজুর রহমান মেয়েকে দুবাই যেতে নিষেধ করেন। ঘটনার এক মাস আগে ঐশী তাদের চামেলীবাগের বাসা থেকে বের হয়ে বন্ধু জনির সঙ্গে রামপুরা এলাকায় বাসা সাবলেট নিয়ে ১৫ দিন বসবাস করে। ওই সময়ই বন্ধু জনির সঙ্গে থেকে পরিবারের প্রতি বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং মা-বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। খুনের ঘটনার দিন ১৫ আগে সে বাসায় আসে। পরে অবাধ চলাচল ও মোবাইল ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপিত হয়।
ঐশী তার ড্যান্স মাস্টার জনির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মুক্ত জীবনযাপনের জন্য দুবাই যেতে টাকার প্রয়োজনে মা-বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে। এ পরিকল্পনার কথা সে বন্ধু জনিকে জানায়। জনি তাকে খুন করতে প্ররোচিত করে এবং আশ্রয় দেওয়ার আশ্বাস দেয়। ঐশী ও জনির বন্ধু রনি খুনের পরিকল্পনার কথা জানত। ঐশী তার মা-বাবাকে খুন করার পরও রনি তাকে বাঁচাতে খুনের কথা গোপন করে তার এক খালার কাছে ঐশীর থাকার ব্যবস্থা করে।
অভিযোগপত্রে সুমির বিরুদ্ধে বলা হয়, সুমি ঐশীকে কফির সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশাতে দেখে। কিন্তু ঐশীর মা-বাবার প্রতি অজ্ঞাত বিদ্বেষের কারণে বিষয়টি তাদের কাউকে জানায়নি। কফি খেয়ে তারা অজ্ঞান হয়ে গেলে যখন ঐশী তাদের খুন করে তখন সুমি বিষয়টি দেখে চিৎকার চেঁচামেচি করে মানুষ জড়ো না করে খুনের প্রতি নীরব সমর্থন জানায়। পরে ঠাণ্ডা মাথায় খুনের আলামত নষ্ট করতে রক্ত পরিষ্কার ও লাশ বাথরুমে লুকাতে সহায়তা করে। গত বছরের ১৪ আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগের বাসায় এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান খুন হন।
স্ত্রী স্বপ্না এবং দুই ছেলে-মেয়ে ও এক শিশু গৃহকর্মী নিয়ে চামেলীবাগের বাসায় থাকতেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।