ভ্রমণের নেশাটা মাঝে মাঝে এমন ভাবে তাড়া করে যে, বেড়ানোর সুযোগ এলেই সব বাধা
বিপত্তি উড়িয়ে দিয়ে তা লুফে নিতে সচেষ্ট থাকি । জীবনকে সম্ভোগ করতে হলে চাই অবকাশ, চাই অবসর। সেই সঙ্গে চাই মনের মত সঙ্গী। নিজের অভিজ্ঞতা,নিজের ভাললাগা মন্দ লাগাকে শেয়ার করতে না পারলে জীবন বিরক্তিতে ভরে হয়ে উঠে অর্থহীন। জীবনে ব্যস্ততা তো থাকবেই।
অফিসের কাজ, নিজের কাজ, এদিক-সেদিক বেড়াতে যাওয়া কিংবা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সময় কাটানো নিয়ে ব্যস্ত জীবন সবার। কিন্ত পরিবার পরিজন কিংবা আপনজন নিয়ে ভ্রমন শুধু আনন্দ স্মৃতিই জাগায়না,একঘেয়েমী কাটিয়ে কর্মচাঞ্চল্যের প্রশান্তিতে ভরে উঠে এবং মনও এ ক্ষেত্রে অনেক সময় মুক্তি পায়। ছোট বেলা থেকেই ভ্রমণের প্রতি আমার অসম্ভব রকমের এত ঝোক তাই মনের টানে হ্রদয়ের আকর্ষনে দারুন ভ্রমণপিপাসু পপি লাবিবাদের নিয়ে মনে হলেই ছুটে বেড়াই বন বাদাড়ে দেশ বিদেশে সাগর সৈকতে আর পাহাড় জঙ্গলে।
আমাদের এবারকার গন্তব্যস্হল বান্দরবনের নীলগিরী,তিন দিনের সফরে দুপুর একটার মধ্যেই পৌছে গেলাম জেলা শহরে। ব্যাচমেট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান চাকমা আগে থেকেই পুলিশ অফিসার্স মেসে সীট বুকিং দিয়ে রেখেছিল।
গোসল রেস্ট আর দুপুরের লাঞ্চ সেরে দ্রুত বেরিযে পড়লাম শহরকে ঘুরে দেখব বলে, কিন্ত অবাক হলাম এতো শহর নয় যেন অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আধার,প্রকৃতি যেন নিজ হাত দিয়ে গড়েছে বান্দরবানকে। অনেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য দার্জিলিং যান। কিন্তু সৌন্দর্যের দিক থেকে আমার কাছে মনে হয় বান্দরবান দার্জিলিং থেকে কোনো অংশে কম হবেনা ।
শহরের মাঝবরাবর পাহাড়ের নীচ দিয়ে একে বেকে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নদীটি সৌন্দর্যের আরেক মাত্রা দিয়েছে,অনির্বানের গাড়ী নিয়ে আমরা ছুটে চলছি,ড্রাইভার ট্রাইবালের,বেশ মুন্সিয়ানার সহিত দক্ষ হাতে গাড়ী চালাচ্ছে,আগামীকাল ভোরে তাকে নিয়েই আমাদের নীলগিরী যাওয়ার কথা,পড়ন্ত বিকেল ,সময় নষ্ট না করে আমরা নীলাচলের দিকে যাওয়ার প্লান করলাম ওখানকার সূর্যাস্ত উপভোগ দারুন মনোমুগ্ধকর, উঁচু নিচু রাস্তা বেয়ে যেতে হচ্ছে, শহর থেকে পনের কিমি দুরে। আমরা সূর্যাস্তের মিনিট চল্লিশ পূর্বেই নীলাচলে পৌছে যাই।
নীলাচলের নৈস্বর্গিক অপরূপ দেখে অভিভুত হয়ে গেলাম,চিন্তা করা যায় আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি অর্থ্যাৎ নীলাচল পাহাড়টি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেড় হাজার ফুট উপরে। এখান থেকে পুরো শহরটিকে দেখা যাচ্ছে, চারদিকে ছোটবড় পাহাড় থরে থরে সুসজ্জিত। নীলাচল থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য ও নির্মল বাতাস মনে এক স্বর্গীয় অনুভুতি আনে। বান্দরবান শহরের সন্নিকটে নীলাচলই সবচেয়ে উচু পাহাড়,সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে দেড় হাজার ফুট এ পাহাড়কে দুর থেকে মনে হয় যেন নীল আকাশের সাথে মিশে গেছে। সম্ভবত এই জন্যই এ পাহাড়ের নাম নীলাচল হয়েছে।
চলবে.....।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।