মাঠে চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, সারা দেশে চলছে ফ্ল্যাশ মব। এরই মধ্যে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হয়ে গেছে ফ্ল্যাশ মবের প্রতিযোগিতাও। পড়ুন বিস্তারিত।
‘চার-ছক্কা হইহই, বল গড়াইয়া গেল কই’-এমন জম্পেশ গানের সঙ্গে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটছে আজকাল৷ হুলস্থুল ‘কাণ্ড’ কারণ, যারা ঘটাচ্ছে, তারা হুট করেই জনসমক্ষে আসছে; ‘কাণ্ড’ ঘটিয়ে ভিড়ে মিশে যাচ্ছে! ‘কাণ্ডের’ নাম ফ্ল্যাশ মব৷ আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অফিশিয়াল ইভেন্ট সং ‘চার-ছক্কা হইহই’য়ের সঙ্গে হচ্ছে এমন ‘চকিত নৃত্য’৷ ফ্ল্যাশ মব নিয়ে আবার প্রতিযোগিতাও হয়ে গেছে এরই মধ্যে৷ এতে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়৷ দ্বিতীয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়৷ ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হয়েছে তৃতীয়৷
কীভাবে হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্ল্যাশ মবের আয়োজন? আর কেমন করেই বা হলো বিজয়ী নির্ধারণ? অফিশিয়াল ইভেন্ট সংটি তৈরি হওয়ার পর ঘোষণা এসেছিল একটা৷ বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আয়োজন করা হবে ফ্ল্যাশ মবের৷ তারপর সেগুলোর ভিডিও আপ করা হবে ইউটিউবে৷ সেখানে সর্বাধিক ভোট পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ই হবে বিজয়ী৷ ঘোষণার পরপরই তাতে অংশ নেয় দেশের প্রায় ৮৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
প্রায় ১৫ দিন পর বের হলো ফলাফল৷ তাতে দেখা গেল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে প্রথম৷ ওই দলের একজন হলেন সাবরিনা ফারাহ৷ বললেন প্রথম হওয়ার আনন্দের কথা, ‘আইসিসির এ আয়োজনের কথা শুনেই আমরা দারুণ আগ্রহী হয়েছিলাম৷ আমাদের ফ্ল্যাশ মবে অংশ নিয়েছিল বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী৷ ঈগল ড্যান্স কোম্পানি ছিল মূল কোরিওগ্রাফার৷ রাস্তায় অনেক যানজট ছিল৷ কিন্তু তারই মধ্যে অনেক কায়দা-কসরত করে আমরা শুটিং করেছি৷ তাই সময়ও বেশি লেগেছে৷ কিন্তু অনেক কষ্টের এই ফ্ল্যাশ মব প্রথম হওয়ার পর আনন্দের সীমা নেই!’
দ্বিতীয় হওয়ার পরও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাসির উদ্দিন সমান খুশি, ‘প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকার পরও আমরা গর্বিত৷ প্রথম-দ্বিতীয় হওয়ার চেয়েও বড় কথা হলো থিম সংটি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পেরেছি৷’
মেহরাজ সৈকত ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফ্ল্যাশ মবে৷ তাঁদের দল নাকি মোটে দুটি দিন পেয়েছিল অনুশীলনের জন্য, ‘আমারা সবাই যে নাচ জানতাম না, তা নয়৷ এমন অনেকেই ছিল, যারা জীবনে কখনো কারও সামনে নাচেনি৷ কিন্তু আমাদের টিমওয়ার্ক বেশ ভালো ছিল৷ ফ্ল্যাশ মব করার পর বুঝতে পেরেছি, রাস্তাঘাট বন্ধ করে নাচানাচি করা কতটা কঠিন!’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অফিশিয়াল ইভেন্ট সংয়ের সঙ্গে ফ্ল্যাশ মব তৈরির উদ্যোগ, পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিল বিজ্ঞাপনী সংস্থা গ্রে৷ প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক এম এ মারুফ বলেন, ‘দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করার জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বেছে নিয়েছিলাম আমরা৷ ফলে, ফ্ল্যাশ মব হয়ে উঠল প্রতিযোগিতামূলক৷ আর ফলাফল নির্ধারিত হলো ইউটিউবে সর্বাধিকসংখ্যক ভোটের ভিত্তিতে৷ প্রথম হওয়া ভিডিওটি ম্যাচ চলার সময় দেখানো হচ্ছে৷ আইসিসির ওয়েবসাইটে তো থাকছেই৷’
১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকার আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, এনাম মেডিকেল কলেজ৷ চট্টগ্রাম থেকে অংশ নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটি৷ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছিল সিলেট বিভাগ থেকে৷ এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্ল্যাশ মবের ভিডিওচিত্রগুলো তৈরি করা হয় গ্রের তত্ত্বাবধানে৷ এখন অবশ্য আরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের উদ্যোগেই ফ্ল্যাশ মব বানাচ্ছে৷
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।