এই প্রথমবার এ'রাজ্যের সিপিআইএম নেতারা জ্যোতি বসুর অনুপস্থিতে লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করতে চলেছে। কিন্তু পরিস্থিতি বা মুহুর্ত বড়ই কঠিন এবং বাস্তব। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে দলের কর্মিসভায় উপস্থিত থাকতে পারেন নি তিনি। কিন্তু কথায় আছে পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। তাই মনোবল চাঙ্গা করতে কম্পিউটারের মাধ্যমে অসুস্থ জ্যোতি বসুর বক্তৃতা সমপ্রচার করে যুব ভারতীতে শোনানো হয়েছিল।
কর্মীরা বেশ আপ্লুত। নেতা আসতে পাররেন নি তো কি হয়েছে? তাঁর লাইভ বৃক্ততা তো শোনা গেল। কিন্তু এবার! জ্যোতি বসু অনুপস্থিত। কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ২০০৯ সালের ওই সব কর্মীরা।
এটা সত্যি যে কেউ কারোর বিকল্প হতে পারেন না।
২০১০ সালে ১৭ জানুয়ারী জ্যোতি বসুর প্রয়াণের পর তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এসেছিলেন ঠিকই! কিন্তু জ্যোতি বসুর অনুপস্থিতিতে রাজ্যে সিপিআইএম-এ সব থেকে যে বিষয়টির অভাব লক্ষ করা যাচ্ছে তা হল যোগ্য উত্তরাধিকারী। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দল দায়িত্ব দেওয়া সত্ত্বেও তিনি যে সফল একথা বলার মতো এখনও আসেনি। কিন্তু তিনি যে আশা জাগিয়েছিলেন তা সত্যি। তবু ২০১১ সালে বিধানসভার ভোটে সিপিআইএম-কে পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছিল। গোটা রাজ্যে বিরোধী হিসেবে সিপিআইএম নিজেকে যে আসনে প্রতিষ্ঠা করতে পারত তাও কিন্তু করে উঠতে পারেনি আলিমুদ্দিন।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন, ফের একবার সিপিআইএম নতুন করে তৃতীয় বিকল্পের কথা বলছে। যা জ্যোতি বসুর আমলেও সামনে উঠে এসেছিল। শুধু তাই নয় ১৯৯৬ সালে দিলি্লর রাজনীতিতে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যেখানে জ্যোতি বসুকে জাতীয় নেতা হিসেবে তুলে ধরার দাবি উঠেছিল। কিন্তু দল তা অনুমোদন করেনি। দলের কথা রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দলের কথায় তা দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন।
তাই জ্যোতি বসু দলের সিদ্ধান্তকে 'ঐতিহাসিক ভুল' বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন। কিন্তু দলের অনুগত সৈনিকের মতো আজীবন কাজ করে গিয়েছেন প্রবীণ এই কমিউনিষ্ট। কিন্তু এখন সময়টা ২০১৪। কাঁচে ঢাকা ফটোফ্রেমে স্থান পেয়েছে জ্যোতি বসু।
এমতাবস্থায় একেবারে দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন।
সর্বশক্তি দিয়ে প্রচারে নেমেছেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরাও। কিন্তু কোথাও যেন জ্যোতি বসুর অভাব টের পাচ্ছেন দলের প্রার্থী থেকে শুরু করে সবাই। কারণ তাদের মনোবল উজ্জীবীত করতে ভোকাল টনিকের মতো কাজ করবে না জ্যোতি বসুর সেই রেকর্ড করা তাঁর বক্তৃতা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।