এবার যৌনকর্মীদের আয়ে কর বসাতে যাচ্ছে ভারতের আয়কর বিভাগ। 'যৌনশিল্প' কে রাজস্ব আয়ের একটি বড় খাত হিসেবে মনে করছে তারা। এ লক্ষে গত ৩ এপ্রিল আয়কর বিভাগের একটি দল হানা দেয় এশিয়ার সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন যৌনপল্লি কলকাতার সোনাগাছিতে। পর্যায়ক্রমে দেশটির অন্যসব যৌনপল্লিতে অভিযান চালাবে বলে আভাস দিয়েছে আয়কর বিভাগ।
ভারতের অর্থ মন্ত্রনালয়ের অধীন আয়কর বিভাগের ধারণা, দেশটির ৫০টি বড় শহরে যেসব যৌনপল্লি আছে সেগুলো থেকে বিপুল রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সোনাগাছি যৌনপল্লিতে হানা দিয়ে আয়কর কর্তারা জানতে পারেন, গ্রাহকদের মধ্যে কদর বেশি এমন একেক জন যৌনকর্মী ভারতীয় মুদ্রায় মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা করে আয় করেন। তারা একেক জন ঘর ভাড়া দেন মাসে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে। এরপরই আরেকটু নড়েচড়ে বসেছেন আয়কর কর্তারা।
শুক্রবার আমার আনন্দবাজার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যৌনকর্মীদের আয়কর ফাঁকি রোধে দেশটির কোনো যৌনপল্লিতে আয়কর বিভাগের অভিযান এই প্রথম। এশিয়ার সবচেয়ে বড় যৌনপল্লি কলকাতার সোনাগাছি।
শহরের কেন্দ্রস্থলে এর অবস্থান। পল্লির একেকটি ভবনে তিরিশ থেকে চল্লিশটি ছোট ছোট ঘর আছে। এসব ঘরেই যৌনকর্মীরা খদ্দেরদের মনোরঞ্জন করেন। ওইসব ঘর থেকে বাড়ির মালিকরা মাসে মাসে ভাড়া আদায় করেন ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। এরাই মুলত যৌনপল্লির নিয়ন্ত্রক।
পুরোনো যৌনকর্মীরাই মুলত এসব বাড়ির মালিক।
আয়কর বিভাগের মতে যৌনকর্মীরা মাসে বিপুল পরিমাণ আয় করলেও সরকারকে কোনো কর দেন না। আয়কর আইনে করবিহীন যে কোনো টাকাই অবৈধ। তাই তারা এ অভিযানে নেমেছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে হঠাৎ যৌনপল্লিতে আয়কর হানা কেন? এর পেছনে কি আর কোনো কারণ আছে? কেউ কেউ বলছেন চলমান ভোটের হাওয়া বদলাতেও এমন অভিযান হতে পারে।
আয়কর দফতর সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি আরো বলেছে, যৌনপল্লিতে আয়কর বিভাগের হানা সম্ভবত ভারতে এই প্রথম। কারণ, সেখানে বিশাল অঙ্কের টাকার লেনদেন হচ্ছে নিয়মিত, অথচ আয়কর দফতরের কাছে তার কোনো হিসাব নেই। কর্মকর্তাদের ভাষায়, যাঁরা মাসে ১৫ লাখ টাকা বাড়ি ভাড়া পাচ্ছেন, তাদের তো আয়কর দেওয়া উচিত। কিন্তু বছর বছর তা ফাঁকি দিয়ে আসছেন বাড়ির মালিকরা ।
আবার যেসব যৌনকর্মী মাসে ১ থেকে দুই লাখ টাকা আয় করছেন তারাও কেউ আয়কর দিচ্ছেন না।
এখন তালিকা করে তাদের খাতা খোলা হবে আয়কর বিভাগে। আর এ কারণেই সোনাগাছিতে আয়কর বিভাগের এ অভিযান। এদিকে আয়কর বিভাগ পল্লির কয়েকটি ভবনে তল্লাশি চালিয়ে নগদ দেড় কোটি টাকার বেশি উদ্ধার করেন।
আয়কর বিভাগ আশা করছে দেশের যৌনপল্লিগুলো থেকেই বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি আয়কর পাওয়া যাবে। তবে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এ অভিযানের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য ২০০ বছরের পুরাতন কলকাতার সোনাগাছি যৌনপল্লিতে ১০ হাজারের বেশি যৌনকর্মী কাজ করেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।