আমার এই ছোট জীবনে, যতটুকু আমার সাধ্যের মধ্যে ছিল ততটুকু দিয়েই মানুষের সেবা বা সহায়তা করার চেষ্টা করেছি এবং করে যাব, এর জন্য কোন প্রতিদান আশা করিনি। আমার ছোট বেলা-থেকেই কম্পিউটার এর প্রতি ভীষণ আগ্রহ ছিল। বাংলাদেশে ইন্টারনেট আশার প্রথম দিক থেকেই আমি অনলাইন ভিত্তিক কাজের সাথে জড়িত। এখন আমি দেশে বসেই ইন্টারনেট এর মাধ্যমে সাইপ্রাস এর একটি কোম্পানিতে জব করছি। এজন্যই বাহিরের মানুষের সাথে আমার খুব কম মেসা হয়েছে।
বিদেশের মানুষের সাথে কাজ করার সুবাদে মন মানুষিকতা অনেকটা সেরকম হয়ে গিয়েছে। তাই মনেহয়, আমার দেশের অনেক পরিস্থিতির সাথে নিজেকে খাপ-খাওয়াতে পারিনা।
আমাদের গ্রামের বাড়ী গোপালগঞ্জ এবং আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু এই পরিচয় দিয়ে আমাদের পরিবারের কেউই কখনও কোন ধরনের বাড়তি সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করিনি আর করতেও চাইনা। তবে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমার ন্যায্য অধিকার টুকু চাই।
কিছুদিন আগে ”আমার বাবা এমন ক্যান…? ” শিরনামে এ একটি পোস্ট করেছিলাম এবং আপনাদের অনেক সাড়াও পেয়েছিলাম। চাইলে পোস্টটি একবার দেখতে পারেন।
মুল কথা।
আমার বাবা সড়ক ও জনপদ এ চাকরি করছেন এবং আর কয়েক মাস পরেই বাবা অবসর গ্রহন করবেন। এখন আমরা সরকারী কলোনিতে আছি কিন্তু বাবার অবসরে যাবার পর আমরা আর কলোনিতে থাকতে পারবোনা।
তাই অবসর পরবর্তী বাসস্থানের কথা চিন্তা করে (ডেমরা, মাতুয়াইল ১৯৯২ সালে কেনা ২.৫ কাঠা যায়গা) বাবার অনেকর কষ্টের জমানো টাকা দিয়ে মোটামুটি মানের একটি কাজে হাত দিয়েছে। যতটুকু জমান টাকা আছে তা দিয়ে কাজটি শেষ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে বাবা প্রতিটা মূহুর্ত ই টেনশন করেন। ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করছেন না, ১ মাস আগের বাবা আর এখন কার বাবাকে ঠিক মেলাতে পারছিনা। এর মাঝে আরও বড় একটি ঝামেলা যোগ হয়েছে। সেটা হচ্ছে একটি রাজনৈতিক দলের নাম ভঙ্গিয়ে একটি উঠতি রংবাজ আমাদের কাজ বন্ধ করে দেবার হুমকি দিচ্ছে।
এই মূহুর্তে বাড়ির বদলে বাবাকে নিয়েই সবাই খুব দুঃস্চিনাতর মধ্যে আছি। তার মুখের দিকে তাকাতে পারছেনা।
বাবাকে বলতে ইচ্ছা করে, বাবা গো... আমাদের বাড়ি লাগবেনা, বাড়ির জন্য আমরা তোমাকে হারাতে চাইনা। তুমি কিসের এত চিন্তা কর..? আমরা আছিতো! কিন্তু বলতে পারিনা। আজ মনে হচ্ছে আমরা চারটা ভাইই মনেহয় অপদার্থ।
তা না হলে মা কেন এমন কথা বলবে--- “ তোদের এই চার ভাই এর মধ্য থেকে যদি এক জন কেও মাস্তান বানাতাম, তাহলে হয়ত তোদের বাবার এই বয়সে এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতনা। আমি কিছু বলতে পারিনি মাকে, সুধু তাকিয়ে রইলাম মায়ের অশ্রু ভেজা মুখের দিকে। কি করবো আমি? কি করার আছে আমার? আমি কি পুলিশের সাহায্য নেব? তারা কি আমাকে সাহায্য করবে নাকি তারাও নতুন একটি ডিমান্ড নোটিশ ধরিয়ে দিবে?
আমি খুব সহজে কার কাছ থেকে সাহায্য চাইনা। কিন্তু মায়ের চোখের জল আর বাবার দুস্চিন্তা গ্রস্থ মুখ আমাকে এই লিখাটি লিখতে বাধ্য করল। জানিনা কেউ বন্ধুত্ব পূর্ণ হাত বাড়িয়ে দিবে কিনা... তার পরও আশায় থাকলাম।
এই ব্লগে সমাজের অনেক উপরের স্তরের (প্রশাসনিক/রাজনৈতিক/সাংবাদিক) ব্যক্তিরা আছেন অথবা তাদের পরিচিত জন আছেন। যাদের একটু সহানুভুতি ই পারে আমাদের এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে। যেহেতু আমাদের মেধ্যে কোন দুর্বলতা নাই সেহেতু এই বিষয়টি আইন গত ভাবে মোকাবেলা করতে আমাদের কোন সমস্যা নেই।
*ডেমরা থানার অন্তর্ভুক্ত (মাতুয়াইল, মুসলিম নাগর)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।