১ম পর্ব
গর্ভাবস্থায় অনেক সমস্যা দেখা দেয় মায়েদের, যে গুলো কোন কোনটা স্বাভাবিক অর্থাৎ ভয়ের কিছু না আবার কিছু সমস্যা হয় যা আমলে না দিলে পরবর্তীতে বিরাট আকার ধারন করে । সেজন্য মায়েদের উচিৎ জেনে রাখা কেমন সমস্যা হতে পারে এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপ কেমন হওয়া প্রয়োজন । আজকে আমি তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই সংকলিত পোস্টটি করছি ।
কি কি সাময়িক সমস্যা হতে পারেঃ
বমিভাব ও বমি :
এটা খুব সাধারণ সমস্যা এবং বলা হয়ে যে, এটা গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণ। সাধারনত হরমোনের তারতম্যের কারণে এমনটি হয়।
গর্ভধারণের প্রথশ তিনমাস এ সমস্যা কারোও কারোও বেশি দেখা দিতে পারে। পরে আপনা-আপনি এ সমস্যা ভালো হয়ে যায়। তাই এটা নিয়ে বেশি দুচিন্তা করবেন না। সকালে উঠে খালি পেটে শুকনো টোস্ট খেলে এবং ক্ষিধে লাগার আগেই খেয়ে ফেললে বমির ভাব কম হয়। সাধারণ বমি ডাক্তারের পরামর্শ মতে কিছু ওষুধ খেলে সেরে যায় বা কমে যায়।
কিন্তু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বমি হয় তখন চিকিৎসকের নির্দেশমত চিকিৎসা ও প্রয়োজনে হাসপাতালেও ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
বমি বা বমি ভাব প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ গর্ভবর্তী মাকে আশ্বস্ত করতে হবে
২৷ ঘুম থেকে উঠে শুকনা খাবার খেতে হবে যেমন- মুড়ি, বিস্কুট
৩৷ খাবারের অন্তত ঃ ১/২ ঘণ্টা পর পানি খেতে হবে
৪৷ বারেবারে অল্প করে খেতে হবে৷
৫৷ তাড়াতাড়ি ঢকঢক করে দুধ বা পানি পান করবেন না
৬৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
রক্তস্বল্পতাঃ
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়৷
১৷ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম মাস থেকে ফলিক এসিড এবং ৩ মাসের পর থেকে পরিমাণমতো আয়রন ও ক্যালসিয়াম খেতে হবে৷
২৷ আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কচুর শাক, কলার মোচা, তেঁতুল, তরমুজ, কলিজা, ডিম ইত্যদি খেতে হবে৷ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- আমলকি, লেবু, কাঁচামরিচ, পেয়ারা, আঁনারস এবং কঁাচা ফলমূল খেতে হবে৷
কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভাবস্থায় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন৷ অনুপযুক্ত খাবর গ্রহণ, প্রয়োজনমতো পানি পান না করা ও অনিয়মিত পরিশ্রমের ফলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ প্রচুর পwরমাণে পানি পান করা৷
২৷ প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও টাটকা ফল খেতে হবে৷ যেমন - কলা, আম, গাছপাকা পেয়ারা, খেজুর, পেঁপে, আপেল ইত্যাদি৷ এছাড়াও দুধ-ভাত, কলা কিংবা আটার রুটি ও দুধ খাওয়া যেতে পারে৷
৩৷ নিয়মিত ঘরের কাজ ও হঁাটাচলা করতে হবে
৪৷ প্রয়োজনে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন৷
অনিদ্রা
গর্ভাবস্থার শেষের দুই-তিন মাস অনিদ্রার ভাব হয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ বিকেলে হঁাটা, শোবার আগে গরম দুধ খাওয়া বা বই পড়া ইত্যাদিতে উপকার হতে পারে৷
২৷ ঘুমের অসুবিধা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷
হাত-পায়ে টান ধরা
বিশেষ করে রাতে অনেক সময় পায়ে টান ধরে৷ হালকা ম্যাসেজ বা গরম সেক দিলে উপকার পাওয়া যায়৷ এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷
পিঠে ব্যথা
গর্ভের প্রথমাবস্থা থেকে এ কষ্ট অনেক সময় দেখা দেয় যা শেষের দিকে খুব বেড়ে যেতে পারে৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ শক্ত বিছানা ঘুমালে উপকার পেতে পারেন
২৷ শিরদঁাড়ায় ম্যাসেজ করতে পারেন
৩৷ হঁাটাচলার সময় কোমরে বেল্ট ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়৷
৪৷ সামনে ঝুঁকে কোনও কাজ করা যাবে না৷
৫৷ ভারী জিনিস উঠানো যাবে না৷
৬৷ ব্যথার ওষুধ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া খাওয়া উচিত নয়৷
৭৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
পায়ের শিরা ফুলে যাওয়া
অনেক সময় গভবর্তী মায়ের পায়ের শিরা ফুলে যেতে পারে৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ দীর্ঘ সময় দঁাড়ানো যাবে না
২৷ পা তুলে বসতে হবে
৩৷ প্রয়োজনে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে৷
৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
পা ফোলা
গর্ভাবস্থায় পা ফুলতে পারে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস সময়ে পা ফুলে গেছে কিনা দেখার জন্য উভয় গোড়ালির চারপাশে বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপ দিন৷ যে পয়েন্টে চাপ দেওয়া হয় সেখানে যদি একটি ছোট গর্ত হয়ে যায় এবং শীঘ্র তা মিলিয়ে যায় তবে বুঝতে হবে পায়ে পানি নেমেছে৷ শরীরে লবণ বৃদ্ধির ফলে পায়ের গোড়ালি ফুলে যায় ও পানি জমে৷ শরীরে পানি জমলে বা শরীর ফুলে গেলে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর রক্তচাপ, প্রস্রাব পরীক্ষা করা ও ওজন দেখা উচিত৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১। পা উঁচুতে রেখে বিশ্রাম নেওয়া
২। খাবারের সাথে বাড়তি লবন না খাওয়া
৩। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
বুক ধড়ফড় ও নিঃশ্বাসের কষ্ট
গর্ভাবস্থায় হার্টের কাজ বেড়ে যায়৷ কারণ মা ও শিশু দুইয়ের শরীরের রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়৷ অনেক সময় মায়ের রক্তশুন্যতা দেখা দেয়৷ এসব কারণে বুক ধড়ফড় করে৷ জরায়ুর বৃদ্ধির ফলে ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ে এবং তার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়৷ তাই নিঃশ্বাসের নিতে কষ্ট হয়৷
মূত্র নালীর সংক্রমণ
গর্ভবস্থায় প্রসাবে জ্বালা পোড়া হতে পারে৷ তাই
১৷ প্রচুর তরল পানীয় খেতে হবে
২৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
জ্বর
গর্ভাবস্থায় খুব জ্বর হলে মা ও বাচ্চার উভয়ের জন্যে খুব বিপজ্জনক হতে পারে৷ এরূপ হলে হাসপাতালে বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
অর্শ
কোষ্ঠকাঠিন্য ও অর্শ যদি একই সঙ্গে থাকে তবে তা গর্ভাবস্থায় বেড়ে যায়৷ সুতরাং পায়খানা পরিষ্কার হওয়া দরকার৷ এ অবস্থায় দেরী না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
মাথাব্যথা
অতিরিক্ত পরিশ্রম, ক্ষুদা এবং গরম লাগলে মাথা ব্যথা হতে পারে৷ একারণে এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত৷
তলপেটে ব্যথা :
জরায়ু ধীরে ধীরে বড় হয়ে এর আশে-পাশের লিগামেন্টে টান পড়ার জন্য তলপেটে ও কুঁচকিতে হালকা ব্যথা হতে পারে।
এই ব্যথা স্বাভাবিক। এই ব্যথা পাঁচ-ছয় মাসের দিকে হয়।
সাদা শ্রাব :
গর্ভাবস্থায় হরমোন ইস্ট্রোজেন ও রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার জন্য সাদা শ্রাব কোন কোন সময় যেতে পারে। ঢিলেঢালা পোষাক ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সাদা শ্রাবের সাথে যদি দুর্গন্ধ থাকে বা চুলকানি হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গলা ও বুক জ্বালা :
এটাও গর্ভকালীন একটা সাধারণ সমস্যা। অতিরিক্ত ঝাঁল, তেলচর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিলে এসমস্যা কমে যায়। তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শুয়ে থাকলে বড় জরায়ু পাকস্থলীতে চাপ দেয়ার জন্য এটা হতে পারে। তখন উচুঁ বালিশে কাত হয়ে শোয়া, খাবার পর কিছুক্ষণ হাঁটা-হাঁটি করার পর পানি খেলে এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
সহজপাচ্য খাবার বারে বারে অল্প অল্প খেতে হবে
১৷ খাওয়ার পর পরেই শোয়া চলবে না, শোয়ার প্রয়োজন বেশি হলে মাথার নিচে দুটি বালিশ দিয়ে অর্ধ শয়ন অবস্থায় শুতে হবে
২৷ মসলাযুক্ত ভাজা খাবার খাওয়া যাবে না
৩৷ প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা পানি পান করতে হবে
৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
এছাড়াও আরও কিছু সমস্যা বিশেষ করে প্রথমদিকে মাথাঘোরা, অরুচি, দুর্বল লাগা, আলসেমি লাগা-শেষের দিকে ওঠতে বসতে বা শোয়া থেকে উঠতে কষ্ট লাগা, হাত-পা গরম ভাব, গায়ে মুখে বিশেষ করে গলায় কালো দাগ পড়া, পেঁটের চামড়া ফেটে যাওয়া বেশী পিপাসা লাগা বা ক্ষিধে পাওয়া এগুলো হতে পারে।
গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিল সমস্যাঃ
১. গর্ভপাত
২. প্রি-এক্লাম্পশিয়া
৩. এক্লাম্পশিয়া
৪. ফিস্টুলা
৫. পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া
১) গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন সময়ে রক্তপাত হতে পারে। পুরো গর্ভাবস্থাকে তিন ভাগে ভাগ করলে প্রথম তিন মাস, মাঝের তিন মাস ও শেষের তিন মাসের যে কোন সময় রক্তক্ষরণ হতে পারে।
যদি কোনো কারণে গর্ভস্থ ভ্রূণ আটাশ সপ্তাহ বা সাত মাসের পূর্বে মাতৃজঠর বা জরায়ু থেকে বের হয়ে যায় তবে তাকে গর্ভপাত বা এ্যাবরশন বলে৷
কারণ
গর্ভপাতের কারণগুলোকে মোটামুটি দুভাগে ভাগ করা যায়-
১. ভ্রুণের অস্বাভাবিকতা বা ক্রমোজমের ত্রুটি
২. গর্ভবতী মায়ের শরীরের নানা ত্রুটির জন্য গর্ভপাতের আশংকা থাকে৷ যেমন-
* গর্ভবতীর যদি গর্ভাবস্থায় খুব জ্বর হয় এবং তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে উঠে যায়৷
* গর্ভবতীর যদি গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বেড়ে যায়৷
* গর্ভবতীর যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং তা যদি পূর্বে শনাক্ত করা না হয়ে থাকে এবং অনিয়ন্ত্রিত থাকে৷
* গর্ভবতীর যদি কিডনীর অসুখ (নেফ্রোটিক সিনড্রোম) থাকে৷
* গর্ভবতী যদি গর্ভাবস্থায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়৷
* গর্ভবতী যদি গর্ভাবস্থায় কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়৷
* থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে৷
* জরায়ুর টিউমার বা জরায়ুর গঠনগত কোনও ত্রুটি থাকলে৷
* জরায়ুতে গর্ভফুল বা প্ল্যাসেন্টা যদি খুব নিচে নেমে আসে তাহলেও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে৷
* আগের গর্ভাবস্থা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত করানো হয়৷
* মায়ের শরীরে প্রোজেস্টেরোন হরমোন কম থাকার কারণে গর্ভপাত হতে পারে৷
* গর্ভবতী যদি অত্যধিক মদ্যপান বা ধূমপানে আসক্ত হন তবে গর্ভপাত হতে পারে৷
* গর্ভবতী যদি প্রবল মানসিক পীড়ণে থাকেন বা চরম শোক দুঃখ পান তাহলে গর্ভপাত হতে পারে৷
* গর্ভাবস্থায় পেটে আঘাত পেলে, অত্যধিক পরিশ্রম, বাস বা ট্রেনে অনেক দূরে যাতায়াত করলে গর্ভপাত হতে পারে৷
গর্ভপাতের শ্রেণীবিভাগ ও গর্ভপাতের লক্ষণ
থ্রেটেন্ড গর্ভপাত
* কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
* রক্তস্রাব অল্প সামান্য হতে পারে৷
* পেটের ব্যথা নাও থাকতে পারে, থাকলেও খুব অল্প, কোমর বা তলপেটে সামান্য ব্যথা থাকতে পারে৷
* প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রুণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
* জরায়ুর মুখ বন্ধ থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
অসম্পূর্ণ গর্ভপাত
* কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
* রক্তস্রাব অনেকদিন একইভাবে হতে পারে৷
* পেটে ব্যথা থাকতে পারে নাও পারে৷
* প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে৷
* জরায়ুর মুখ খোলা থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
জীবাণুদুষ্ট গর্ভপাত
* কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
* কট গন্ধযুক্ত রক্ত স্রাব হতে পারে৷
* প্রথমদিকে পেটে ব্যথা না হলেও পরে তলপেটে খুব ব্যথা হবে৷
* প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসতেও পারে নাও পারে৷
* জরায়ুর মুখ খোলা বা বন্ধ থাকতে পারে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
* শীত করে এবং কঁাপিয়ে জ্বর আসতে পারে৷
* রক্ত চাপ কমে যায়৷
* অত্যধিক রক্ত ক্ষরণের কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে৷ রোগী ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে৷
ল
মিস্ড গর্ভপাত
* কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
* প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
* পেটে ব্যথা থাকবে না৷
* জরায়ুর মুখ সাধারণত বন্ধ থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
* রক্তস্রাব হবে না, সামান্য বাদামি দাগ লাগতে পারে৷
ইনএভিটেবল গর্ভপাত
* কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
* খুব বেশি পরিমাণে রক্তস্রাব হবে৷
* তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা৷
* প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রুণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
* জরায়ুর মুখ খোলা থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
পরামর্শ
* কমপক্ষে একমাস বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত৷
* বাড়ির হালকা কাজকর্ম করা যেতে পারে৷
* একমাস স্বামী-সহবাস করা যাবে না৷
* পরবর্তী বাচ্চা নেওয়ার আগে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে৷
প্রতিরোধ
* সন্তান সম্ভাব হলেই চিকিত্সককেরকাছে পূর্বের সকল ইতিহাস খুলে বলতে হবে৷
* নিয়মিত চেকআপ জরুরি৷
* সন্তান সম্ভাব হওয়ার প্রথম দিকে রিকশা, বাস, ট্রাম, ট্রেন ইত্যাদির ঝঁাকুনি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত৷
* টিউবয়েল পাম্প করা, পানি ভর্তি ভারী বালতি তোলা, বাচ্চা কোলে নেওয়া ঠিক নয়৷
* ছোঁয়াচে অসুখ থেকে গর্ভবতী মাকে দূরে রাখতে হবে৷
* দোকান বা হোটেলের খাবার না খাওয়াই ভালো৷
* প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে৷ |
২)প্রি-একলাম্পশিয়া
প্রি-একলাম্পশিয়া গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ অর্থাত্ ৫ মাস পর থেকে দেখা দেয়৷
কারণ
* একবার প্রি-একলাম্পশিয়া হলে
* প্রি-একলাম্পশিয়া পরিবারে কারো হলে
* পরিবারে কারো উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
* যাঁরা বেশি বয়সে মা হন তাদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
লক্ষণ
* রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া৷ রক্তচাপ সাধারণত ১৪০/ঌ০ (মিলিমিটার) এর বেশি থাকে
* প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন (আমিষ) জাতীয় পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া
* হাত-পায়ে পানি আসা
* অনিদ্রা
* চোখে ঝাপসা দেখা
* উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং নেফ্রাইটিস রোগীদের
* অসহ্য মাথা ব্যথা
* খিঁচুনি
*অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে (প্রসবের সময়, আগে এবং পরে)
*প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
*বার বার বমি
*পেটের উপর দিকে অসহ্য ব্যথা
*শরীরে ওজন বাড়তে থাকে
* পেটে ব্যথা
* প্রি-একলাম্পসিয়া হওয়ার শুরুতেই শরীরে ওজন বাড়তে থাকে
* সপ্তাহে আধা কেজি ওজন বৃদ্ধি পায়
চিকিৎসা
* প্রি-একলাম্পশিয়া আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত চেকআপ করানো দরকার
* খাবারের সঙ্গে আলাদা লবণ খাওয়া বন্ধ করতে হবে
* প্রোটিন এবং ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেতে হবে
* পুষ্টিকর নরম খাবার খেতে হবে
* রাতে গড়ে ৮ ঘণ্টা এবং দিনে ২ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে
* পা ফুলে গেলে পা দুটো বালিশের উপর উঁচু করে রেখে ঘুমাতে হবে
* ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ এবং প্রেসারের ওষুধ খেতে হবে
* রক্তচাপ, ওজনের চার্ট তৈরি করতে হবে
* প্রস্রাবের সঙ্গে প্রোটিন যাচ্ছে কি না তার চার্ট করতে হবে
* বাচ্চার অবস্থাও বারবার দেখতে হবে
* প্রয়োজনে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে
সঠিক সময়ে চিকিত্সা না করালে নিম্নলিখিত সমস্যা হতে পারে
মায়ের সমস্যা
* প্রস্রাব না হওয়া অথবা অল্প হওয়া
* চোখে কম দেখা এমনকি অন্ধ হয়ে যাওয়া
* বাচ্চা প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া
* একলাম্পশিয়া বা খিঁচুনি হওয়া
শিশুর সমস্যা
* বাচ্চা মাতৃগর্ভে মারা যেতে পারে
* বাচ্চার বৃদ্ধি ঠিকমত হবে না
* জণ্মের সময় শ্বাসকষ্ট হবে
প্রতিরোধ
* গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত প্রসবপূর্ব চেক-আপের ব্যবস্থা করা
* গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা
প্রসবপূর্ব চেক-আপের সময় শারীরিক ওজন ও রক্তচাপ, পায়ে পানি আসে কিনা, প্রস্রাবে এলবুমিন যায় কিনা এগুলো পরীক্ষা করা উচিত৷
ল্যাব পরীক্ষা
* প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা
* ২৪ ঘণ্টায় প্রস্রাবের প্রোটিন পরীক্ষা
* রক্তে ইউরিয়া, ইউরিক এ্যাসিড এবং ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ দেখা
* এসজিপিটি পরীক্ষা
* পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে বাচ্চার অবস্থা দেখা৷
৩)একলাম্পশিয়া বা গর্ভকালীন খিঁচুনিঃ
এক্লাম্পশিয়া মূলত প্রি-এক্লাম্পশিয়ার গুরুতর অবস্থা৷ গর্ভবতী মায়ের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে একলাম্পশিয়া বা গর্ভকালীন খিঁচুনী। নবজাতকের মৃত্যুরও অন্যতম কারণ একলাম্পশিয়া। সা ধারণত ৬ মাস গর্ভধারণের পর অথবা প্রসবের সময় এ উপসর্গ দেখা দেয়।
কখনো কখনো প্রসব পরবর্তী অবস্থায়ও এটি দেখা দিতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রসবের কাছাকাছি সময়ে এ রোগ দেখা দেয়। যেসব মায়ের আগে একবার একলাম্পশিয়া হয়েছে তাদের পরবর্তী প্রসবের সময় আবারো একলাম্পশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
একলাম্পশিয়া হলে রোগীর বারবার খিঁচুনী হবে। খিঁচুনীর ফলে রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়।
অনেক সময় প্রবল খিঁচুনীতে এমনিতেই প্রসব শুরু হয়ে যেতে পারে। একলাম্পশিয়া হওয়ার আগে যে অবস্থাটা তাকে বলা হয় প্রি-একলাম্পশিয়া। এটি একলাম্পশিয়ার পূর্ব লক্ষণ।
প্রিএকলাম্পশিয়া/একলাম্পশিয়া বা গর্ভকালীর খিঁচুনীর তিনটি উপসর্গ রয়েছেঃ
১। হাতে-পায়ে পানি আসা।
২। রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া।
৩। প্রস্রাবে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়া।
একলাম্পশিয়ার জটিলতা সমূহ
একলাম্পশিয়া রোগীর সন্তানের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
পরপর খিঁচুনির ফলে গর্ভস্থ সন্তান পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে সন্তানের শরীরের ক্ষতি হয়। এছাড়া খিঁচুনি বন্ধ করার জন্য যেসব ওষুধ মাকে দেয়া হয়, তার জন্যও সন্তান মারা যেতে পারে। এ রোগ কিডনিতে জটিলতা সৃষ্টি করে এবং প্রস্রাব অনেক সময় বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম সন্তানের বেলায় এই অসুখ বেশি দেখা দেয়।
মায়ের একলাম্পশিয়ার ইতিহাস থাকলে মেয়ের গর্ভকালীন সময়েও এ রোগ হতে পারে।
চিকিৎসা ও সেবা প্রদানের স্থান
প্রি-একলাম্পশিয়ার চিকিৎসা সময়মতো হলে একলাম্পশিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। এজন্য প্রি-একলাম্পশিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্রই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। গর্ভকালীন সেবা বা এএনসি সঠিকভাবে গ্রহন করলে প্রি –একলাম্পিশয়া বা একলাম্পশিয়ার ঝুঁকি কমে যাবে।
প্রতিরোধের উপায়
একলাম্পশিয়া বা গর্ভকালীন খিঁচুনী প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এজন্য প্রয়োজনঃ
নিয়মিত এন্টিনেটালা চেকআপ-প্রসব-পূর্ব বা গর্ভকালীন পরিচর্যা নিয়মিত রক্তচাপ মাপা,প্রসাবে প্রোটিন যায় কিনা পরীক্ষা করা, রক্তশূন্যতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করা ,হাতে পায়ে পানি ইত্যাদি পরীক্ষা করা। যেহেতু একলাম্পশিয়া হওয়ার আগে প্রি-একলাম্পশিয়া হয়, তাই প্রি-একলাম্পশিয়া প্রতিরোধ করা গেলেই একলাম্পশিয়া হবে না।
http://www.amarbornomala.com/details1644.html
http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=31302
৪)প্রসবজনিত ফিস্টুলাঃ
ফিস্টুলা হচ্ছে এক ধরনের অস্বাভাবিক নালী যার গায়ে কোষকলা থাকে এবং যা আবরণী কলা দিয়ে আবৃত শরীরের যে কোন দুটো অংশের মধ্যে সংযোগ ঘটায়৷ মানুষের দেহে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধির পরিণতিতে বিভিন্ন রকম ফিস্টুলা হতে পারে৷ তবে সচরাচর যে সব ফিস্টুলা দেখা দেয় তা হচ্ছে -
১.এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তার ফিস্টুলা
২.ভেসিকে ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা
৩.রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা
এনাল ফিস্টুলা (Anal Fistula)
এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তায় ফিস্টুলা হলে একটা নালী সৃষ্টি হয় যা পায়খানার রাস্তার ভেতরের কোনো অংশের সঙ্গে বাইরে সংযোগ স্থাপন করে দেয়৷ পায়খানার রাস্তায় দীর্ঘদিনের সংক্রমণ ও প্রদাহের ফলে এ রোগ দেখা দেয়৷
লক্ষণ
* পায়খানার রাস্তার পাশ দিয়ে পুঁজ পড়ে, আক্রান্ত স্থানে ঘা হয়৷
* জ্বর হয়
* পায়খানার রাস্তার পাশে ছিদ্র পাওয়া যায় (চিকিত্সক পরীক্ষা করলে)
* পায়খানার রাস্তার পাশের ছিদ্রে চাপ দিলে পুঁজ বের হয়ে আসে৷
চিকিৎসা
এ রোগের একমাত্র চিকিত্সা হচ্ছে শল্য চিকিত্সা বা অপারেশন৷ তাই রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞ সার্জনের কাছে পাঠাতে হবে৷ না হলে পরবর্তী সময়ে নানাজটিলতা দেখা দিতে পারে৷
ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Vesico Vaginal Fistula-VVF)
৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতাসম্পন্ন গর্ভবতীদের অনেক সময় প্রসবের পথ সরু থাকে এবং অনেক সময় প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা প্রসব পথে আটকে যায়৷ আর এই প্রসব পথের চাপ যদি মূত্রথলির দিকে থাকে৷ তবে যোনিপথ ও মূত্রথলির মাঝখানের দেয়াল ছিদ্র হয়ে সব সময় মূত্র যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে৷ ইহাকে ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বা ভিভিএফ বলে৷
রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Recto Vaginal Fistula-RVF)
যোনি ও মলদ্বারের দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যোনি পথ দিয়ে বের হওয়াকে রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বলে৷
কারণ
*জণ্মগত
*বাইরের কোনও বস্তু যদি যোনিপথে ও মলদ্বারে আঘাত করে পথ সৃষ্টি করে৷
*প্রসবকালে যদি দীর্ঘ সময় ধরে শিশুর মাথা যোনিপথে আটকে থাকার ফলে যোনিপথের দেয়ালের কোষকলাগুলিতে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে কোষকলা নষ্ট হয়ে যায় এবং তার ফলে দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যৌনিপথে চলে আসে৷
*বাধাপ্রাপ্ত প্রসবের কারণে ফরসেপ ব্যবহার করার সময় ফরসেপ সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হলে৷
*শিশুর মাথা তাড়াতাড়ি প্রসব করানোর জন্য ধাত্রী হাত দিয়ে বার বার প্রসবের রাস্তা প্রশস্ত করার চেষ্টা করলে বা টানা হেঁচড়া করে প্রসবের চেষ্টা করলে৷
*জরায়ুর মুখ পুরোপুরি খোলার আগেই এবং হঠাত্ করে প্রসবের ব্যথা আসার কারণে মা কেঁাথ দিয়ে প্রসব করার ফলে যোনিপথের দেয়াল ছিঁড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷
লক্ষণ ও উপসর্গ
ফিস্টুলার আকার এবং এটি হওয়ার স্থানের উপর নির্ভর করে এর লক্ষণ ও উপসর্গ গুলো সাধারণত: ভিন্ন হয়। যেমন:
o প্রস্রাব, পায়খানা ও পুঁজ যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে যাওয়া
o দুর্গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব হওয়া
o যোনিপথের এবং প্রস্রাবের রাস্তায় (Urinary tract)-এ বার বার সংক্রমণ হওয়া
o যোনিমুখে, যোনিপথে এবং মলদ্বারে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হওয়া
o শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের সময় ব্যথা অনুভব করা
o ঘন ঘন পায়খানা হওয়া এবং পায়খানা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়া
কি ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে
গর্ভধারণের অথবা সন্তান জন্মদানের ইতিহাস জানা,শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা,যোনিপথ, মলদ্বার ও পায়ুপথ পরীক্ষা,মলদ্বার এবং পায়ুপথের এনোরেক্টাল আল্ট্রাসাউন্ড ( Anorectal UltraSound_),কনট্রাস্ট টেস্ট (Contrast Test) যেমন: ভ্যাজাইনোগ্রাম (Vaginogram), বারিয়াম (Barium) পরীক্ষা,পেটের এবং শ্রেণীর (Pelvis) কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফী (Computerized Tomography),শরীরের নরম কোষের ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমেজিং (Magnetic Resonance Imaging) ।
কি ধরণের চিকিৎসা আছে
সার্জারি বা অপারেশন,অপারেশনের আগে কোন সংক্রমণ হলে এ্যান্টিবায়োটিক সেবন,ডাক্তারের পরামর্শ ও নির্দেশনানুযায়ী ঔষধ সেবন ও বিধি-নিষেধ মেনে চলা ।
জীবন যাপন পদ্ধতি
প্রস্রাব-পায়খানার পর ভালোমত গরম পানি সাবান দিয়ে পায়ুপথ পরিষ্কার করা। ধোয়ার পর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছতে হবে। জ্বালাপোড়া হতে পারে এমন প্রসাধন/সাবান ব্যবহার না করা ,ঢিলেঢালা পোশাক এবং সুতির অর্ন্তবাস পরা।
কিভাবে প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধ করা যায়
* প্রথবার প্রসবের সময় ১২ ঘণ্টার বেশি হলে এবং দ্বিতীয়বার বা পরবর্তী প্রসবের সময় ৬ ঘণ্টার বেশি হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, প্রসবকাল দীর্ঘ না করা ।
* জরায়ুর মুখ ছোট হলে বাচ্চা প্রসবের জন্য টানা হিঁচড়া না করে দ্রুত হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত৷
* গর্ভবতীর গর্ভকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত৷
* ৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতা সম্পন্ন গর্ভবতীদের হাসপাতালে প্রসব করানো উচিত৷
* ডাক্তার বা দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাইয়ের হাতে প্রসব করানো উচিত৷
* প্রসবের পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত, অল্প বয়সে গর্ভধারণ না করা।
৫)পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া
যৌনি মুখ ও পায়ুপথের মাঝখানের জায়গাটিকে পেরিনিয়াম বলে৷ পেরিনিয়ামে কোনও আঘাতের ফলে ক্ষত বা ছিঁড়ে যাওয়াকে পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া বলে৷
কারণ
* মহিলাদের পেরিনিয়াম ছিড়ে যাওয়ার একটি প্রধান কারণ অদক্ষ লোকের সহায়তায় প্রসব করানো৷
* প্রসবের সময় বিভিন্ন কারণে পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যেতে পারে -
* যোনিপথের তুলনায় শিশুর মাথা বড় থাকলে৷
* প্রথমবার প্রসবের সময় যোনিপথের মাংসপেশী শক্ত থাকলে৷
* প্রসব ব্যথা না থাকার কারণে যোনিপথে শিশুর মাথা অনেকক্ষণ আটকে থাকলে৷
* জরায়ুর মুখ পুরো খোলার আগেই মা যদি জোরে চাপ (কেঁাথ) দেয়৷
* অদক্ষ দাই দিয়ে প্রসব করালে৷
* ফরসেপ দিয়ে প্রসব করালে৷
লক্ষণ
প্রসবের পর প্রসবপথ পরিষ্কার করে যোনিপথ মলদ্বার পর্যন্ত পরীক্ষা করলে পেরিনিয়াম ছিঁড়েছে কিনা বোঝা যাবে৷ যদি পেরিনিয়াম ছেঁড়া থাকে তবে -
* পেরিনিয়ামের চামড়া দেখা যাবে ফেটে গেছে
* ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যাবে
* রোগী পেরিনিয়ামে ব্যথা অনুভব করবে৷
চিকিত্সা
পেরিনিয়াম ছিঁড়ে গেছে বোঝা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ হবে৷ না হলে পরে বিভিন্ন জটিলতা দেখো দেবে৷
http://www.infokosh.bangladesh.gov.bd/detail.php?article_id=375&content_type=0&doc_type=5
কৃতজ্ঞতা ছিল যাদের প্রতিঃ
http://www.infokosh.bangladesh.gov.bd/detail.php?article_id=375&content_type=0&doc_type=5
http://www.amarbornomala.com/details1644.html
http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=31302
বিঃদ্রঃ যেহেতু আমি অভিজ্ঞ নই ,সংকলিত তাই নতুন কিছু সংযোজন এর দরকার হলে বলবেন । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।