বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন] দূর্ঘটনাবহুল এক দেশ, নাম তার বাংলাদেশ। এ দেশে মানবসৃষ্ট দূর্ঘটনায় যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়, প্রাণহানি হয়, তা আর অন্য কোন দেশে হয় কিনা আমার সন্দেহ। আমি দেশের সকল প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়াকে অনুরোধ করবো, ঢাকাসহ দেশের সকল জেলায় যেসব ঝুকিপূর্ণ ভবন রয়েছে সেগুলো নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন তৈরী করার জন্য।
এছাড়াও যেসব কল কারখানায় অগ্নি নির্বাপণের সুব্যবস্থা নেই, তাও প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। এটা এখন আপনাদের, বিশেষ করে সাংবাদিক ভাই বোনদের জন্য নৈতিক দায়িত্ব হয়ে পড়েছে।
এটা খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে, এসব প্রতিবেদন তৈরী করতে গিয়ে আপনাদের ঝুকি নিতে হবে, জীবণের ঝুকি নিতে হবে, অনেক প্রভাবশালী (কুপ্রভাবশালী) মহলের হুমকি ধামকি শুনতে হবে। অসৎ রাজনীতিবিদ, অসৎ ব্যবসায়ীরা খালি হুমকি দিয়ে বসে থাকবে না, তারা তাদের পাচাটা কুকুরগুলো নিয়ে আপনাদের উপর ঝাপিয়ে পরবে। কিন্তু তবুও এ কাজটি আপনাদের করতেই হবে।
সাধারণ জনগণের জানমালের কথা মাথায় রেখে মিডিয়াকে এসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের সাংবাদিক ভাই বোনদের অনেকেই তো জীবণের ঝুকি নিয়ে সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপের ভিতরে ঢুকে প্রতিবেদন তৈরী করেছেন। সুতরাং আপনাদের তো সাহসের কোন অভাব নেই।
মিডিয়া হলো সমাজের আয়না। সমাজের চিত্র সঠিক নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরা মিডিয়ার নৈতিক দায়িত্ব।
মিডিয়া যদি অসৎ লোকদের কথায় উঠা বসা করে, হলুদ সাংবাদিকতা বা অপসাংবাদিকতায় লিপ্ত হয়, পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে প্রতিবেদন তৈরী করে তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে! বর্তমানে এ দেশে অসংখ্য প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া থাকলেও তাদের নিরপেক্ষতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ !
আপনারা যদি নিরপেক্ষভাবে এসব ঝুকিপূর্ণ (নির্মাণ ত্রুটি, অগ্নি নির্বাপণের অপ্রতুল ব্যবস্থা অথবা অন্য কোন কারণে) ভবন নিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করে জাতির সামনে পেশ করতে পারেন তাহলে এর ফল হবে সুদূরপ্রসারী। এতে ঐ সব ঝুকিপূর্ণ ভবন মালিকদের এবং ঐ সব ভবনে যেসব অফিস ও ফ্যাক্টরী রয়েছে সেগুলোর মালিকদের টনক নড়বে। বিষয়টি সরকারের নজরে আসবে। সরকার হয়তোবা এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। তখন হয়তো বিল্ডিং নির্মাণ সংক্রান্ত আইন গুলোর সঠিক প্রয়োগ হবে।
সাধারণ মানুষ আরো অনেক বেশী সচেতন হবে। আর হয়তো বা আশুলিয়ার তাজরীন এবং সাভারের স্পেকট্রাম, রানা প্লাজা ট্রাজেডীর পুনরাবৃত্তি হবে না। আমরা নিশ্চয়ই এ ধরণের মানব সৃষ্ট দূর্ঘটনা বারবার দেখতে চাই না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।