আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যাঙ এর ঠ্যাং এবং বানরের পিঠা ভাগ (প্রাপ্ত বয়স্কদের উপযোগি সচিত্র পোস্ট)

সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল রান ওয়ে ছবিটা দেখলাম। আর্ট ফিল্ম হলেও বেশ চলমান। প্রশংসা পাওয়ার মতই। হ্যা, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব আছে বটে, সে টুকু আলাদা করে রাখাই যাই। মুভি রিভিউ লিখতে বসিনি।

বরং সেই ছবির মুল উপজীব্যকে বাস্তবে দেখে খানিকটা অস্বস্তি অনুভব করছি। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান এবং মুল উৎসকে কেন্দ্র করেই ছবিটা এগিয়েছে। আবহমানকাল থেকেই বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু। অন্তত ২০ বছর আগেও যা দেখা যেতো না এখন তাই দেখা যাচ্ছে। আমাদের মা বোনরা দেশি পোষাকেই শালিনতা বজায় রাখতে সক্ষম ছিলেন।

কিন্ত হঠাৎ করেই দেখা গেলো, হিজাবের আধিক্য (যারা স্বেচ্ছায় পড়ছেন, তাদের প্রতি পুর্ণ সম্মান রেখেই বলছি)। এর বিপরীতে আবার অদ্ভুতুড়ে কান্ড ! আধুনিকতার নামে যে সব পোষাক দেখছি, সেটা আধুনিক কতটুকু জানি না, তবে আবার ঐতিহ্যের সাথে যে একেবারে যায় না, সেটা নিশ্চিত বলতে পারি। নিত্য নতুন ফতোয়াও শুনছি। মিলাদ পড়া ঠিক না, খোদা না বলে আল্লাহ হাফেয বলতে হবে, টাখনুর নীচে কাপড় পড়া সহিহ না ইত্যাদি। কিন্ত হঠাৎ করে এমন কি ঘটলো যে এমন বিশাল পরিবর্তন? ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর জন্য আফগানিস্তানের কিছু মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল।

তখন ছিল স্নায়ু যুদ্ধের সময়। অবশ্যম্ভাবি বলেই পশ্চিমা শক্তিগুলি কম্যনিস্ট বিরোধী বলে, সেই মানুষগুলিকে সব রকম সহযোগিতা দিয়েছিল। তালেবানদের ইমেজের কারণে নতুন প্রজন্মের অনেকেই আফগানদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা পোষন করেন। সত্যটা হলো যে, হাজার দোষের মধ্যেও আফগানিরা প্রচন্ড রকম সাহসি বীর, এবং দেশপ্রেমিক। ইতিহাসে এমন নজির নেই যে কোন বহিঃশক্তি আফগানিস্তানকে পদানত করতে পেরেছে।

স্বার্থ ছাড়া যারা কিছু বোঝে না, তাদের পক্ষ্যে নিঃস্বার্থ সাহায্য আশা করা বৃথা। এজন্য তারা আপন বংশবদ একটি গোষ্ঠি তৈরি করেছিল। যাদের নাম তালেবান। হ্যা ঠিকই শুনছেন। পশ্চিমাদের অঢেল সম্পদ আর সামরিক সাহায্য দিয়ে এই তালেবানদেরই পরবর্তিতে ক্ষমতায় বসতে সাহায্য করেছিল পশ্চিমারা।

তালেবানরা কোন ধরণের ইসলাম পালন করে, জানি না। তবে নারী শিক্ষা যে ইসলাম পরিপন্থি সেটা কোরান হাদিস দিয়ে প্রমান করা সম্ভব না। এটা গেলো শুধু একটা। কলেবর বাড়াতে চাচ্ছি না বলে, বাকিগুলি উহ্য থাক। যেহেতু সেই সময় পাকিস্থানে টাকা উড়ছিল ( পশ্চিমাদের একান্ত বাধ্যগত ও অনুরাগি পাকিস্থানের বিভিন্ন স্থান থেকেই তালেবানরা শক্তিশালি হয়ে উঠেছিল) তো সেই টাকার লোভেই আমাদের দেশেরও কিছু মানুষ সেখানে ছুটে গিয়েছিল।

সত্যি কথা বলতে কি, আমাদের সব সরকারের মধ্যেই মুল শিক্ষাক্ষেত্রে ইসলাম শিক্ষা ব্যাপারটি যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। মুলধারায় ১০০ মার্কের একটি মুখস্থধর্মি বিষয়ই হয়ে রয়েছে ইসলাম। তাই মাদ্রাসা পাশরা (আলিয়া নয় কওমি) পড়ে আছেন অবহেলা অবজ্ঞায়। যারা হয়তো কোরান পড়ার ক্ষেত্রে বিশারদ, কিন্ত কোরানের বাণীকে ছড়িয়ে দিতে ,সামাজিক অবস্থানের দিক দিয়ে সক্ষম নন। যেহেতু অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের একটা সুযোগ ছিল, সেটাকেই কাজে লাগাতে অনেকেই সেদিন পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিলেন জিহাদ করার জন্য।

সেখান থেকেই মুলত অনেক ধারণা বাংলাদেশে বয়ে এনেছিলেন তারা। তালেবানদের সাথে পশ্চিমাদের মধুচন্দ্রিমা ভালোই চলছিল। কিন্তু স্বার্থে আঘাতের কারণে সেই তালেবানরাই আজ পশ্চিমাদের চক্ষুশুল। তবে আমার ধারণা এটা একটা আই ওয়াশ মাত্র। তালেবানদের দোহাই দিয়ে চলছে ইসলামোফোবিয়া।

আফগানিস্তানের পর ইরাক। ইরাকের পর লিবিয়া। এখন সিরিয়ার পালা। মিসরে পালা বদল হলেও বর্তমান সরকার স্বস্তিতে নেই। তুরস্কের সরকার প্রভুর ইচ্ছায় কর্ম করে টিকে রয়েছে।

এ রকম অনেক উদাহারণ দেয়া যায়। মোদ্দা কথা, মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে মোড়লদের প্লান মাফিক সবকিছু ঠিক ঠাক মতই চলছে। যাক সে কথা। তারা পাকিস্থান থেকে যে শুধু অঢেল পয়সা কড়ি এনেছেন, এমন না। সাথে সামরিক ট্রেনিং এমং তালেবানিজমের আমদানি হয়েছে।

এর সাথে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতাও ছিল (বিগত জোট সরকারের আমলে) ফলে ইসলামের নামে আফগানিস্তানের পার্বত্য সংস্কৃতি চালু করার মিশন নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্তরা কাজ শুরু করেছিলেন। দেরিতে হলেও বোধদয় হওয়াতে এদের শীর্ষস্থানিয় সবাইকে ফাসিতে ঝুলতে হয়েছে। নইলে আত্মঘাতি বোমা হামলা কোন মুসলমান সমর্থন করতে পারে না। তাও আবার নিজ দেশে আপন মুসলমান ভাইদের উপরেই। তালেবানদের সাথে পশ্চিমাদের স্বার্থের দন্দ পুজি নিয়েই।

কাস্পিয়ান সাগরের তেল এবং আফগানিস্তানে মাদক ব্যাবসার ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই লংকা কান্ড ঘটে গিয়েছে। কর্পোরেট পুজিবাদ কোন ধর্ম মানে না। যে গোষ্টি এর হোতা, ইনারা অবশ্য একটি ধর্ম মেনে চলেন। যেমন এই গোষ্ঠির সদস্যরা পরস্পরের কাছ থেকে সুদ গ্রহন করেন না। একে অপরের প্রতি পুর্ণ আস্থাশীল এবং বিশ্বাসভাজন।

কেউ কেউকে ঠকানো তো দূরে থাক, বিপদে সবকিছু নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন। তবে তাদের এই আদর্শ অন্য কোন জাতি বা গোষ্ঠির জন্য প্রযোজ্য নয়। ছলে বলে কৌশলে এদের পুজির উত্তর উত্তর বিকাশই এদের একমাত্র উদ্দেশ্য। এজন্য যে কোন উপায় যে যত মানবতা বা নৈতিকতা বিবর্জিতই হোক না কেন, তারা সেটা অবলম্বন করতে একটুও দ্বিধা করেন না। উপরের ছবিটি দেখুন।

না না লজ্জা পাবেন না। আবেগকেও সুশিলতার আড়ালে ঢেকে রাখবেন না। নিজের কাছে সৎ হোন। কোন সমস্যা নেই। এক মাত্র নপুংশক না হলে, ছবির এই মেয়েটিকে দৃস্টি দিয়ে চেটেপুটে খাওয়া খুবই স্বাভাবিক।

গত বিশ বছরে বাংলাদেশে যেমন হিজাবের আধিক্য , তেমনি এই ধরণের পোষাক পড়াদের সংখ্যাও কিন্ত একই সমানুপাতে রয়েছে। বিলবোর্ডগুলি দেখুন। খুব বেশি পার্থক্য পাবেন না। তালেবান শিক্ষায় শিক্ষিতদের দিয়ে হিজাব এবং অন্যান্য ফতোয়ার বিপরীতে আধুনিকতা আর প্রগতিশীলতার নামে পশ্চিমা পুজিবাদ আমাদের দেশে অশ্লিলতা পাচার করেছে। তাই প্রেম শুধু অবাধ যৌনচর্চার নামই না, বরং ভিডিও করে সবাইকে দেখানোও বটে ! গোড়া কিন্ত একটাই।

অর্থাৎ খুব যত্ন করেই একই দেশে দুটি বিপরীত ধর্মী উগ্রবাদি গোষ্ঠি সৃস্টি করা হচ্ছে। যারা এক সময় মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসবে। জাতি হিসাবে আমরা খুবই অসচেতন। আগুন লেগে বাড়ি ছাই হবার পুর্ব মুহুর্তেই আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক দিকটা নাই বা তুললাম।

পুরানো ঢাকায় বা আমাদের গার্মেন্টসে আগুণে পুড়ে অনেক গুলি জীবন ধবংস হয়ে গেলেও সেই রঙের গুদাম বা কর্মিদের নিরাপদ প্রস্থানের পথটুকু কিন্ত আগের অবস্থাতেই আছে। আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রদ্ধাভাজনদের যে গোষ্ঠিটি তালেবানিজমের বিরুদ্ধে সোচ্চার, বাস্তব জীবনে ইনাদের জীবনধারা, সংখ্যা গরিষ্ঠদের ঐতিহ্যের সাথে মেলে না। আবার খোলামেলাদের বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার, তারা আবার প্রকারন্তে তালেবানিজমের সমর্থক। এসব দেখে শুনে সাধারণ মানুষ এই গুরুত্বপুর্ণ পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কথা বলতে দ্বিধায় ভোগেন। কি জানি, পাছে আতেল কিংবা তালেবান খেতাব জুটে।

তবে সংখ্যাগরিষ্টের নাড়ি টিপলে বুঝা যায় যে, ইনারা তালেবানিজমকে যেমন সমর্থন করেন না, তেমনি উগ্র বিজাতিয় সংস্কৃতিকেও আপন করে নেবার বিপক্ষ্যে। সমস্যা হচ্ছে এই সংখ্যাগরিষ্টদের মতামতকে তুলে ধরার জন্য যথাযথ প্লাটফর্মের অভাব। ভাবছেন, শিরোনামের সাথে পোস্টের মিল নেই কেন। মিল আছে। আগেই বলেছি, কর্পোরেট পুজিবাদ ধর্ম মানবতা কিছুই মানে না।

মানে শুধু লাভ। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে পোকা মাকড়ের বংশ নির্মুল করার অন্যতম হাতিয়ার ছিল এই ব্যাঙ। ব্যাঙের কারণেই কিটনাশক তৈরি করা বহুজাতিক কোম্পানিগুলি এদেশে ঢুকতে পারেনি। তাই এই গোষ্ঠি বাংলাদেশের দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে ব্যাঙের ঠ্যাং রফতানির মুলা ঝুলিয়েছিল। দরিদ্র মানুষ, ভাগ্য ফেরানোর তাগিদে যে যেমনভাবে পেরেছে, ব্যাঙ নিধন করেছে।

ব্যাঙের অনুপস্থিতিতে পোকা মাকর নিধনে তাই কৃষককুল বাধ্য হয়েই কিটনাশকের দারস্থ হতে বাধ্য হয়েছিল। আবার উচ্চ ফলনের দোহাই দিয়ে আনুসাঙ্গিক কেমিকেলও বিক্রি করেছিল এই বহুজাতিক কোম্পানিগুলি। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবার কারনে কৃষক থেকে ভোক্তা সবাই কম বেশি ভুক্তভোগি। মাঝখান থেকে লাভের উপর লাভ করে যাচ্ছে পুজিবাদিরা। আমাদের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে প্রশাসন এবং মিডিয়া, সবাইকে কেনা সহজ বলে, এই সমিকরণের বিরুদ্ধে কেউ আওয়াজ তো তুলেইনি, বরং আরো উৎসাহ দিয়েছে।

পুজিবাদ আপন লাভের জন্যই প্রগতিশীলতা আর আধুনিকতার নামে অশ্লিলতা ছড়াচ্ছে, আবার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সফল করার জন্য তালেবানিজমকে বাংলাদেশে থিতু করতে বিনিয়োগ করছে। যখন এই দুই গোষ্ঠি পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়াবে, তখনই ইনারা বানরের মত পিঠাভাগে লিপ্ত হবেন। সত্যি কথা বললে বলতে হয়, এই বৃহৎ খেলায় আমরা শুধু নির্বাক দর্শক হয়েই থাকবো। চেয়ে চেয়ে দেখবো, কিচ্ছু করতে পারবো না। যদি না আবারও জাতিগতভাবে আমরা ৭১ এর মত পরম দেশপ্রেম আর বীরত্বে রুখে না দাড়াই।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।