বিক্ষিপ্ত ভাবনা দুঃখ হয় যখন দেখি অর্ধশত বছরেরও বেশী পুরানো মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামীগকে চালায় কতিপয় পরজীবি, বাম রাজনীতি থেকে উঠে আসা নব্য আওয়ামীলীগ। যারা আওয়ামীলীগে যোগ না দিলে তাদের রাজনীতিই শেষ হয়ে যেত। তারাই আজ আওয়ামীলীগকে হাইজ্যাক করে ফেলেছে - বংগবন্ধুর হাতে গড়া এই দলের এই করুণ পরিনতি কি আমাদের এইভাবেই দেখতে হবে!!!!
বেশ কিছুদিন আগে একটি লিখা পড়েছিলাম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যদি ঠিক ভাবে চলে, বাংলাদেশ ঠিকভাবে চলে। আজ বাংলাদেশ ঠিকভাবে চলছেনা। কারণ, আওয়ামীলীগকে ভুল পথে চালানো হচ্ছে।
ভুলগুলো কোথায় তা তুলে ধরতে আজকের এই প্রয়াস। পাঠকরা অনেকেই হয়ত আমার সাথে একমত হবেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী আওয়ামীলীগের একটি অন্যতম দাবী এবং ওয়াদা, অন্যান্ন ওয়াদাগুলো হলো - দ্রব্যমূল্য কমানো, দূর্নীতি দমন, প্রতিঘরে কমপক্ষে একজনের কাজের নিশ্চয়তা, প্রশাসনকে দলীয়করণ মুক্ত রাখা।
সবকিছুকে চাপিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধাপরাদের বিচারে অচালাবস্হা। আসুন প্রথমেই এই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করি। আমাদের সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীদের মত, আইনমন্ত্রীও কিন্তু ছাত্রলীগ থেকে আসেননি, তার অতীত আওয়ামীলীগেরও নয়, তবে তিনি বেশ বুদ্ধি রাখেন।
প্রতিমন্ত্রিরও অতীত আওয়ামীলিগর নয়, তবে তার বুদ্ধি থেকে লবিং এর জোর বেশী। এই দুইজনেরই মন্ত্রী হওয়ার মূল কারণ, জরুরী সরকারের সময়, তারা জননেত্রী শেখহাসিনার মামলা নিয়ে লড়েছেন যখন অনেকেই ভয়ে ছিলেন।
কেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে সমস্যা তৈরি হল?
বিচার বিভাগে বিভিন্ন নিয়োগে বিগত চার বছরে অনেকটা অঘোষিত দলীয় কোটা সিষ্টেম চালু হয়েছে। আওয়ামীগের ২ জন নিয়োগ হলে, বামদল গুলো থেকে ১ বা ২ জন নিয়োগের প্রতিযোগিতা। আপনারা যদি হাইকোর্টের বিভিন্ন নিয়োগ, বা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) দের নিয়োগ গুলো দেখেন তা হলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে।
এই ট্রাইবুনাল গঠন করার সময়, বামদলগুলোই প্রাধান্য পায় (কারণ আইনমন্ত্রী)। আমি এখানে বাম বলতে জাসদ সহ বাকী বামদের বুঝিয়েছি। পরবর্তীতে ২য় ট্রাইবুনাল গঠন করার সময় কিছুটা ব্যালেন্স করা হয় অধিকাংশ আওয়ামীলীগের থেকে নিয়োগ দিয়ে। ট্রাইবুনালকে নিয়ন্ত্রনে নেয়ার এই সমীকরনের কারনেই সবাইকে অবাক করে দিয়ে আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত ভাল মানের কাউকেই ট্রাইবুনালে যুক্ত করা হয়নি - শুধু খেয়াল করবেন কোথায়কার কোন মালুম হয়ে উঠে প্রসিকিউটরদের নেতা (সে জাসদ থেকে আসা)। অথচ, আওয়ামীলীগের বহু নামী ঊকিল রয়েছেন যাদেরকে ট্রাইবুনালের সাথে যুক্ত করা হয়নি, এমনকি যাদের সাথে পরামর্শও করা হয়নি।
২য় পর্যায়ে, ট্রাইবুনালের কার্যক্রম পরিচালনায় বামদের নিয়ন্ত্রন।
শতাব্দীর অন্যতম চ্যালেন্জ হচ্ছে স্বচ্ছভাবে এই বিচার করা। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে যথাযত লোক নিয়োগ না দিয়ে পুরো বিচার পক্রিয়াই আজ প্রশ্নের সম্মূখীন করে ফেলা হয়েছে। এর গায়ে কালিমা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। যেহেতু ট্রাইবুনালের প্রধান লোকগুলো হচ্ছে বামদের, তারা তাদের বাইরে অন্যকাউকে বিশ্বাস করেনা।
যার কারণে আমরা দেখি ট্রাইবুনাল গঠনের পর আহমেদ জিয়া, রায়হান, বা অন্যবামরা বাহিরে থেকে এই বিচার পক্রিয়া বাস্তবায়নে যুক্ত হতে পরেছে। অথচ দেশ বিদেশে আমার জানামতে ২০ এর অধিক বংগব্ন্ধুর সৈনিক আছেন যারা এতে যুক্ত হতে চান, তাদেরকে সুযোগই দেয়া হয়নি। আমরা সহজেই বুঝতে পারি এই ট্রাইবুনালের পরিনতি কি হবে যখন দেখি রায়হানের মত নবীন ছেলে এই ট্রাইবুনালের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে। যে ছেলে মাত্র মাস্টার্স শেষ করে পিএইচডি করছে, সে যদি এর কল কাঠি নাড়ে তা হলে তো এমন হবেই। বিচাপতি নিজামুল হক নাসিম, জিয়া, এবং রায়হান এরা কেউই বংগবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী নয়।
তারা ট্রাইবুনালকে নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে গিয়ে এক গোপন যোগাযোগ গড়ে তুলে। এ বিষয়টি সম্ভবত তাদের সাথে পরিচিত কারো নজরে আসে। আর ফল যা হবার তাতো আজ সবার কাছেই পরিষ্কার।
আজ এই ব্যার্থতার দায়বার আমাদের সকলকে নিতে হচ্ছে, কিন্তু আমরা কেন নিব। আমি এই বিচারকে পশ্নাতীত করতে না পারার কারণে এবং বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বামদের এই ষড়যন্ত্রের জন্য আইনমন্ত্রীর অপসারন চাই।
আজ আমাদের যাবতীয় প্রত্যাশাকে কলংকিত করার জন্য আইনমন্ত্রী সহ জিয়া, রায়হান গংগদের বিচার হওয়া উচিত। জামাতীরা এখন বিদেশী মিডিয়ার কাছে তাদের দাবী সহজেই খাওয়াতে পারবে। ড: পিয়াস করিম যতার্থই বলেছেন, জামাত যা ৪০ বছরেও পারেনি আজ আমরা তা প্রমান করে দিলাম। এই বাম গুলো সব কাবিল টাইপের। এরা মনে করে ওদের থেকে বুদ্ধিমান আর কেউ নাই।
কুকুরের দল। স্বাধীনতার পর এরা দেশটাকে অস্হিতিশীল করে রেখেছিল যার কারণে বংগবন্ধু ঠিকভাবে কাজ করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত এরা আওয়ামীলীগে ঢুকে পড়ে বংবন্ধুকে দিয়ে বাকশাল চালু করিয়েছে (উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত স্টাইলের সমাজতন্ত্র কায়েম করা)। বংগবন্ধুর নিসংশ হত্যাকান্ডের পর এদের খুজে পাওয়া যায়নি। আজ এরাই আবার আওয়ামীলীগের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।
আজ যদি খেয়াল করে হিসাব করেন আওয়ামীলীগের সব প্রভাবশালী নেতাগুলা বাম থেকে উঠে আসা। আজ প্রয়োজন আওয়ামীলীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নতুন আন্দোলন, বাম মুক্ত আওয়ামীলীগ চাই রাজাকারের বিচার চাই।
এই বামদের সহযোগী হচ্ছে প্রথমআলো। প্রথমআলোর কাজ হচ্ছে বামদেরকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে পূনর্বাসিত করা। আপনি কি আজ পর্যন্ত প্রথমআলোকে দেখেছেন বাম থেকে আসা কোন আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে লিখতে, আমি দেখিনি।
কিন্তু ছাত্রলীগ বা পিউর আওয়ামীলীগকে সাইজ বা কোনঠাসা করার জন্যে তারা সব সময় লেগে আছে।
বর্তমান যুদ্ধাপারাধের বিচারের এই কলংকিত অবস্হাকে কলংকমুক্ত না করে সরকার আবার হঠকারী পথেই হাঠছে। সম্ভবত তা আবার এই বামদের পরামর্শেই। । শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে আজ এই হোক আমাদের অংগীকার - বাম মুক্ত আওয়ামীলীগ চাই, রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ চাই।
(পরবর্তীতে অন্যমন্ত্রনালয় নিয়েও লিখার ইচ্ছা আছে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।