সকাল থেকেই টেনশনে আছে সাকিব আল হাসান। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন আজকের টি২০ ম্যাচটা। যদিও টেনশনের তেমন কিছুই ছিলনা, কারন এর পর একটা বিশাল টেস্ট সিরিজ আছে যেটা কিনা চলবে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য, তারপরও চিন্তার কি কোন শেষ আছে? আজকের ম্যাচটাই মূখ্য। অনেকেই বলছে আজকের ম্যাচটা নাকি বিড়াল মারা ম্যাচ। বলে কি? পাগল নাকি? বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সে, ক্রিকেটের নাড়ি নক্ষত্র হাড়ে হাড়ে জানা তার, বিড়াল মারা কোন ট্যকনিক ক্রিকেটে আছে বলে আজো শোনেনি, অবশ্য শুনবেই বা কিভাবে? এই ধরনের বিড়াল মারা টি২০ তে সাকিবের আজকে অভিষেক হচ্ছে।
তাই সবদিক মিলিয়ে টেনশনে ফোটা ফোটা ঘাম ঝরছে অলরাউন্ডারের। খুব লম্বা একটা নিশ্বাস নিল সাকিব আল হাসান। খুব বেশী নারভাসনেস কাটাতে বড় বড় নিশ্বাস খুব কাজের জিনিস। কিন্তু বড় নিশ্বাসেই কি আর টেনশন কমছে? পিচটার অবস্থা শুনে বড় নিশ্বাসেও কাজ হচ্ছে না। বেকুবগুলো নাকি পিচটা যথাসম্ভব নরম করে রেখেছে, আরে! পাগল নাকি? বিকেএসপিতে ট্রেনিং নেয়ার সময় থেকেই সে জানে পিচ শক্ত করার জন্য কতৃপক্ষ কত কসরৎ করতে হয়, শক্ত মাটি, রোলারের চাপ আরো কত কি।
আর এরা কিনা সেখানে নরম করে রেখেছে? পিচের উপর নাকি গোলাপ আর রজনীগন্ধার পাপড়ী বিছিয়ে রাখা হয়েছে। যাক, গোলাপের পাপড়ী কোন সমস্যাই না, অনেক টুর্নামেন্টের উদ্ভোদনী ম্যাচে সে পিচের উপর এমন ফুল আর পাপড়ী থাকা সত্বেও ভাল পারফর্মেন্স করেছিল। ঠিক সেভাবেই আজকের ম্যাচটা ভালভাবে খেলা চাই। যদিও আত্মীয়-স্বজন, মুরুব্বীরা কেউ ম্যাচের ফলাফল নিয়ে তেমন চিন্তিত নয়, তবে কিছু বিটলা বন্ধু-বান্ধব ম্যাচের রিভিউ শোনার জন্য উত্তেজিত হয়ে আছে। সাকিবের এটা নিয়ে তেমন চিন্তা নেই, দরকার হলে পুরো স্কোর সহ জানিয়ে দেওয়া হবে।
এ আর এমন কি?
মাথায় হ্যালমেট টাইপের ক্যাপ, ঝকমকে নতুন জার্সিটা গায়ে দিয়ে সাকিব আল হাসান ড্রেসিং রুমে বসে আছে, মাঝে একজন এসে জানিয়ে গেল পিচের উপর নাকি শিশির। সাকিব আল হাসান দ্রুত চিন্তা করছে, পিচে শিশির, পিচে শিশির, পিচে শিশির। টসে জিতে আগে কোনটা? প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ট্যকনিক কোনটা কাজে লাগাতে হবে, এটা কোন সাধারন আর দশটা ম্যাচের মত না, বিড়াল মারা টি২০। পরবর্তী টেস্ট ম্যাচের মনোবল অনেকটাই নির্ভর করছে আজকের পারফর্মেন্সের উপর। এসব ভাবতে ভাবতেই কখন জানি ম্যানেজার ভাবী এসে কোমরের নিচে গুতো দিল, 'সময় হইসে, যাও'...... ভাবীর রসালো আদেশ।
ইস বিসিবির টিম ম্যানেজার-কোচ রা যদি এভাবে প্রতিটা ম্যাচেই কোমরের নিচে খোচা দিয়ে রসিয়ে বলত!
ভাবতে ভাবতে প্যভিলিয়ন পার করে কখন যে সে মাঠে এসে পড়েছে খেয়ালই নেই। খট করে দরজা বন্ধ হতেই সম্ভিত ফিরে পেল সাকিব আল হাসান। আরে, সেতো প্রতিপক্ষের ঠিক সামনেই। তবে এন্টি পার্টি খুব মুচড়ে আছে মনে হয়, আরে মুচড়ে তো থাকবেই, বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডারের সামনে কি যে সে দাড়াতে পারে? নার্ভাস তো হতেই হবে কিছুটা। প্রতিপক্ষের নার্ভাসনেস দেখে সাকিবের নার্ভাস কেটে গেল।
কিন্তু এত নার্ভাস হলে চলে, এখনোতো কিছুই শুরু হয়নি, অন্তত টস টা তো হওয়া দরকার। ফ্লাড লাইটের আলো থাকতে থাকতেই টসটা সেরে নেয়া দরকার। নিরবতা ভেঙে গলা খাকাড়ি দিয়ে বলল
সাকিব: কিগো, টসটা কি ফ্লাড লাইটের আলোতেই সারবে? নাকি সেটাও আলো স্বল্পতার পর?
শিশির : টস কুন সমস্যা না, আপনি চাইলে বোলিং - ব্যাটিং যেকোনটা আগে নিতে পারেন
সাকিব : আমি কিন্তু অলরাউন্ডার.............
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।