"QUESTION EVERYTHING"- KARL MARX
রানা প্লাজায় ১১ শতাধিক লাশ — নিশ্চিহ্নপুরে চলে যায় ঠান্ডা-হিমশীতল... নামে-বেনামে-এনামে! একজন বিশ্বজিৎ-জুবায়ের-ত্বকী খুন হয়। ফেলানির লাশ ঝুলানো হয় কাঁটাতারের ভূগোলে। বাংলা ভাই-এরশাদ শিকদার-শামীম ওসমান-হেফাজত-লাদেন-তালেবান তৈরি হয়।
সুন্দরবন-ফুলবাড়ি ধ্বংসের পাঁয়তারা করা হয়। শিক্ষাকে করা হয় মুদিখানার কাঁচামাল।
বিশ্ববিদ্যালয়কে বানানো হয় চৌদ্দগুষ্টির পৈতৃক সম্পত্তি। ইরাক-ইরান-আফগানিস্তান-ফিলিস্তিনে শান্তির নামে ঝড়ানো হয় জীবনের রক্ত। জুয়া-স্মাগলিংয়ের আসরের রসদ জোগাতে আশরাফুল-আসিফ-আমির-আজহারউদ্দিন-ক্রনিয়েদের করা হয় বলির পাঠা।
আরও কতশত ঘটনার ঘনঘটা। সবকিছুরই কারণ অভিন্ন।
সবকিছুই এই কারণের দাসানুদাস! অভিন্নতার সূচকে এই কারণের সম্মানটি 'grand narration'-এর!!!
এটা 'grand narration' — কারণ, “They don't know it, but they are doing it.” (KARL MARX) — 'they'-এর জায়গায় আপনি 'WE' বসিয়ে দেন এবার। বুঝতে পারবেন, কে আসলে একে প্রশ্রয় দিয়ে এই 'grand narration'-এর সম্মান এনে দিয়েছে! কে একে বিন্দু থেকে সিন্ধু হতে দিয়েছে!
একজন উৎপল শুভ্র তো 'বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্ধকার জগত'কে উলঙ্গ করে দেখালেন! কিন্তু সেই 'উৎপল শুভ্র' কোথায় পাব যিনি উৎপল শুভ্রদের 'স্কুপ' মারার সুযোগ করে দেওয়া ব্যবস্থাটাকে উলঙ্গ করে দেখাবেন? যিনি উলঙ্গ করে দেখাবেন আশরাফুলরা কেন এ ফাঁদে পা দেয়?
আশরাফুলকে তো শাস্তি পেতেই হবে! কিন্তু মনে রাখবেন, আশরাফুলরা শিকার মাত্র। শিকারী হওয়ার ক্ষমতা আশারাফুলদের নেই! শিকারী তারা যারা আশরাফুলদের বিচার করেত বসে আছে মসনদে। আশরাফুলদের যে পচা শামুকে পা কাটে সেই পচা শামুকের জন্মদাতা-রক্ষাকর্তা তারা।
তারাই রাষ্ট্র।
তারাই রাষ্ট্রের শক্তিশালী বাহিনীর হর্তাকর্তা। গোয়েন্দা সংস্থা তাদের হাতে। আশরাফুলদের পা তো কাটে পরে, কিন্তু তারা কোথায় থাকে, স্বয়ং 'অন্ধকার জগত'টা যখন সৃষ্টি হয়! তারাই এই দুর্নীতিপরায়ণ নষ্ট-ভ্রষ্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থাটাকে বাঁচিয়ে রাখতে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে।
তারাই পুঁজিকে বানিয়েছে ঈশ্বরহীন ঈশ্বর। বাজারকে বানিয়েছে ঈশ্বরের লীলাখেলার তীর্থতীর।
এদেরই কারও নাম ওবামা-যুক্তরাষ্ট্র। কারও মনমোহন-ভারত। এরাই গডফাদারদের গডফাদার। এরাই 'মহামহিম' রাষ্ট্রপ্রভু। আর এদের চামচামি করতে আছে তৃতীয় বিশ্বের দালাল-ভণ্ড-পরশ্রীকাতর-ভিক্ষাবৃত্তিপটু-দেশ বিকানো ক্ষমতালোভী রাষ্ট্র ক্ষমতাধররা! আশরাফুলদের বিচারের আগে এই দণ্ডমুণ্ডের কর্তাদের বিচার হওয়া উচিত।
আশরাফুলরা নষ্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থার শিকার। রাজনীতি নষ্ট হলে মানুষ নষ্ট হবেই!
তাই, যে খেলা রাজনীতির-রাষ্ট্রনীতির, সেই খেলায় উৎপল শুভ্র-আশরাফুলরা নস্যি। চোখের জলে আবেগের বন্যা বইয়ে দেওয়া মানুষ অবাঞ্ছিত। আমি-আপনি-ওরা ক'জন-আমরা — আমরা সবাই আপামর খেলোয়াড়। উপরে নক্সী কাঁথার মাঠে বসে হেলে দুলে খেলা চালাচ্ছেন 'অলৌকিক' রেফারি!
অভিন্ন সেই 'অলৌকিক' কারণেই ঘটনাবলী একসূত্রে গাথা।
শুধু বহু গায়ে আটানোর কৌশলে পোশাকের রঙ-ঢঙ আর সাইজটাই যা আলাদা! প্রশ্ন করুন— 'অলৌকিক' ব্যবস্থাটা কী? রেফারিটা কে? প্রশ্ন করুন সেই 'মহামহোপাধ্যায়' মাফিয়াটা কে— যে আপনার আবেগ নিয়ে যন্ত্রের মতো খেলছে?
— উত্তর পেলে দেখবেন, আপনার আরও একটি 'grand narration'-এর হাত ধরতে হবে। উপায় নেই! উপায়ান্তর নেই! তাতেই কেবল মুক্তি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।