আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Class 8 Question

আমি গোলাপ খুব পছন্দ করি।

মহৎ ব্যক্তিদের হূদয় থাকে মানবিক গুণাবলিতে পরিপূর্ণ। সহজেই তাঁরা মানুষের প্রিয়ভাজন হয়। অন্যের অঢেল বিত্তবৈভব কিংবা সম্মান-প্রতিপত্তি দেখে তাঁরা মোটেও লালায়িত হয় না, অথচ জগতে যারা খ্যাতির মোহে আবিষ্ট হয়ে অন্যের প্রতি হিংসাত্মক আচরণ করে, নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যেকোনো জঘন্য পাপাচারে লিপ্ত হয়, তারা কখনো মানুষের শ্রদ্ধাভাজন হতে পারে না। প্রেম, করুণা, সহনশীলতা, দয়া ও ভালোবাসার শক্তি নিষ্ঠূর তরবারির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।

প্রশ্ন: ক) কোন প্রবন্ধটি পাঠ করলে নৈতিকতা বিষয়ে সচেতনতার অধিকারী হবে? প্রশ্ন: খ) হাতেম কে? তাঁর পরিচয় দাও। প্রশ্ন: গ) ‘প্রেম, করুণা, সহনশীলতা, দয়া ও ভালোবাসার শক্তি নিষ্ঠুর তরবারির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। ’ কথাটি ব্যাখ্যা করো। প্রশ্ন: ঘ) উদ্দীপকের আলোকে প্রবন্ধটিতে উল্লিখিত দুজন ব্যক্তির চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা করো। উত্তর: ক) মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী রচিত প্রখ্যাত গ্রন্থ ধর্মের কথা থেকে সংকলিত ‘মহত্ত্বের শক্তি’ প্রবন্ধটি পাঠ করলে নৈতিকতা বিষয়ে সচেতনতার অধিকারী হওয়া যাবে।

উত্তর: খ) তৎকালে আরবের ইয়েমেন প্রদেশে একজন অত্যন্ত সহজ-সরল, সাধারণ ব্যক্তি ছিলেন, যাঁর ধনসম্পদ বলতে কিছুই ছিল না অথচ জ্ঞানের প্রতিভায় তিনি ছিলেন অনন্যসাধারণ। সেই মহানুভব ব্যক্তিটিই হলেন হাতেম তায়ী। হাতেম ছিলেন সুদর্শন, সুপুরুষ। জ্ঞান প্রতিভায় তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর কথায় মানুষের হূদয় বিগলিত হতো।

পরকে আপন করার এক অসম্ভব ক্ষমতা ছিল হাতেমের। অনন্যসুলভ, অযাচিত আচরণ দ্বারা তিনি শত্রু-মিত্র সবার মনই জয় করতে পারতেন। নিরাভরণ, নিরহংকার গুণের এ ব্যক্তিটির মহত্ত্ব্বের পরিচয় ফুটে উঠেছে প্রবন্ধটির মধ্যে। স্বীয় বদান্যতা, আতিথেয়তা, উদারতার বলে তিনি আপন শত্রু, ইয়েমেন অধিপতির পাঠানো ঘাতকের কোপানল থেকে নিজেকে রক্ষা করেছেন। ঘাতক তাঁকে হত্যা করার পরিবর্তে তাঁর প্রতি বশ্যতা স্বীকার করে ফিরে এসেছে রাজদরবারে।

এখানেই হাতেমের মহত্ত্ব শক্তির সবচেয়ে বড় পরিচয়টা ফুটে উঠেছে। উত্তর: গ) পৃথিবীতে যুগে যুগে মানুষে মানুষে বিভেদ, হিংসা, ক্ষমতার লোভ—এসব থেকে সংঘটিত হয় বিভিন্ন অপকর্ম। চতুর্দিকে বিরাজ করে বৈরী পরিবেশ। একে অন্যের প্রতি হারিয়ে ফেলে সাধারণ মমত্ববোধটুকু। এর ফলে বেড়ে যায় খুন, হত্যা, হামলা, মারামারি, রাহাজানি ইত্যাদি।

অথচ সুন্দর এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার একমাত্র হাতিয়ার হলো পরস্পরের প্রতি দয়া, মায়া, ভালোবাসা, সহনশীলতা, উদারতা ইত্যাদি প্রদর্শন করা। মানুষের হূদয় জয় করতে হলে প্রয়োজন মহৎ হূদয়ের। তরবারি দিয়ে শত্রুকে আঘাত করা যায়, তার ক্ষমতাকে হরণ করা যায় কিন্তু তার মন জয় করা যায় না। যুদ্ধবিগ্রহ, রক্তপাত ঘটিয়ে কেউ অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করলে সে কখনো প্রজাদের প্রিয়ভাজন হতে পারে না। ফলে বেশি দিন টিকে থাকে না।

অঢেল টাকা-পয়সার বিনিময়ে সুনাম আর খ্যাতি অর্জন করতে চাইলে তা হবে অত্যন্ত বোকামির পরিচয় বরং সাধারণ মানুষের প্রতি সদয় থেকে তাদের সুখ-দুঃখ সুবিধা-অসুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখে প্রকৃত অর্থে কেউ যদি তাদের সেবায় নিজের রাজক্ষমতাকে উৎসর্গ করে, তাহলেই চিরদিন সে সাধারণ মানুষের কাছে প্রকৃত রাজার সম্মানটুকু ধরে রাখতে পারবে। যেকোনো দুর্দিনে সাধারণ প্রজারা তার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত থাকবে। প্রশ্ন: ঘ) উদ্দীপকের আলোকে প্রবন্ধটিতে উল্লিখিত দুজন ব্যক্তির চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা করো। উত্তর: ঘ) লেখক মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী রচিত ধর্মের কথা গ্রন্থ থেকে সংকলিত ‘মহত্ত্বের শক্তি’ প্রবন্ধটির মধ্যে উল্লিখিত হয়েছে দুজন স্বনামধন্য ব্যক্তির জীবনচরিত। যার একজন হলেন আরবের ইয়েমেন প্রদেশের জনৈক নরপতি আর অন্যজন হলেন সে দেশেরই একজন অতিসাধারণ মানুষ হাতেম তায়ী।

উদ্ধৃত অংশটিতে বিপরীতধর্মী দুটি চরিত্রের যে প্রতিফলন দেখানো হয়েছে, আলোচ্য প্রবন্ধটির মধ্যে এরই পরিচয়টুকু সাবলীলভাবে ফুটে উঠেছে। বিশাল রাজ্যের অধিপতি হয়েও ইয়েমেনের অধিপতির মনে সুখ ছিল না। তিনি সব সময় চাইতেন, প্রজারা তাঁকে কুর্নিশ করুক। এ জন্য তিনি সর্বদা রাজভান্ডার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ প্রজাদের বিলিয়ে দিতেন। এমনকি রাজ্যের মধ্যে মহাসাড়ম্বরে ভোজসভার আয়োজন করে সাধারণ প্রজাদের সুস্বাদু খাবার ও প্রচুর বখশিশ দিয়ে খুশি রাখতে চাইতেন।

বিনিময়ে নরপতি তাঁর একক ক্ষমতা ও খ্যাতি জাহির করে রাজ্যের মধ্যে প্রভাব খাটাতে চাইতেন। তিনি ছিলেন ঈর্ষাপরায়ণ ও পরশ্রীকাতর। তাঁর সমকক্ষ বিকল্প কেউ রাজ্যের মধ্যে থাক, এটা তিনি সহ্য করতে পারতেন না। তাই এই নরপতি জনগণের মুখে হাতেমের গুণগান শোনামাত্রই হিংসায় জ্বলে ওঠেন। হাতেমকে হত্যার জন্য তিনি গুপ্তঘাতক প্রেরণ করেন।

অন্যদিকে হাতেম সাধারণ ছিল নির্লোভ, নিরহংকার। তাঁর মহানুভবতা ও উদারতার পরিচয় আপনাতেই ছড়িয়ে পড়েছিল রাজ্যের মধ্যে। অসীম প্রতিভার অধিকারী এই লোকটি খুব সহজেই অন্যের হূদয়ে স্থান করে নিতে পারতেন। হাতেমের প্রশংসা শুনে রুষ্ট নরপতি যখন হাতেম হত্যা ঘাতক প্রেরণ করলেন, তখন সেই ঘাতককেও হাতেম তাঁর উদারতা দিয়ে করুণার বশে আবদ্ধ করে ফেললেন। হাতেমের মহিমার কাছে ঘাতকের তরবারি নিষ্প্রভ হয়ে গেল।

এখানে দুজন ব্যক্তির জীবনচরিতের আলোকে বোঝা যে ক্ষমতার দাপট নয়, মহানুভবতা, উদারতা আর মহত্ত্ব প্রদর্শনই মানবজীবনকে মহিমান্বিত করে। Masudur Rahaman যদি আপনাদের কারো কাছে এরকম কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে দিবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।