আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন মুসলিম ভাইয়েরা জানার চেষ্টা করি বিদআত কি ? বিদআত চেনার উপায়

প সুন্নাতের বিপরীতই হচ্ছে বিদআত। ইমাম রাগেব বিদআত শব্দের অর্থ লিখেছেন : কোনরুপ পূর্ব নমুনা না দেখে এবং অন্য কিছুর অনুসরন না করেই কোনো কাজ নতুনভাবে সৃষ্টি করা। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় বিদআত বলা হয় - ( শরিয়াতে ভিত্তিহীনভাবে নব আবিস্কৃত সকল ইবাদতকেই বিদআত বলা হয়। ) শরিয়তের পরিভাষায় 'বিদআতের' অর্থ হলো: " এমন জিনিসের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত করা যা তিনি অনুমোদন করেন নাই। অথবা বলা যায়, এমন জিনিসের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত করা যার মাধ্যমে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার খোলাফায়ে রাশেদীনগন করেন নাই।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ(সুবঃ ) বলেন :- " ওদের কি এমন কতগুলি মা'বুদ আছে যারা ওদের জন্য বিধান দিয়েছেন এমন দ্বীনের, যার অনুমতি আল্লাহ দেন নি ?" (সুরা শুরা ৪২ : ২১ ) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :- " তোমাদের জন্য আবশ্যক হলো আমার সুন্নাত (তরিকা ) ও আমার খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত ( তরিকা )ধারন করা। তোমরা উহাকে শক্তভাবে ধারন কর এবং তোমাদের মারির দাত দিয়ে আকড়ে ধর। খবরদার ! ইবাদাতের নামে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে তৈরী করা সকল নবউদ্ভাবিত কাজ থেকে বিরত থাক"। ( সহীহ মুসলিম ৪৬০৯, সুনানে ইবনে মাজাহ ৪২, মুসনাদে আহমদ ১৭১৪৫ )। সুতরাং যে সকল ইবাদাত আল্লাহ (সুবঃ ) অনুমোদন করেন নাই এবং যে সকল ইবাদাত রাসুল (সাঃ ) ও তার খোলাফায়ে রাশেদীনগন ইবাদাত আকারে করেন নাই সেগুলাই বিদআত।

চাই তা আল্লাহর নাম ও গুনাবলীর ক্ষেত্রে হোক। আল্লাহ (সুবঃ ) ইরশাদ করেন :- " বল (হে নবী ) আমি আমলের দিক দিয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের কথাবকি তোমাদের বলব ? তারা হচ্ছে এমন লোক যাদের যাবতীয় চেষ্টা সাধনাই দুনিয়ার জীবনে বিভ্রান্ত হয়ে গেছে আর তারা মনে মনে ধারনা করে যে তারা খুবই ভালো কাজ করেছে। ( সুরা কাহাফ ১৮ : ১০৩-১০৪ ) বিদআতপন্থীরা ঠিক এমনি। তারা যে সব কাজ করে আসলে তা আল্লাহর দেওয়া নীতির ভীত্তিতে নয়। তা সত্বেও তারা তাকেই নেক আমল এবং বড় সওয়াবের কাজ বলে মনে করে।

অথচ তা আল্লাহ (সুবঃ ) কর্তৃক অনোমোদিত ও রাসুল (সাঃ ) এর তরিকা অনুযায়ী না হওয়ায় সম্পুর্নভাবে প্রত্যাখ্যাত। হাদিসে বর্ণিত আছে :- " আয়েশা (রাঃ )থেকে বর্নিত, রাসুল (সাঃ ) বলেন : যে আমাদের দ্বীনে নতুন কিছু সংযোজন ও সৃষ্টি করবে যা মূলত আমাদের দ্বীনে নেই তা পরিত্যাজ্য। ( সহিহ বুখরী ২৬৯৭, সহীহ মুসলিম ৪৫৭৯, সুনানে আবু দাউদ ৪৬০৭ ) আল্লাহ (সুবঃ ) স্বীয় রাসুলের মাধ্যমে ইসলামকে পরিপূর্ন করে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে :- " আজকের দিনে তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ন করেদিলাম , তোামদের প্রতি আমার নিয়ামতকে সম্যকভাবে সম্পূর্ন করে দিলাম এবং তোমাদের জণ্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পছ্ন্দ করলাম -মনোনীত করলাম। "।

( সুরা মায়েদা ৫ : ৩ ) এই আয়াত থেকে প্রমান হয় যে দ্বীন- ইসলাম পরিপূর্ন। তাতে নেই কোনো অসম্পূর্নতা, কোনো কিছুর অভাব। না তাতে কোনো জিনিস বৃদ্ধি করা যেতে পারে, না পারা যায় তা থেকে কোনো কিছু বাদ দিতে। বিদআত চেনার উপায় : যে কোনো কিছু পরিমাপের জন্য মাপকাঠি বা স্কেল রয়েছে। তেমনি ইসলামে নতুন কিছু সংযোগ করা যে কোনো বিসয় চেনার মাপকাঠি হলো কুরআন ও সহীহ হাদিস।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে :" কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতোবিরোধ করো তাহলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে প্রত্যার্পন করাও - যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ইমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিনামে উতকৃষ্টতর। " ( সুরা মায়েদা ৪ : ৫৯ )। রাসুল( সাঃ ) বলেন:- আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতক্ষন তোমরা সে দুটা জিনিস আকরে ধরবে ততক্সন পর্যন্ত পথ ভ্রষ্ট হবে না। সে দুটা জিনিস হচ্ছে : আল্লাহ কিতাব ও তার নবীর সুন্নাত"।

( মুয়াত্তায়ে মালেক ১৫৯৪; মিশকাতুল মাসাবীহ ১৮৬ )। সুতরাং বড় আলেম, বুজুর্গ, পীর বাবা, মুরুব্বী যা কিছু করলো বা করতে উপদেশ দিলো আমাদের কাছে আল্লাহর তরফ থেকে যে মাপকাঠি দেওয়া আছে তাতে যাচাই কর দেখবো। যদি তা কোরআন ও সুন্নাতে না পাওয়া যায়, যদি কোনো দলিল থাকে তবে আমরা নিশ্চিত ধরে নিব সেটা বিদআত। কারন আলেম, বুজুর্গ, পীর বাবা, মুরুব্বী যা বলে তা দলিল না। দলিল হলো কোরআন ও সুন্নাহ।

আল্লাহ আমদের সবাইকে দ্বীনের সঠিক পথের সন্ধান দিন। আমিন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.