বাংলায় কথা বলি,বাংলায় লিখন লিখি, বাংলায় চিন্তা করি, বাংলায় স্বপ্ন দেখি। আমার অস্তিত্ব জুড়ে বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ।
গাছ বিধাতার অসামান্য সৃষ্টি। গাছ মহান এক দাতা। দাতা হাতেম তাই আর দাতা হাজী মুহাম্মদ মুহসীনের মতো সে দান করে উদার হস্তে।
প্রতিদান চায় না। সে ফুল দেয়। ফল দেয়। জীবন দিয়ে মানুষের সেবা করে। গাছের প্রথম দান অক্সিজেন।
পৃথিবীর প্রচুর পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড সে তার শরীরে নিয়ে বের করে দেয় বিশুদ্ধ অক্সিজেন। সেই অক্সিজেনে বেঁচে তাকে হাজার হাজার প্রাণী। বিশুদ্ধ অক্সিজেনের জীবন্ত কারখানা হল গাছ। অক্সিজেন ছাড়া গাছ তার দেহের পুরোটাই দিয়ে দেয় মানুষের খেদমতে। তার মৃত্যুর পর তার শরীর চিরে আমরা কাঠ বানাই।
সেই কাঠে হয় আসবাবপত্র, কাগজ সব। বেশীর ভাগই ওষুধের উপাদান আসে গাছ থেকে। তাই মানুষ গাছ ছাড়া বাঁচতে পারে না।
বিরাট বিপুল ব্যয়বহুল অক্সিজেনের একটি কারখানা আমি তৈরী করতে পারব না। তবে অক্সিজেন তৈরীর কারখানা আপনি-আমি ইচ্ছে করলেই স্থাপন করতে পারি।
তাই আসুন, আমরা প্রত্যেকে অন্তত একটি অক্সিজেনের কারখানা স্থাপন করি।
আমরা অনেকেই অকারণেই গাছের পাতা ছিড়ে। ডালপালা ভাঙ্গে। গাছকে অকারণে কষ্ট দেয়। এটা ঠিক নয়।
গাছ কেন কোন প্রাণীকেই কষ্ট দেয়া উচিত। একটি গাছকে মর্যাদার সাথে বেড়ে উঠতে দেয়া উচিত।
আমাদের এখনো অনেক খালি জায়গা আছে যেখানে পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানো সম্ভব। যেমন স্কুলের মাঠ, সরকারী অফিসের প্রাঙ্গণ, হাট-বাজার, বড় বড় রাস্তার ধার এই সব জায়গায় আমরা পরিকল্পিত ভাবে গাছ লাগাতে পারি। গাছ লাগালে আজে বাজে গাছ লাগানো উচিত নয়।
কিছু গাছ আছে যা আমাদের দেশের জন্য উপযোগী নয়। আমাদের পরিবেশের ক্ষতি করে। সেই সব গাছ না লাগানোই উচিত । সম্ভব হলে বেশী করে ফলের গাছ লাগাতে হবে।
শৈশবে আমি যে স্কুলে পড়তাম সেই জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ভবনের সামনে একটি বট গাছ ছিল।
এখনো আছে তবে আগের মতো সেই স্বাস্থ্য নেই গাছটার। সেই বট গাছটির গোড়া আবার সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো ছিল। মাঝে মাঝে ক্লাস শুরুর আগে আর বিরতির সময় ঐ জায়গায় বসতাম। অনেক আরাম লাগত। কারণ গাছ থেকে যেন এসির বাতাস বের হত।
আমার কোন এক অজানা কারণে মনে হত হাইস্কুলে আর বড় বড় হাটের একটা প্রধান উপাদান বট গাছ।
আজ রাতে কিংবা কোন এক অবসর সময়ে একবার চিন্তা করুন তো সারা জীবনে আপনি কতটি গাছ লাগিয়েছেন? আজ আমরা যে সব গাছের ফল খাচ্ছি সেই সব গাছ লাগিয়েছিলেন আমাদের বাপ-দাদারা। আমরা যদি কোন গাছ না লাগাই তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কি খাবে? তারা কি আমাদের উপর রুষ্ট হবে না?
খনা তো তার বচনে বলেই গেছেন- কলা রুয়ে না কেটো পাত/তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।
অর্থাৎ কলা গাছে লাগিয়ে যদি ঠিক মতো যত্ন নেয়া হয় তাতেই ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা হতে পারে অনায়াসেই । তবে যত্ন করতে হবে।
গাছ লাগানোর পর যে বিষয়টি এসে যায় তা হলো গাছের যত্ন। প্রতি বছর জাতীয় বৃক্ষরোপন সপ্তাহে অনেক গাছ লাগানো হয়। কিন্তু এর পরের কাজটি করা হয় না। অর্থাৎ গাছের যত্ন নেয়া হয় না। কথায় বলেঃ যত্ন করিলে রত্ন মিলে।
গাছের মাঝে লুকিয়ে আছে অমূল্য রতন। সেই অমূল্য রতন পেতে আসুন না, আমরা প্রতি বছর কমপক্ষে একটি গাছ লাগাই। তার যত্ন করি।
যদি আমাদের নদীর তীরে প্রচুর গাছ থাকত তাহলে নদীর ভাঙ্গন কম হতে পারত। খালের ধারে যদি গাছ থাকে তাহলে জমির ক্ষয় কম হবে।
অর্থাৎ ভূমি ক্ষয় কমাতে গাছের কোন বিক্লপ নেই। অথচ বেশীর ভাগ মানুষই গাছ লাগানোর ব্যাপারে কোন এক অজ্ঞাত কারণে অতিমাত্রায় উদাসীন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।