আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুতেন খামেনের মমি রহস্য – (২) সোনার মুখোশে ঢাকা ফারাও

A friend is one who takes me for what I am........ তুতেন খামেনের মমি রহস্য – ১ মাটি খুঁড়ে কার্টার প্রথমেই একটি সিঁড়ির সন্ধান পান। ফারাও তুতেন খামেনের নাম খোঁদাই করা একটি দরজায় গিয়ে সিঁড়িটি শেষ হয়েছে। কারনাভান ও কার্টার সিঁড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলেন। খুলে ফেললেন দরজা। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই আরেকটি দরজা তাদের চোখে পড়ল।

দ্বিতীয় দরজাটি পরীক্ষা করে তাদের মনে হলো, অতীতে কোনো এক সময় সেটি একবার খোলা হয়েছিল। তারপর সেটাকে আরও সিল করে দেওয়া হয়। তাদের সন্দেহ হলো, সম্ভবত সেখানে একবার ডাকাতি। অনেক মূল্যবান দ্রব্যই হয়তো লুট হয়েছে। তবুও হতাশ হলেন না তারা।

সমাধির মধ্যে, অর্থাৎ এন্টিচেম্বারের ভেতর তখনো যা কিছু ছিল, তা দিয়ে ফারাও তুতেন খামেন সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানা সম্ভব। এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত ছিলেন। ১৯২২ সালের ২৬ নভেম্বর কার্টার দ্বিতীয় দরজাটির গায়ে একটা ফুটো করে এন্টিচেম্বারটির ভেতরে কী আছে তা দেখার চেষ্টা করলেন। কী দেখলেন তিনি? দেখলেন সোনার পাত দিয়ে মোড়ানো পালঙ্ক, সোনা-রুপার তৈরি একটি সিংহাসন, খাদ্য সংরক্ষণের অনেক বাক্স এবং আরও মূল্যবোন কিছু জিনিসপত্র। সব কিছুই অগোছালা ছিল।

কিন্তু কেন? এর কি কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়? যায় বৈকি। যেমন_ অতীতে সম্ভবত সেখানে লুটতরাজের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু প্রহরীদের সঙ্গে লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে লুটেরারা পালিয়ে যায় এবং তারপর প্রহরীরা কোনোকিছু গোছগাছ না করেই দরজাটি সিল করে দেয়। পরবর্তী দুই মাস কার্টার এন্টিচেম্বারে রক্ষিত ওইসব মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রচুর ছবি তুললেন। কিন্তু শুধু ছবি তুলেই কারনাভান ও কার্টার সন্তুষ্ট হতে পারলেন না।

বহু চেষ্টা করে ১৯২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তারা দরজাটি ভাঙতে সক্ষম হলেন। এন্টিচেম্বারে সোনার তৈরি একটি বড় বাক্স ছিল। তার ভেতর ছিল একই রকম অপেক্ষাকৃত ছোট আরও তিনটি বাক্স। চতুর্থ বাক্সটি ছিল মূলত হলুদ স্ফটিকমণির তৈরি একটি কফিন। কফিনটির ভেতরে একই রকম আরও তিনটি কফিন পাওয়া গেল।

শেষ কফিনটি ছিল সোনার তৈরি এবং তার ওজন ছিল প্রায় ১৩৫ কিলোগ্রাম। চতুর্থ কফিনটির ডালা খুলে প্রত্নতত্ত্ববিদদ্বয় আবিষ্কার করলেন ফারাও তুতেন খামেনের মমিকৃত দেহ। মৃত ফারাওর মাথা ও কাঁধ ঢাকা ছিল একটি চমৎকার স্বর্ণের মুখোশে। তার বুকের উপর পড়ে ছিল কিছু শুকনো ফুল। এ ছাড়াও সম্পূর্ণ সমাধির আশপাশের বিভিন্ন কক্ষে পাওয়া গেল অসংখ্য মহামূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী, যার বেশির ভাগই ছিল স্বর্ণের।

এসব সম্পত্তির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে, এক কথায় বলতে গেলে তুতেন খামেনের সমাধি আবিষ্কারের পর মানুষ রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায়। কারণ তুতেন খামেন ফারাও রাজাদের মধ্যে খুবই অল্পসময় রাজত্ব করেন এবং খুবই অপরিচিত ছিলেন। তার সমাধিতেই যদি এত ধন-সম্পত্তি পাওয়া যায়, তাহলে বড় সমাধিগুলোতে কত সম্পত্তি লুকানো ছিল? বর্তমান যুগে এটি খুবই বড় একটি প্রশ্ন। কিন্তু সেসবের কথা ভেবে লাভ নেই। কারণ চোর-ডাকাতরা বহু আগেই সেসব সম্পদ নিজেদের করে নিয়েছে।

তুতেন খামেন খুবই অপরিচিত ফারাও রাজা ছিলেন বলে চোর-ডাকাতরা তার সমাধি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টাই হয়তো করেনি। এ কারণেই আধুনিক বিশ্বের আবিষ্কৃত একমাত্র অক্ষত সমাধিই হলো তুতেন খামেনের সমাধি। ওই সমাধিতে পাওয়া সব মূল্যবান জিনিসপত্র মিসরের প্রত্নতাত্তি্বক জাদুঘরে রাখা হয়েছে................. (আগামী পর্বে সমাপ্ত)  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।