লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। ধার্মিক, পরমতসহিষ্ণু। এখানে মিথ্যাবাদী শব্দটি একান্ত রাখালের বিশেষণ হিসাবেই নির্দিষ্ট। সংযোজক অব্যয়ের সাহায্যে এর প্রভাব কোনোভাবেই শেখ হাসিনা পর্যন্ত গড়াবে না, তা শুরুতেই বলে রাখছি। কারণ, পাঠককে সতর্ক রাখা লেখকের দায়িত্ব।
উপরন্তু কোনো বাক্যের বা শব্দবন্ধের অর্থই যেন পাঠককে, পাঠকের মনকে বিচ্যূত-বিভ্রান্ত করতে না পারে, সে দায়িত্বও লেখকের ওপরই বর্তায়। তাই এ আগাম সতর্কতা!
স্মরণকালের ভয়াবহ নির্মম মৃত্যুর ঘটনাটি এই সে-দিন নিশ্চিন্তপুরে ঘটে গেল। আর ঠিক ততটাই নিশ্চিন্ত এবং নির্মমভাবে প্রধানমন্ত্রী কোনো রকমের রাখঢাক না করে তদন্তের পূর্বেই বলে দিলেন, এর পেছনে ষড়যন্ত্র কাজ করছে! জানি, ষড়যন্ত্র মানুষই করে, আকাশ থেকে ফেরেশতা বা কল্পজগত থেকে ভুত-প্রেত এসে তা করে না। তবে হ্যাঁ, মর্ত্যজগতে কোনো রকমের ফাঁক-ফোকর তৈরি হলেই কখনো কখনো আকাশের ফেরেশতা বা কল্পজগতের ভুত-প্রেত তা গলিয়ে নিজের কর্ম-সম্পাদন করে। তাই আমাদের সত্যবাদী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারেই তাঁর কাছে বিনীত প্রশ্ন, মর্ত্যজগতের শাসক/ শাসকগোষ্ঠীর অদক্ষতায় কোনো ছিদ্র তৈরি হলে এর জবাব আমরা কার কাছে চাইব?
একজন নারী শ্রমিক অন্য একটি গার্মেন্টসে অগ্নি-সংযোগ করতে গিয়ে হাতে-নাতে ধরা পড়েছে, তা আমরা পত্রিকা পড়ে অবহিত হই।
এ ঘটনাকে অবিশ্বাস করছি না, করার প্রশ্নও আসে না। কারণ, ঐ নারীর বিশ হাজার টাকার খুবই প্রয়োজন ছিল। এ-এলাকায় আবার কাজের খুব অভাব। বিশেষত নারীর কোনো কাজ নেই। গার্মেন্টসে ইদানিং আর কোনো নারীর নিয়োগ হচ্ছে না।
তাই তাকে ষড়যন্ত্রের ‘যন্ত্র’ হয়েই অর্থ-সংগ্রহ করার পথ বেছে নিতে হয়।
না, না, ভুল বলেছি, ও একেবারেই বোকা! তা না হলে কি সাধের গার্মেন্টসে শ্রম-বিনিময় করে জীবন ধারনের কথা ও ভাবতে পারে? ও যেহেতু একটা নিরেট ‘যন্ত্র’, তাই সে তো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ষড়যন্ত্র করেই মাসে হাজার হাজার টাকা কামাই করতে পারত। আর সেভাবেই তো নিজ স্বামীকে রক্ষা করতে পারত। ও এ-এলাকায় নতুন, হুট করেই গার্মেন্টসের আইডি কার্ড হাতে পেয়েছে। আর হুট করেই ষড়যন্ত্রের যন্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করেছে।
তা অবিশ্বাস করতে যাবো কোন দুঃখে?
হ্যাঁ জানি, সে আদালতে নানা স্বীকারোক্তি দেবে। জজ মিয়াও তো দিয়েছিল। পুলিশের হাতে পড়লে, ষড়যন্ত্রের যাতাকলে চাপা পড়লে এদেশের লাউ-কোমড়াও কথা কয়ে ওঠে। আর সে তো ষড়যন্ত্রের ‘যন্ত্র’ একজন সাধারণ নারী, যার আবার কথা বলার ক্ষমতাও আছে। তাই সে স্বীকার করবে, স্বীকারোক্তি দেবে, আমরাও তা শুনবো।
কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরির জন্য এ যন্ত্রে কাজ হবে না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! এর চেয়ে যোগ্য নিরেট কোনো ‘যন্ত্র’ লাগবে, যার যান্ত্রিকতায় সাত-পাঁচ থাকতে পারে; কোনোভাবেই ষটতা বা ষড়তা নয়।
খুব ভয় হয় মাঝে-মাঝে। ষড়যন্ত্রের নানা যন্ত্রণার কথা সপ্তস্বরে শুনতে শুনতে সাধারণ কথা কানে আর বাজে না। বরং এক ধরনের ‘তব্দা’ লেগে আছে। আবার কোনোভাবে কানে লাগলেও মনে আর দাগ কাটে না।
সত্যিই যদি কখনো কোনো ষড়যন্ত্র হয়, তাহলে পঞ্চেন্দ্রিয়ের মানুষজনকে বিশ্বাস করানো খুব কঠিন হবে। অথচ মিথ্যাবাদী রাখালও কিন্তু শেষ পর্যন্ত মিথ্যা বলে নি। বিশ্বাসযোগ্যতার সকল বাতাবরণকে বারবার মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সে নিজেই একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছিল। পরিণাম তো তাকেই ভোগ করতে হয়েছে। তাই যেমন ভয় হয়, তেমন দুঃখও।
আল্লাহ আমাদের সুমতি দান করুন। আমিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।