ছোটকালের বিভিন্ন রচনার মধ্যে অন্যতম,”জীবনের লক্ষ্য” নিয়ে অনেক কিছু লিখেছি। ডাক্তার, ইঞ্জিয়ার কিংবা শিক্ষক (কারণ, অনেক সম্মানজনক পেশা)। কিন্তু এই আধুনিকতার সময়, এই তিনটি পেশা সবচেয়ে সম্মানিত একই সাথে দূষিত। এরা সবাই হারাছে তাদের সেই সম্মানের স্তর (ব্যাতিক্রম প্রযোজ্য)। আজ শুধু শিক্ষকতা নিয়ে কিছু বলি।
তবে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, যদি কারো মনে আঘাত দিলে।
শিক্ষকতার পূর্বের সম্মানজনক স্থানটি এখনও অক্ষত রয়েছে, শুধু যোগ হয়েছে কিছু কলঙ্কময় অধ্যায়। কারণ হিসেবে বলা যায়ঃ
১। পূর্বে অল্প বেতন হবার শর্তেও, সম্মানের আশায় এই শিক্ষকতার পেশা মানুষের নিয়োগ ছিল লক্ষনীয়। কালের বিবর্তনে স্বল্প বেতন কাঠামো একটি সমস্যা হলেও, বর্তমান সময়ে শিক্ষকতা অন্যতম সাফল্যজনক ব্যবসায় পরিনত হয়েছে।
এই ব্যবসায় প্রবর্তিত নতুন কিছু রীতি, যেমনঃ
ক) স্কুল-কলেজের শিক্ষকের টিউশন ছাড়া ভালো ফলাফল স্বপ্ন মাত্র। বিভিন্ন শহর, উপ-শহরগুলোতে এই নিয়ম যেন অলিখিত আইন(ব্যাতিক্রমও লক্ষনীয়)।
খ) যারা টিউশন পড়েনা, শুধু একটি বাহানা দরকার তাদের এই নতুন রীতি বোঝানো জন্য। যেমনঃ একটি অংক যত ভাবেই করা যাক না কেন, শিক্ষক প্রদর্শিত নিয়ম ব্যাতীত অন্য নিয়ম গ্রহনযোগ্য নয়।
গ) সাধারণ ছাত্র(যারা টিউশন পড়ে না) ও তাদের অভিভাবকদের বিভিন্ন ভাষায় ও প্রক্রিয়ায় বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।
যেমনঃ উপস্থিতি নিয়ে ঝামেলা করা, নাম্বার কম পাওয়া, ক্লাশে শিক্ষকের অমনোযোগীতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের বর্তমানে স্কুল-কলেজের শিক্ষকের শিক্ষার মান রেটিং করলে অবস্থা আরো পরিষ্কার হত।
২। স্কুল-কলেজে ঔদাসীন্যতা স্থান অনেক। আমরা সবাই জানি যে, ছাত্র-ছাত্রীরা স্বভাবতই উদাসীন হয়ে থাকে।
কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এখন পিছিয়ে নেই। তাঁরা চমৎকার ক্লাশ নেবার পরেও কেন যে হাদারাম ছাত্র-ছাত্রীগুলো কিছু বুঝে না, কে জানে। আর টিউশন না পড়া অনেক ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অনেক পরে পর্যন্ত টিউশন না পড়ার ফল ভুগতে হয়।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের এক জনৈক মহিলা কলেজে গেইটে ছাত্রীদের লাইন দেখে জানতে চাইলাম, দাঁড়ানো হেতু কি? জবাবটাও সাধারণ, বিগত আট মাস ধরে শিক্ষিকার আঁচল ধরে ঘুরে ফিরে তারা তাদের প্র্যাক্টিকেল খাতায় শিক্ষিকার স্বাক্ষর নিতে পারেনি। সামনে প্র্যাক্টিকেল আরম্ভ হচ্ছে কি করবে বুঝতে পারছে না তারা।
তারা সকলে এইচ-এস-সি পরীক্ষাথী। রোজ সকাল ১১ টা থেকে ২টা পর্যন্ত কড়া রোদে দাঁড়িয়েও তারা স্বাক্ষর নিতে পারে নি।
স্বাক্ষর না করার কারণগুলো হলোঃ
ক) আজ প্রচুর গরম, আজ হবে না।
খ)আজ পরীক্ষার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব আছে।
গ) হাতে ব্যাথা।
ঘ) পায়ে ব্যাথা।
ঙ) খাতা রেখে যাও, স্বাক্ষর দিয়ে দেব (যদিও ৪ মাসেও স্বাক্ষর করতে পারেন নি)।
কারণ হিসেবে ছাত্রীদের বক্তব্য, টিউশন পড়ি নি, ভূল করেছি, তাই কাঁদছি।
৩। শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেক কিছু শেখাতে আসলেও তাদের ব্যবহার নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।
অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে ভাষা ব্যবহার করেন তা তাদের কাছে আশাজনক নয়। তাঁরা নাকি দেশ গড়ার কারিগর। থাক, এ নিয়ে আর কিছু বলবো না।
আর বলতে চাইছি না, কেউ কষ্ট পেলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।