কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :)
জনৈক কর্মকর্তাঃ আপনি ই কি নীলা ?
নীলাঃ জি । ( এই নিয়ে পাঁচবার প্রশ্নটার উত্তর দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে গেছে সে )
জনৈক কর্মকর্তাঃ হুম !
নীলাঃ কেন ? ছবি দেখে কি মনে হয় ?
জনৈক কর্মকর্তাঃ না , ঠিক আছে । ( দেঁতো হাসি দিয়ে )
এই নিয়ে আধাঘণ্টা হয়ে গেছে । এ এখনও আবোল তাবোল প্রশ্নের মধ্যেই আছে । নীলা যথেষ্ট রূপবতী ।
জনৈক কর্মকর্তার লুল সে ভালোই বুঝতে পারছে । তাকে বিস্তর জলযোগ করানো হয়েছে । পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করতে আসা জনৈক কর্মকর্তাদের নাকি জামাই আদর করতে হয় !
নীলার শ্বশুরঃ বাবা , এই নেন , আপনে কষ্ট কইরা আসছেন , আপনেরে কিছু সম্মানি দিলাম ।
(জনৈক কর্মকর্তা কে ৬০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে । এটা বাংলাদেশের অলিখিত পাশ করা আইন ।
পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করতে আসলে এদের দিতে হয় । না হলে এরা ভেরিফিকেশন করে না । )
নির্বিকারভাবে পকেটে টাকাটা রেখে জনৈক কর্মকর্তাঃ এইটাতে কি হবে মুরুব্বী ? বলেন ? এই কতো দৌড়াদৌড়ী আছে না !
নিরুপায় হয়ে তাকে আরও ৫০০ টাকা দেওয়া হল ।
জনৈক কর্মকর্তাঃ আমি কিন্তু ঘুষ খাই না । এটা তেলের খরচ ।
( তার বাইক আছে , সে বাইক নিয়ে এসেছে )
নীলা এবং তার শ্বশুর খুব ভালো করেই জানে , যেটা চাইছে টা না দিলে কি হবে । তাই বললেনঃ না , তা তো ঠিক আছেই ।
এবার জনৈক কর্মকর্তা লোভ পেয়ে গেল । সে অন্য ধান্ধা শুরু করলঃ দেখেন মুরুব্বী , আমার এলাকায় একটা মসজিদ করছি আমারা । ওইটাতেও কিন্তু আপনাকে দান করতে হবে ।
দীন ইসলামের খেদমত বলে কথা ।
কিছুটা বিরক্ত হলেন মুরুব্বী । জনৈক কর্মকর্তার ভাবসাব ভালো ঠেকছে না । তাকে চাপে ফেলে সুযোগ নিচ্ছে । তিনি বললেনঃ এটা তো খুবই ভালো কথা ।
কথ্যা না বাড়িয়ে আরও ৫০০ টাকা তাকে দিয়ে দেওয়া হল । বলা বাহুল্য মুরুব্বী যথেষ্ট সচ্ছল । তাই কথা বাড়াতে চাইলেন না ।
জনৈক কর্মকর্তাঃ ছিঃ ছিঃ ছিঃ । আপনি এটা কি করলেন ।
মাত্র ৫০০ টাকা । এ টাকা আমি নিব না । আপনার সব ছেলেরা বিদেশে থাকে । আপনার এতো বড় বাড়ি । আপনি ১০০০০ টাকার নিচে না দিলে নিব না ।
আপনি একদিন আমার সাথে যাবেন । আমাদের মসজিদে দান করে আসবেন ।
এই পর্যন্ত বলে জনৈক কর্মকর্তা পেট পুরে খেয়ে বসে থেকে ১১০০ টাকা ইনকাম করে আর সম্ভাব্য ইনকামের কথা ভাবতে ভাবতে চলে গেল । আর বলে গেল নীলার প্রবাসী স্বামীকে ( তখন দেশে ছিলেন ) নিয়ে থানায় গিয়ে দেখা করে আসতে ( তখন ওর স্বামী বাসায় ছিল না ) ।
ওরা পরদিন গিয়েছিল ।
এখনও কোন সুরাহা হয় নি । জনৈক কর্মকর্তা বোধয় এখনও সে দানের জন্য অপেক্ষায় আছে । জনৈক কর্মকর্তা শুয়োরের তৈল মুখে মেখে মুখ তৈলাক্ত করে আগডুম বাগডুম বুঝিয়ে তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দিল । তাদেরকে যে ঘুরানো হচ্ছে তারাও বুঝতে পারছে ।
ব্যাক্তিগত মতামতঃ ফোনালাপে আজকে বিষয়টা শুনে প্রচণ্ড রাগ হল ।
আমিও ভেবে দেখলাম , বিদেশে আসার আগে আমাকেও একই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিলো । আমি অবশ্য অল্পতেই ( ৬০০ টাকায় ) পার পেয়ে গিয়েছিলাম । বিষয়টা তখনও জানতাম না । যখন শুনলাম , অবাক হয়েছিলাম । আব্বু বলেছিলেন , এটা দিতে হয় ।
নাহলে সমস্যা হয় !!!! পৃথিবীতে মনে হয় একমাত্র সোনার বাংলাদেশেই এই উদ্ভট প্রথা চালু আছে !
আমি সিওর যারা প্রবাসী , কিংবা পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করিয়েছেন , তারাও একই অভিজ্ঞগতা অর্জন করেছেন ।
আমার প্রশ্ন হলঃ
১) এই অলিখিত চাঁদাবাজি কবে বন্ধ হবে ? সরকারের কেউ কি এবিষয়ে জানেন না ?
-আমি মনে করি অবশ্যই জানেন ।
২) তাহলে ব্যাবস্থা নেন না কেন ?
-এটার উত্তর জানি না ।
৩) তাহলে তারাও কি এই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত ?
-তাইতো মনে হচ্ছে ।
৪) অন ডিউটিতে কোন জনৈক কর্মকর্তা বের হলে , তার ট্রান্সপোর্ট খরচ সরকার দেয় ।
এটা জানা কথা । ওরা অফিসে গিয়ে একটা ফর্মে একটা হিসাব লিখে জমা দিয়ে দেয় । মাস শেষে তা পেয়েও যায় । তাহলে এই কথা বলে টাকা নেয় কেন ?
-এটা নির্ঘাত চাঁদাবাজি ।
৫) এই জনৈক কর্মকর্তা চাঁদাবাজদের কি করা উচিত ?
-এইটার উত্তর আপনারাই দেন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।