কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :)
বান্দরবনের কেওক্রাডংয়ের খুব কাছের জনবসতি পাসিং পাড়াকে বিবেচনা করা হয় দেশের সবচেয়ে উঁচু গ্রাম হিসেবে। কারণ প্রায় ৩২০০ ফুট উচ্চতার কেওক্রাডং এর পরেই প্রায় ৩০৬৫ ফুট উচ্চতায় এই পাসিং পাড়া। আর বাংলাদেশের অন্য কোন পাহাড়েও এত উঁচুতে কোন জনবসতি নেই। প্রায় সারা বছরই মেঘের ভেতরেই থাকে এই পাসিং পাড়ার লোকজন। পাসিং পাড়া থেকে নিচের দিকে নেমে গেলে জাদিপাই পাড়া।
এখান হতে ঘন্টা খানেক নিচের দিকে নামলেই পাওয়া যাবে অবর্ননীয় সুন্দর জাদিপাই জলপ্রপাত। এই নামার পথে পথে পাহাড় চুয়ে নামা পানি গড়িয়ে নামতে নামতে পুরো পথের অনেক অংশকেই বিপদজনকভাবে পিচ্ছিল করে রেখেছে। দুর্গম আর চরম ঝুঁকির পথ শেষে এ যেন অন্য এক পৃথিবী। তাড়া খেয়ে দ্রুত পালাচ্ছে এমন গতিতেই উচু পাহাড় থেকে ঝরে পড়ছে বিশালাকার পানির ঢল। এটি আপনার দেখা কোন ঝর্ণার সাথেই তুলনা চলে না এমন একটা ঝর্ণা।
এক কথায় অসাধারণ।
জাদিপাই ঝর্ণার কোথাও কোন কৃত্রিমতা স্পর্শ করেনি। ঝর্ণার শীতল জল যেখানে পড়ছে সেখানে একটা পুকুরের মতো তৈরি হয়েছে। বড় বড় পাথরের ভেতর দিয়ে কল কল করে ফেনা তুলে নাচতে নাচতে ছুটে যাচ্ছে কোন একটা নদীর সাথে মিলবে বলে। খুব সম্ভবত সাঙ্গু নদীর সাথে।
উচু হতে জাদিপাই ঝর্নার পানি সবুজের আস্তর কেটে গড়িয়ে পড়ছে নিচের পাথরে। পাথরের আঘাতে কুন্ডলী পাকাচ্ছে জলের আভা। চারিপাশে জলের ধোয়াশা। সূর্যের আলো পড়ে তৈরি হচ্ছে রংধনু। দুর্দান্ত যে দৃশ্য।
নিচের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। পুরো ঝর্না দর্শনই একটা বিরাট এডভেঞ্চার। পাহাড়ের কোলে সবুজের আড়ালে আর মেঘের উপরে এমন একটি ঝর্না থাকতে পারে তা নিচের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাই মুশকিল। যারা কেওক্রাডং বেড়াতে যায় তাদের উচিত একবার হলেও জাদিপাই দেখে আসা। এমন বুনো ঝর্না হয়তো আর কোথাও খুজে পাবেন না।
ঝর্না হয়তো পাওয়া যাবে কিন্তু ভূমির এত উপরে মেঘের কোলে ঝড়ে পরছে শত শত গ্যালন স্বচ্ছ জল, যা সত্যিই বিরল।
এখানে আসাটা খুব সহজ নয়। খুবই ঝুকিপূর্ণ আর কষ্টকর। তবে পাহাড় আর ঝর্না জয়ের যে আনন্দ তাও অভাবনীয় আর দুপ্রাপ্য। জয়ের এমন এমন আনন্দ হয়তো বহুদিন আপনি পাবেন না।
তাই সময় থাকলে পাহাড় জয়ের সাথে জয় করে আসুন জাদিপাই এর মত একটি অদম্য আর বুনো ঝর্না।
যেভাবে যেতে হবে
চট্টগ্রাম হতে বান্দরবন, বান্দরবন হতে কাইখ্যংছড়ি। নৌকায় কাইখ্যংছড়ি হতে রুমাবাজার। রুমাবাজার হতে কেওক্রাডং জাদিপাই পাড়া। জাদিপাই পাড়া হতে আবার নিচের দিকে নেমে জাদিপাই পাড়া।
কোথায় থাকবেন কেওক্রাডং এর পাশে কিছু ঘর তুলে হোটেলের মত থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকা। খাওয়ারও ব্যবস্থা আছে। ফোনঃ ০১৫৫৬৫৭৩৭৬৮
জাদিপাই পাড়া
কেওক্রাডং , বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় ।
শেষে রইল কিছু পাহাড়ি বুনোফুলের সিক্ত শুভেচ্ছা
সুত্রঃ ইন্টারনেট ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।