আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওবামার জয় এবং মুসলিমদের আত্মবিশ্লেষণ

দেখা যত ছবি, শোনা যত শব্দ, হৃদয়ের সব উপলব্ধি, আর যত এলোমেলো ভাবনা ওবামা জয়ী হোক বা রমনি তাতে আসলে মুসলিমদের বেসিক কোন চেঞ্জ আসবে না, তবে ধারনা করি যে দুজনের ধ্বংসাত্মকটা ও মানসিকতা ঠিক এক গোছের না। সেই হিসেবে মুসলিমরা মন্দের ভাল বিবেচনা করছে, আমিও করছি। কিন্তু নিজের মনকে প্রশ্ন করি - মন্দের ভাল কি আসলে মন্দেরই আরেকটা চেহারা নয়! কিন্তু তাহলে আবার ভালটা এল কোথা থেকে?! জটিল মনস্তাত্ত্বিক প্রশ্ন। সারা দুনিয়াজুড়ে মুসলিমদের আজ দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা, নির্যাতন, নিপীড়নের এক অভিন্ন চিত্র সবখানে প্রতিফলিত হচ্ছে। এ কারণে এই কঠিন সময়ে এটা কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয় যে, মুসলিমদের সেই বিজয়ী মন মানসিকতা আর নেই, বরং তাদেরকে গ্রাস করেছে একটি বিপরীত পরাজিত ক্ষমাপ্রার্থী মানসিকতা।

আর এটা যুলুম নির্যাতনের একটি সহজাত ও অনিবার্য ফলাফল। যত বেশি আপনি যুলুম নির্যাতনের ভিকটিম হবেন, তত বেশি আপনার মাঝে তৈরি হবে ভিকটিম মানসিকতা বা পরাজিত মানসিকতা, ক্ষমাপ্রার্থী মনোভাব, কিছু হলেই আপনি ভাবতে শুরু করবেন কিভাবে নিজেকে যুলুমের হাত থেকে রক্ষা করবেন, কুফফারদের থেকে নিজের পিঠ বাঁচাতে কি অজুহাত প্রদর্শন করবেন -এই মানসিকতা। এই পরাজিত অজুহাত প্রদর্শনকারী ক্ষমাপ্রার্থী মানসিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপ হচ্ছে, নিজের অবস্থানের উপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা, তা থেকে উত্তরণে অপারগতা প্রকাশ করা এবং দায়িত্ব এড়িয়ে যাবার প্রচেষ্টা । অতিরিক্ত রয়েছে হতাশা ও নিষ্কর্ম মনোভাব এর জন্মলাভ। যাহোক, কথা হল আসলে আমরা এভাবে ভাবছি কেন।

আসলে ভাবনার এই ধরনটা আমাদের কারোর ই নিজের না, আমরা জন্মগতভাবে এমনভাবে ভাবতে সিখিনি। আমাদের পরিবেশ আর পরিস্থিতি এভাবে ভাবতে শিখিয়েছে আমাদের। আর সেই পরিবেশটাও আমাদের ই বানিয়ে নেয়া! কেননা মুসলিমদের দায়িত্ব ছিল করে দেখানোর, কিন্তু আমরা অন্নের দেখানো পথে চলাই নিরাপদ ভেবেছি। আজকে হটাত এক ইমানি উচ্চলম্ফে যুগ যুগান্তরের ঘাটতি আমরা মেটাতে পারব না, তাহলে সমাধান কোথায়? অবশ্যই সুন্নাহ তে যখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের দিকে মনোযোগী হই, আমরা দেখতে পাই যে তিনি এবং তাঁর সাথীরা সম্মুখীন হয়েছিল এরচেয়েও অনেক কঠিন অত্যাচার-নির্যাতনের। এত কিছুর পরেও তারা নিজেদের মানসিকতার পরাজয় ঘটতে দেননি।

বরং, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মাঝে যে মানসিকতার বৃদ্ধি ঘটিয়েছিলেন ও লালন করেছিলেন তাতে তাঁরা শিখেছিলেন ও মনে প্রাণে বিশ্বাস করেছিলেন যে তারাই সেই সকল লোক যারা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করছেন আর জীবন ব্যবস্থা বা সিস্টেম হিসেবে ইসলাম চূড়ান্তভাবে বিজয় ও সফলতা লাভ করবে। তাদের প্রতি হুমকি আর যুলুম যত বেশি কঠিন হতো, তাঁরা তাদের মন মানসিকতাকে তার চেয়েও বেশি ইতিবাচক করে নিতেন। আর এটাই সেই প্রক্রিয়া যাতে আমরা সম্মিলিতভাবে চলতে শুরু করলে বদলানো সম্ভব, তবে এটা কারো একার কাজ না, একটা মুহূর্তের কাজ না, সবার দ্বারা এক চলমান প্রক্রিয়া হবে তা। আল্লাহ্‌ অবশ্যই আমাদের মন্দ থেকে বের করে ভালর দিকে নিয়ে যাবেন। i believe it ... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।