যে মুখ নিয়ত পালায়......। । ঈশপের গল্প তো সবাই পড়েছেন। নীতি শিক্ষা মূলক গল্প। ঈশপ যদি ব্লগার হতেন তাহলে তার গল্প গুলো হত ব্লগ কেন্দ্রিক।
সেই ভাবনা থেকেই এই পোস্ট। গুল্প গুলো কে ব্লগান্তরিত মানে ব্লগ ভার্শনে রুপান্তর করা হয়েছে কিন্তু নীতি শিক্ষা গুলো গল্পের ভাষাতেই দেয়া হয়েছে নিচে যুক্ত করে।
ছাগুচিত্ত
এক ছাগু কে একজন লোক জিজ্ঞাসিল, হে ছাগুরাজ। তুমি তো দেখতে মোটাসোটা। মাথায় শিং ও আছে।
তাহলে কেনু তুমি গদাম দিতে আসা ব্লগারদের ভুই পাও?
ছাগুরাজ উত্তরে বলল, ঠিকই বলেছ। তবে ঘটনা হচ্ছে গদাম দেয়া ব্লগার দেখলেই আমার মনে পালানো প্রবৃত্তি জেগে উঠে। তাই দৌড় দেই।
শিক্ষাঃ যে জন্ম কাপুরুষ তার মনে কোন মতেই সাহস সঞ্চার করা যায় না।
আরো ভালো
দেবতা জিউস প্রেম নিয়ে একটি চমৎকার পোস্ট লেখলেন, প্রমিথিউস লেখলেন চরম মানবিক এক পোস্ট আর এথেনা বাংলা ব্লগ সাহিত্যের বিকাশ নিয়ে গুবেষনা মূলক এক লেখা প্রকাশ করে বসলেন।
তারপর তিন জনই তাদের পোস্টের লিংক নিয়ে গেলেন মডুলাসের কাছে।
মডুলাস জিউসের পোস্ট দেখে বললেন, মহামান্য জিউস এসব তো বাচ্চাদের কথাবার্তা। প্রেম ট্রেম পুঁজিবাদি কুসংস্কার আর আপনি এসব নিয়ে পড়ে আছেন। ছ্যা ছ্যা।
প্রমিথিউসের পোস্ট দেখে মডুলাস বললেন, মানবিক ব্যাপারটা ভালো।
এসব নিয়ে লেখালেখির প্রয়োজন আছে। কিন্তু আসলে সত্যি বলতে কি প্রমিথিউস মানবিকতা বলতে কিছু নেই। তোমার পোস্ট ভালো, তবে এসকল দিক আরেকটু বিস্তারিত ভাবে থাকলে ভালো হত।
এথেনা কে মডুলাস বললেন, ব্লগ সাহিত্যে একটা আপেক্ষিক বিষয়। এসব নিয়ে কথা বলার সময় এখনো আসে নি।
তবে যাই হোক, তোমার লেখার হাত ভালো। পোস্ট টা আরো ভালো হতে পারত।
তিনটা মন্তব্যই জিউস শুনলেন। মডুলাস পুরান ব্লগার বলে তিনি সম্মান করতেন। কিন্তু তার এই হিংসুটে মনোভাবে তিনি রেগে গেলেন।
চিৎকার করে ঘোষনা দিলেন, মডুলাস, অলিম্পাসের ব্লগ কমিউনিটি থেকে তরে উষ্টা দিয়া বের করে দেয়া হল। দূর হ।
শিক্ষাঃ কোন কিছুই এত ভালো নয় যে তার খুত বের করা যাবে না।
পরামর্শের অপচয়
ইস্কুল পড়ুয়া মইনুদ্দিন এক ব্লগারের কাছে এসে বলল ভাই আমি সেলিব্রেটি ব্লগার হব। টিপস দেন।
ব্লগার বললেন, সেলিব্রেটি ব্লগার হয়ে লাভ নেই। শান্তি পাবি না। ভালো ব্লগার হ।
কিন্তু না মৈনুদ্দিনের এক কথা। সে সেলিব্রেটি ব্লগার হবে।
ব্লগার সেলিব্রেটি ব্লগার নীতিতে বিশ্বাস করতেন না। তাই কোন টিপস ও দিলেন না। মইনুদ্দিন কিন্তু থেমে থাকার পাত্র নয়। সে মডু খান নিক নিয়ে ব্লগিং শুরু করল।
প্রথম পোস্ট ই দিল ১৮+ “মধ্যরাতের টিপস- কীভাবে ভালো পারফর্ম করবেন(পরীক্ষিত)-১৮+”
প্রথম পোস্টে অনেক হিট হল।
কারন সেই ব্লগে ১৮+ লিখে খালি পৃষ্টা দিয়ে দিলেও ৪০০/৫০০ হিট পড়ে যেত। প্রথম পোস্ট মডারেটর দের চোখ এড়িয়ে গেল।
মডু খানের উৎসাহ গেল বেড়ে। সে ২য় পোস্ট প্রসব করল – “২১+ কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে ******** করিবেন”
ছবি সহ বর্ননা। পোস্ট চরম হিট।
মন্তব্য বেশীর ভাগই নেগেটিভ পড়তে লাগল। মডারেটর দের চোখ এড়িয়ে নির্বাচিত পাতায় ও স্থান পেল এই পোস্ট। মডু খানের আনন্দ দেখে কে!
এ পোস্টের বিরুদ্ধে আরো পোস্ট আসতে লাগল। নির্বাচিত পাতাতে যাওয়ায় মডুদের সমালোচনাও হচ্ছিল। ব্লগ উত্তাল।
মডারেটর দের ঘুম ভাঙ্গল পরদিন। তারা সাথে সাথেই পোস্ট রিমুভ আর মডুখান নিক কে সুলেমানি ব্যান করলেন। আর নোটিশ জারি করলেন, “ দুক্কিত। নির্বাতিত পাতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে মডারেটর দের কোন আত নেই। সরি।
শিক্ষাঃ সামর্থ্যের প্রতিযোগীতায় অনেকেই বিজ্ঞজনের পরামর্শ না নিয়ে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনে।
স্বভাব
দেবতা জিউসের নির্দেশে প্রমিথিউস ব্লগার এবং চামচিকা তৈরী করলেন। তারপর নিয়ে গেলেন জিউসের সামনে। দেখা গেল চামচিকার সংখ্যা বেশী। জিউস বললেন, কিছু চামচিকা কে ব্লগার বানিয়ে দাও।
প্রমিথিউস তাই করলেন। কিছু চামচিকা কে ব্লগার বানালেন। কিন্তু চামচিকাদের স্বভাব বদলাতে পারলেন না। ব্লগার হয়েও এরা স্বভাবসুলভ ক্যাও ম্যাও করে বেড়াতে লাগল। এরাই পরে ক্যাচাল বাজ ব্লগার হিসেবে পরিচিতি পায়।
শিক্ষাঃ স্বভাব বদলানো বড়ই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
বিড়াল ,সিংহ ও মাকড়শা ব্লগার
একদিন জনাব বিড়াল ব্লগার “আমি আমি আমি” লিখে একটি পোস্ট দিল। এতে শ খানেক কমেন্ট পড়ায় পরদিন দিল পোস্ট “আমি আমি আমি আমি”। এতে পড়ল আরো কিছু কমেন্ট। পরদিন থেকে একটা করে নতুন পোস্ট আস্তে লাগল আর একটা করে আমি র সংখ্যা বাড়তে লাগল।
জনাব সিংহ ব্লগার এতে বিচলিত হন। তিনি দুই দিনের বৈরাগী ভাতেরে কয় রাইস বলে তেড়ে আসলেন। বিলাই তখন আমি আমি নিয়ে ব্যস্ত। সে সিংহ কে তোয়াক্কাই করল না। উলটো আমি আমি বাড়াতে লাগল।
গণিত সাহিত্য অর্থনীতি সব বিষয়েই সে পোস্ট দেয় আমি লাগিয়ে।
যেমন আমির নামতা
আমি * এক এ আমি
আমি দুগোনে দুই আমি
আমি তিনে তিনামি
আমি চারে চারামি ইত্যাদি !
বিলাইয়ের এহেন কর্মকান্ড সমস্ত ব্লগের মাথাব্যথার কারন হয়ে গেল। কারন বিলাই আমি আমি ছাড়া কোন শব্দই বলে না।
এই অবস্থায় মাকড় শা ব্লগার ছিলেন ব্লগের মডারেটর। তিনি দেশ ও দশের স্বার্থে বিড়াল ব্লগার কে ব্যান করতে বাধ্য হলেন।
শিক্ষাঃ অহংকারির পতন এভাবেই হয়।
স্বভাব নষ্টের প্রয়াস
একদিন এক বিখ্যাত দলীয় ব্লগার এক সাধারন ব্লগার্কে দলে টানার চেষ্টায় তার পোস্টে এসে কমেন্ট দিলেন। তারপর সেই ব্লগারকে নিয়ে পোস্ট দিয়ে দিলেন। একেবারে প্রসংশা মূলক পোস্ট।
সাধারন ব্লগার বলল, কি ব্যাপার! হঠাত আমাকে এত খাতির যে! নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে।
সে চোখ কান খোলা রেখে সব বুঝতে শুরু করল।
শিক্ষাঃ হঠাত আদরে বোকাদের ঠকানো চলে, কিন্তু বুদ্ধিমানেরা ঠকে না।
স্বার্থান্বেষী
গ্রীক সাহিত্যে লক্ষ্ণীর মত দেবতা হলেন হার্মাস। এক ফাও ব্লগার একদিন দেবতা হার্মাস নিয়ে একটি পোস্ট দিল। পোস্টের নিচে লিখে দিল এই পোস্টে যে কমেন্ট করবে তার পোস্ট দেবতা হার্মাসের অনুগ্রহে ইস্টিকী হৈবেক!
জনৈক ক ব্লগার এসে জিজ্ঞেস করল, তাহলে তুমি যে হার্মাস নিয়ে পোস্ট দিলে এটা হার্মাসের অনুগ্রহে ইস্টিকী হচ্ছে না ক্যানো?
ফাও ব্লগার অনেক ক্ষন পড়ে রিপ্লাই দিল, না মানে ইয়ে, হার্মাস নিজের প্রসংশা বেশী পছন্দ করেন না কি না তাই......
শিক্ষাঃ স্বার্থান্বেষী রা নিজেদের স্বার্থের জন্য মিথ্যা কথা প্রচার করে বেড়ায়।
একই ঝাঁকের পাখী
তখন পেইড ব্লগার কেনাবেচার যুগ। একেকজন লোক ব্লগ বানান এবং সেই ব্লগে লেখার জন্য ব্লগারস শপ থেকে ব্লগার কিনে আনেন। এরকম ই এক ব্লগ মালিক ব্লগারস শপ থেকে একটি ব্লগার কিনলেন। বিক্রেতাকে বললেন, ভাই আমি একটু একে আমার ব্লগে নিয়ে গিয়ে দেখি কেমন পারফর্ম করে। ভালো নাহলে কিন্তু ফেরত দিব।
বিক্রেতা রাজি হল।
ব্লগ মালিক পেইড ব্লগার কে নিয়ে এসে তার ব্লগে ছেড়ে দিয়ে বললেন, যাও। তোমার পছন্দ মত ব্লগে কমেন্ট কর।
পেইড ব্লগার প্রথমেই গিয়ে সবচেয়ে ক্যাচাল বাজ, ভয়ানক ভন্ড একটার ব্লগে কমেন্ট করল।
ব্লগ মালিক একে নিয়ে গেলেন ব্লগারস শপে।
গিয়ে বললেন, ভাই এটাকে ফেরত নেন। অন্যটা দেখান। এ গিয়ে প্রথমেই ক্যাচালবাজ ভন্ড একটার সাথে গিয়ে মিশেছে। এখন এই বস্তু ক্যামন হবে আমি বুঝে গেছি।
শিক্ষাঃ মানুষ কি ধরনের বন্ধু বান্ধবের সংস্পর্শে থাকে তা থেকে তার চরিত্র বোঝা যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।