Everyone is entitled to my opinion.
আমেরিকান নৌবাহিনীর C-130 বিমান সমুদ্রে DHMO ছড়াচ্ছে।
- মামা!
- হুম... হাতের বইটা থেকে মুখ তুলে তাকালাম। ক্লাস নাইনে পড়া ভাগ্নী দাড়িয়ে আছে। "কিছু বলবে?"
- তুমি DHMO এসিডের কথা জান?
- হ্যা, শুনেছি। এটাকে " Dihydrogen Mono Oxide" বলে।
এটার অন্য আরও নাম আছে। কেন বলত?
- না... আজকে আমার টিচার বলেছে এটা নাকি খুবই খারাপ একটা কেমিকেল। আমেরিকান নৌবাহিনী নাকি এটা নিয়মিত ব্যবহার করে।
- তাই? আর কি বলেছে?
- এটা ভয়ংকর পরিবেশ দূর্যোগের কারণ হতে পারে।
এরপর ও যা বলল তাতে নড়ে চড়ে বসতেই হল।
কোতূহলী হয়ে নিজেই বসে পড়লাম ইন্টারনেটে খোঁজ খবর করার জন্যে।
ডাইহাইড্রজেন মোনো অক্সাইড (DHMO) ছাড়াও এটাকে অন্য আরও বিভিন্ন নামে ডাকা হয় যেমন হাইড্রোজেন হাইড্রক্সাইড, হাইড্রোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড, অথবা শুধু হাইড্রিক এসিড। এটি স্বাদ এবং গন্ধ বিহীন একটি রাসায়নিক যৌগ। এর প্রধান একটি উপাদান হচ্ছে অত্যন্ত বিক্রিয়া প্রবণ হাইড্রক্সাইল মৌল যা কিনা DNA পরিব্যাপ্তি, প্রোটিনের প্রাকৃতিক গুণাবলী নষ্ট, কোষ ঝিল্লি ছেদন সহ আমাদের নিউরোট্রান্সমিটারের গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পরিবর্তন করতে সক্ষ্মম। DHMO এর আনবিক উপাদান সালফিউরিক এসিড, নাইট্রোগ্লিসারিন, এবং ইথানল এলকোহল এর মত দাহ্য, বিস্ফোরক, এবং বিষাক্ত যৌগের মধ্যে পাওয়া যায়।
যদিও আমেরিকান সরকার এবং সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (CDC) ডাইহাইড্রজেন মোনো অক্সাইডকে বিষাক্ত এবং ক্যান্সারে সহায়ক পদার্থ হিসাবে ঘোষণা করেনি তবে DHMO আমাদের জানা অনেক বিষাক্ত পদার্থ, রোগ সৃষ্টিকারী অনুঘটক, পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থের উপাদান হিসাবে পাওয়া যায়। এমনকি এটি অনেক সময় মানুষের জীবন বিনাশের কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মার্কিন গবেষক Patrick K. McCluskey এবং Matthew Kulick এর গবেষণা থেকে দেখা যায় যে গবেষনায় অংশ নেতা ৯০ ভাগ নাগরিকই ডাইহাইড্রজেন মোনো অক্সাইডকে আমেরিকায় তৎক্ষণাৎ নিষিদ্ধ করার পক্ষে পিটিশনে স্বাক্ষর করতে আগ্রহী।
নিচে DHMO এর বেশ কিছু ক্ষতিকারক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলঃ
- এটা গ্রীণহাউস ইফেক্টে হেল্প করে।
- এসিড বৃস্টির একটা প্রধান উপাদান এটা।
- সিভিওয়ার বার্ন এর কারন হতে পারে।
- নিঃশ্বাসের সাথে ফুসফুসে চলে গেলে মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা আছে
- প্রাকৃতিক ভূমি ক্ষয়ে সাহায্য করে।
- ধাতব পদার্থের মরিচা ধরতে এবং অবক্ষয়কে ত্বরান্মিত করে।
- বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যহত ঘটাতে পারে এবং গাড়ির ব্রেকে কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
- মৃত্যুপথযাত্রী ক্যান্সার রোগীর কেটে ফেলা টিউমারে পাওয়া গেছে।
- চামড়ার সংস্পর্শে আসলে এটি লোমকূপকে প্রসারিত করে যা ক্লোরিণ এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থকে চামড়ার মাধ্যমে দেহে প্রবেশে সাহায্য করে।
- উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষের মোট অসুস্থতার ৮০ ভাগের সাথে এটার সম্পর্ক আছে।
এতসব ক্ষতিকারক গুনাবলী সত্বেও ডাইহাইড্রজেন মোনো অক্সাইড অহরহই বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় যেমনঃ
- শিল্প কারখানা গুলিতে দ্রাবক এবং শীতলিকরন পদার্থ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
- নিক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে ব্যবহার করা হয়।
- ক্ষতিকারক স্টাইরোফোম উতপাদনে ব্যবহার করে
- আওনেক সমু অগ্নি নির্বাপক হিসাবে ব্যবহার করা হয়
- বিভিন্ন ধরনের নৃশংস উপায়ে প্রাণী গবেষনায় ব্যবহার করা হয়
- কীটনশক ছড়ানোর কাজে এটি ব্যবহৃত হয়।
এমনকি ফল-মূল শাক সবজি ধোওয়ার পরও সেগুলো পুরোপুরি DHMO দূষিতমুক্ত হয় না।
- জাঙ্ক খাবার সহ বিভিন্ন ধরণের খাবারে প্রায়শই additive হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
- গুয়ান্তোনামো বে কারাগারে মার্কিনিদের বিরুদ্ধে বন্দী নির্যাতনের সময় DHMO ব্যবহার করে বলে প্রমান পাওয়া গেছে।
এইসব পড়ে তো আমার চেয়ার থেকে পড়ে যাওয়ার অবস্থা। এরকম ভয়াবহ একটা রাসায়নিক পদার্থ আর আমরা তার কোন খোজই রাখি না।
আমাদের মিডিয়াগুলো করে কি? অবশ্য মিডিয়ার
কথা বলে আর কি হবে? ওরা ত সব পয়সার দালাল। নিশ্চয়ই পয়সা খেয়ে সবকিছু চেপে গেছে! আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। কিছু একটা করা দরকার। আর কিছু না হলেও সবাই অন্ততঃ পিটিশনটাতে সাইন করতে পারি। কি বলেন? যারা যারা পিটিশনে সাইন করতে চান প্লিজ এই লিঙ্কে ক্লিক করে সাইন করে আসেন ।
পোস্ট অসমাপ্ত ঃ- কাহিনীর আরও কিছু বাকী আছে। সমঝদার পাঠকদের জন্য সেটা বোধহয় ভেঙে বলার কোন প্রয়োজন নেই। আর একটা কথা বলে রাখা দরকার - উপরের তথ্যগুলিতে কোন ভুল নেই।
শেষকথাঃ অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী -- কি বোর্ডে খুর চালাতে সক্ষ্মম যেসব ষড়যন্ত্রতত্ত্ব আবিষ্কারক তাদের প্রকৃতি প্রদত্ত স্বল্প আয়তনের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে নিরন্তর ষড়যন্ত্র খুঁজে বেড়ান তাদের উদ্দেশ্যে।
তথ্যসূত্রঃ http://www.dhmo.org
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।