আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“মালেশিয়ার সব বাঙ্গালীরা অশিক্ষিত” এই উক্তির কারনে সাধারন শ্রমিকদের কাছে লাঞ্চিত হলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব এ কে এম আতিকুর রহমান।

তথ্যপ্রযুক্তিগত সেবা দেওয়ার ও নেওয়ার মানসিকতায উদ্দীপ্ত হউক প্রতিটি সচেতন মানুষ ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হউক তরুন সমাজ ২১/১০/২০১২ইং কুয়ালালামপুরে মার্দেকা স্কয়ারে একটি ব্যাংক কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে অপ্রিতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়। জনাব রাষ্ট্রদূত কথা প্রসংগে বলেন মালেশিয়ার সব বাঙ্গালীরা অশিক্ষিত তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন আগামী ৮ই বা ৯ই নভেম্বর মালেশিয়ার সহিত বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানী বিষয়ক চুক্তি হইবে, সেইক্ষেত্রে সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় যেতে জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা খরচ হইবে। এখন আর শ্রমিকদের বাড়ীর সামনের জমিন ও পুকুর বিক্রি করতে হবে না, সুদে টাকা আনতে হবে না। প্রয়োজনে ব্যাংক লোন দেবে।

তিনি আরো বলেন নিবন্ধিত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে পর্যায়ক্রমে মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। একটি ব্যাংক একজন শ্রমিককে একজন জিম্মাদারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা লোন দিতে আগ্রহী। এই লোনের প্রসংগে তিনি বলেন, ব্যাংকে ২ লক্ষ টাকা লোন পেতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করতে হয় এবং অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। তা হয়তো সঠিক কারন হিসাবে আমরা ধরে নিতে পারি, সমসাময়িক হলমার্ক কেলেংকারী এর বড় উদাহরন হতে পারে। এখন প্রশ্ন হল সামান্য কিছু টাকা ব্যাংকের লোন পেতে যদি এই দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়।

তাহলে, এই নিশ্চয়তা কি তারা সাধারন শ্রমিকদের দিতে পারবেন যে, বিনা সমস্যা এবং বিনা ভোগান্তিতে শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবেন। আমাদের দেশে সরকারী যেকোন কাজে হয়রানী এবং দুর্নীতি হল বাধ্যতামূলক, মালয়েশিয়ায় সরকারিভাবে লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা কোটা অনুসরণ করা হবে। আগ্রহী ব্যক্তিরা নিজ নিজ জেলায় নাম নিবন্ধন করবেন। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে লোক পাঠানো হবে। দালাল, তৃতীয় পক্ষ বা মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধে ব্যক্তিকে সরাসরি এসে নাম নিবন্ধনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে।

সরকারী অফিসের দূর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট। যেহেতু,এখানে নিবন্ধন, বাছাই, জেলাকোটা ও আরো অন্যান্য শর্তাধীন ধাপ রয়েছে, সেহেতু প্রতিটি ধাপে কিছু উৎকোচের সুক্ষ ছোয়ার সুযোগ রয়েছে, তবে এটাও শর্তস্বাপেক্ষে। মালেশীয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশী শ্রমিকদের মুখে শোনা যায় যে, আগে দালালদের ২ বা ২.৫ লক্ষ টাকা দিয়ে মালেশিয়ার আসতে পারছি আর না পারলে দালাল থেকে টাকা আদায় করছি। আর এখন যদি মালেশিয়ায় ৪০হাজার টাকায় আসতে হয় কত টাকা উৎকোচ দিতে হইবে সম্পৃক্ত সরকারী অফিসগুলিকে। উৎকোচ দেয়ার পরে কোন কারনে যদি সে মালেশিয়ায় না আসতে পারে তা হলে যে টাকা উৎকোচ দিয়েছে সেই টাকাতো ফেরত পাওয়া যাবেনা।

পুরো টাকাটাই জলে যাবে। সে ক্ষেত্রেতো পুরাতন পদ্বতিই ভালো। আমাদের সাধারন শ্রমিকদের যদি এই সাধারন সেন্স থাকতে পারে তাহলে আপনারা বড় বড় আমলারা এই শ্রমিকদেরকে কিভাবে গালমন্দ করেন যেখানে সেখানে যা ইচ্ছে তাই বলে। সাধারন শ্রমিকদের প্রশ্ন ছিল.. যেহেতু নিয়োগ কর্তা সব খরচ বহন করবে তাহলে ৪০ হাজার টাকা কেন খরচ হইবে? এই প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান। আপনারা বড় বড় চেয়ারে বসে এসি রুমের ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগিয়ে বড় বড় বুলি আওরান আর সাধারন শ্রমিকদের যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছেন।

আমাদের এই অশিক্ষিত শ্র্রমিকের পাঠানো রেমিট্যান্সে দেশ সমৃদ্বশালী হয়ে উঠছে। আর আপনাদের মত ভদ্র লোকেরা রাজস্বের টাকা লুটেপুটে খাচ্ছেন গুটি কয়েক সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদদের সাহায্য। অনুষ্ঠানের বক্তব্য শেষে যখন রাষ্ট্রদূত ফিরে যাচ্ছিলেন ঠিক সেই মুহুর্তেই সামনের সারি থেকে একজন শ্রমিক বল্ল যে স্যার আমার একটা প্রশ্ন আছে এবং মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে প্রশ্ন করলো স্যার আপনি বল্লেন মালেশিয়ার সব বাঙ্গালীরা অশিক্ষিত আমিতো ১৮বছর পূর্বে মালেশয়িায় এসেছি আমি ততকালীন বিএ পাস, আপন গড়ে সবাইকে এভাবে অশিক্ষত বলে গালমন্দ করতে পারেন না। তখন আমাদের জনাব রাষ্ট্রদূত বললেন এই রকম প্রচুর বিএ পাশ ছেলে রয়েছে যাদের এই শিক্ষার কোন মূল্য নেই এছাড়া পাল্টাপাল্টি আরো অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা কাটাকটি হয়েছে এবং বিশৃঙ্খলার ও হট্রগোল এর সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানের আয়োজোকগন নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী করে আমাদের জনাব রাষ্ট্রদূতকে অনুষ্ঠানস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যান এবং আয়োজকগন সৃষ্ট পরিস্থতির জন্য্ ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

মালেশিয়ার বাংলাদেশ এম্বেসীতে বাংলাদেশীরা যায় সহায়তার জন্য কিন্তু এর বদলে যে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয় তা বলে বোঝানো যাবে না। যেখানে আপনি আপনার এম্বেসীতে পরিচালনা করতে হিমশিস খাচ্ছেন সেখানে সাধারন শ্রমিকদের দোষক্রটি খুজে বেড়াচ্ছেন। তবে আমাদের বাংলাদেশ এম্বেসীর মত এত নোংড়া পরিবেশ বিশ্বের কোথাও আছে কিনা সন্দেহ আছে। যারা সরজমিনে গিয়েছেন প্রত্যেকের একটাই কথা বিদেশে থেকেও কি একটু ও কি নোংড়া পরিবেশ বদলাবেনা? বিগত বেশ কয়েকমাস আগে একজন কর্মচারী হাতেনাতে উৎকোচ গ্রহনের দায়ে চাকুরীচুত্য করা হয়েছিল এটা ছিল দুনীতির বড় উদাহরন। বর্তমানে এম আরপি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রেও জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

আর হাতে লেখা পাসপোর্টের দুনীতির কথাতো কারো অজানা নয়। আজ আপনারা দালাল, গরীবের রক্তচোষা, তৃতীয় পক্ষ বা মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধের কথা বলছেন এটা অবশ্যই আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু যখন দেখি ১০২ রিঙ্গিট এর পাসপোর্ট ডেলিবারী নিতে আরো ২৫ খেকে ৫০রিঙ্গিট উৎকোচ দিতে হয়। আমরা কাকে গরীবের রক্তচোষা বলবো? এখনতো দেখছি মুদ্রার চরিত্রের মত: এক পিঠে আপনারা আর অন্য পিঠে আপনাদের তথাকথিত গরীবের রক্তচোষা!!!! বন্ধ হউক একে অপরের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ির সংস্কৃতি, এবং সৃষ্টি হউক একটি সুন্দর দুনীতি মুক্ত বাংলাদেশের।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।