আমরা জানি একদিন আমরা মরে যাব এই জন্যেই পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে। যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না আমার এ লেখাটি একটি সত্য ঘটনা । আমি নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি । ঘটনাটি খুলে বিল :- আমার ছোট ভাই মোঃ নজরুল ইসলাম,বিদেশ ফেরত একজন যুবক। বিগত ২০০৯ সালে ধার দেনা করে তাকে বাহরাইনে পাঠানো হয়েছিল ।
তবে বাহরাই যাওয়ার পূর্বে সে তার পছন্দের মেয়েটিকে বিয়ে করে গিয়েছিল । বিবাহের ১৫ মাস পর সে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে । মেযের বাবা মা তার দুর্বলার সুযোগ নিয়ে তাকে মেয়ের নামে কিছু সম্পত্তি লিখে দিতে বলিলে সে পরিবারের সকলের অগোচরে প্রথমে একটি ব্ল্যাংক ষ্টাম্পে স্বাক্ষর করে দেয়। আইনগত ভাবে তার কোন মূল্য না থাকায় তারা মেয়ের নামে কিছু সম্পতি লিখে দিতে বলে। ভাইটি আমাদের অগোচরে মেয়েটির নাম গ্রামের বাড়ীতে ৫ ঘন্টা সম্পত্তি লিখে দেয় এবং অতঃপর বিয়ে করে।
তারপর সে বাহরাইন গমন করে। বাহরাইন যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর মেয়েটি পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে । বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে আমরা পারিবারিব ভাবে মেয়ের বাবা মাকে বিষয়টি অবহিত করে। তারা এ ব্যাপারটি আমলেই নেয় নাই। এক পর্যায়ে বিষয়টি আমার ভাইয়ের গোচরীভূত হওয়ায় সে তার বউকে বাহরাইন হতেই মোবাইলের মাধ্যমে সংশোধনের জন্য বলে।
সময় সময় স্বামী হিসেবে স্ত্রীকে যে টুকু শাসন করার প্রয়োজন দুর হতে সে তাই করেছে । এক পর্যায়ে মেয়েটি গত ঈদ উল ফিতরের ৩ দিন পর বাপের বাড়ী গমন করে এবং ভাইয়ের সাথে ফোনের মাধ্যমে বাকবিতন্ডতায় লিপ্ত হয়। এই রুপ দোটানায় পড়ার পর সে গত ০৬/০৯/২০১২ তারিখে বাহরাইন হতে দেশে ফিরে আসে এবং ঢাকায় আমার নিজ বাসায় অবস্থান করে এবং আমাকের বিষয়টি খুলে বলে । আমি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে তার শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের সাথে যোগাযোগ করি এবং জানাই যে, নজরুল ৬/৯/১২ তারিখে দেশে আসিয়াছে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছে। আপনারা আপনাদের মেয়েখক আমাদের গ্রামের বাড়ী পাঠিয়ে দেন ।
কিন্তু তারা এ ব্যাপারে আশানুরুপ সাড়া না দেওয়ায় আমি ছোট ভাইটিকে বললাম যে তারা আমাদের আহবানে সাড়া দিচ্ছেনা। তুমি অপেক্ষা করো । আমি গ্রামের বাড়ীতে আমাদের মুরব্বিদের বিষয়টি জানাই এবং পারিবারিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে বসে এর ব্যবস্থা করতে হবে। তুমি ধৈর্য্য ধারন করে ঢাকায় অবস্থান কর। এই দিকে আমি গ্রামের বাড়ীতে মেয়েদের আত্মীস্বজনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকি এবং মেয়ের মামার বাড়ীর সাথে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হই।
আলোচনার জ্ন্য ১২/৯/১২ তারিখ বিকেল বেলায় মেয়ের মামার বাড়ীতে মুরব্বীদের নিয়ে বসার দিন ঠিক করি। এর মধ্যে ভাইটি তার শাশুড়ীর সাথে যোগাযোগ করে। শাশুড়ি তাকে বলে তুমি ঢাকায় বসে আছো কেন ? তোমার বউকে তুমি এসে নিয়ে যায় । ভাই আমার কথা না শুনে ১২/৯/১২ তারিখ সকালে সরাসরি কুমিল্লাস্থ তার শাশুড়ির বাসায় যায় এবং তার বউকে খোজ করতে থাকে। শাশুড়ি বলে তোমার বউ গ্রামের বাড়ীতে তোমার মামা শ্বশুড়ের বাড়িতে আছে।
এখন আমি নিজেও গ্রামের বাড়িতে যাবো । তুমি এখন চলে যাও ১৩/৯/১২ তারিখ বিকালে মামাদের বাড়ীতে গিয়ে তোমার বউকে নিয়ে তোমাদের বাড়ীতে যাবে। অতঃপর ভাইটি ১২/৯/১২ তারিখ কুমিল্লায় অবস্থান করে ১৩/৯/১২ তারিখ দুপুরে সরল বিশ্বাসে মামা শ্বশুড় বাড়ীতে যায় । ঐ খানেও সে তার বউকে খুজতে থাকে এবং তাদের সাথে বসে কথা বলতে থাকে। ইত্যবসরে তার শ্বাশুড়ি ঐ বাড়ীতে কোর্টের ওয়ারেন্টসহ চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ নিয়ে হাজির হয় এবং ভাইটিকে নারী নির্যাতনের মামলায় ধরিয়ে দেয় ।
এই সংবাদ পাওয়ার পর আমি কর্মস্থল হতে ছুটি নিয়ে সরাসরি থানায় হাজির হয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ বলেন যে, এটি কোর্টের কেইস আমরা বিস্তারিত কিছু বলতে পারবোন। আপনি কোর্টে গিয়ে তাকে জামিনের ব্যবস্থা করেন। থানা কর্তৃপক্ষকে আমি বললাম যে, সে বিদেশ হতে ৬/৯/১২ তারিখে ঢাকায় আসিয়াছে এবং ঢাকা হতে ১৩/৯/১২ তারিখে সরাসরি কুমিল্লা হয়ে মামা শ্বশুড় বাড়ীতে গিয়েছে। সে বিদেশে অবস্থানকালীন কি ভাবে স্ত্রী নির্যাতন করিল ? থানা কর্তৃপক্ষ বলল এটা কোর্টের ব্যাপার আমরা কিছু বলতে পারবোনা। অতঃপর আমি কুমিল্লা কোর্টে গিয়ে প্রয়োজনীয় কেইস হিষ্টরী সংগ্রহ করে অবগত হইয়ে।
তারা বিগত ৯/৯/১২ তারিখে সরাসির কোর্টে মামলা করেছে। নির্যাতনের ঘটনার তারিখ দিযেছে ছেলের বাড়ী ৭/৯/১২ তারিখ। আসামী দিয়েছে আমার বাব/মা এবং তাকে। যাক উকিল ধরে তাকে ঐ দিন জামিন করাইতে পারি নাই । পরবর্তীতে তার জামিনের আবেদন করি।
কিন্তু বিজ্ঞ আদালত তার জামিন না দিয়ে পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করে। এই দিয়ে সে মাত্র ২০ দিনের ছুটি নিয়ে দেশে আসিয়াছে তাকে ২৫/৯/১২ তারিখের মধ্যে বাহরাইনে প্রবেশ করতে হবে। কিন্তু সেতো জেল হাজতে । কি করব কোন উপায় না দেখে গ্রাম্য সালিসে উভয় পক্ষ বসার পর জানতে পারলাম মেয়ে এ ছেলের সংসার করতে ইচ্ছুক নয়। এ দিকে ভাইটি বাহরাইন অবস্থান কালীন মেয়ের নামে তার সমস্ত টাকা পয়সা পাঠিয়েছে।
খোজ নিয়ে জানতে পারলাম ঐ একাউন্ডে ৩ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে । এক দিনক জমিন , ব্ল্যাংক ষ্টাম্প মেযের পক্ষের কাছে সংরক্ষিত। আমি যদি তার জামিনের ব্যবস্থা না করি তাহলে বেদেশ গমন হবে না। ইত্যাদি বিষয় চিন্তা করে গ্রাম্য সালিশে রাজি হয়ে দেন মোহর বাবদ ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে অবশেষে আদালতের মাধ্যমে তাকে গত ১৯/৯/১২ তারিখে জামিন করিয়েছি । আগামী ১/১১/১২ তারিখে আদালত হতে মেয়ের পক্ষ কেইস উঠিয়ে নিবে মর্মে গ্রাম্য সালিশে নির্ধারন করা হয়েছে এবং মেয়েটি চলে গিয়েছে।
অবশ্য জমিন ও ষ্ট্যাম্প ফেরত দনয়া হয়েছে। এই হলো বিদেশে অবস্থানকারী একজন যুবকের নিষ্ঠুর বাস্তবতা । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।