আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুসলমানিত্ব আর বাঙালিত্বের দ্বৈততা।

Miles to go before I sleep..... বাঙাল মধ্যবিত্ত মুসলমানদের মন নিয়া মহাত্মা ছফা লিখেছেন ধর্মগ্রন্থের মত বই, আরো অনেক জ্ঞানী-গুণী মহাপুরুষরা নিশ্চয়ই লিখে থাকবেন। আমার বরং বাঙাল মুসলমানদের, খাঁটি করে বললে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলমানদের মানসিক দ্বৈততার ব্যাপারটাতেই খালি খটকা লাগে। খাঁটি বাঙালি হইতে গিয়া তারা এক সমস্যায় পড়ে, আশরাফ মুসলমান হইতে গিয়া পড়ে আরেক সমস্যায়। খাঁটি বাঙালি হওয়ার তার দ্বিধাদ্বন্ধ বা সমস্যার কথা বলি, কলকাতার ঠাকুরবাড়ি কেন্দ্রিক অভিজাত বাঙালিত্ব চর্চার যে রুপ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর বেশ পরে গড়ে উঠেছে, যা পাকিস্তানি শাসকদের বিরোধিতায় আরো সবলভাবে নিজেকে জানান দিয়েছে, সে রুপ শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালরা ধারণ করতে চায়, তাতে সে কিছুটা হীনন্মন্যতায়ও ভুগে, মনে হয় সে ঠিক নিজের না, অন্যের জিনিস ধারণ করছে, তো সৎমায়ের সৎছেলেকে নিজের ছেলে হিসেবে জাহির করতে চাইলে আপন মায়ের চেয়েও বেশি আদিখ্যেতা দেখানো লাগে, বাঙাল মুসলমানরা তার অ-খাঁটি বাঙালিত্ব ঢাকতে গিয়ে বা হীনন্মন্যতা ঢাকার জন্য কলকাতার বাবু কালচারের বাবুদের চেয়েও বেশি বাবুয়ানা করতে চেষ্টা করে, তাতে যা হয় কলকাতাকেন্দ্রিক বাবুরা নাক সিটকায়, তারা কোন মতেই বাঙাল মুসলমানদেরকে বাঙালি স্বীকৃতি দেয়না, সে পেলেই জিজ্ঞেস করে, "তুমি বাঙালি নাকি মুসলমান?" ওদিকে আশরাফ মুসলমান হওয়ার চেষ্টা তার আছেই, সে তার পূর্বপুরুষ বাগদাদের কোন বংশ থেকে এসেছে সেটা নিয়ে সচেতন থাকতে চায়, বাঙালিত্ব চর্চা করতে গিয়ে ইসলাম হারিয়ে ফেলছে কিনা সে ভয়েও থাকে কিছুটা।কিন্তু সেখানেও তারে আরব মুসলমানরা খাঁটি মুসলমান হিসেবে স্বীকার করতে চায়না, তার গায়ে পৌত্তলিকতার গন্ধ খুঁজে খালি। এই দোনামনাতে পড়ে বাঙাল শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলমানদের ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা, কেউ হয়ত এদিকে এক্সট্রিমে যায়, কেউ অন্যদিকে। আমি বলি তোরা বরং এসব ডিলেমাগিরি বাদ দিয়ে আমার মত নমশুদ্র হ, কুলি-মজুর-মুটে-কৃষক-প্রোলেতারিয়েত হ, গাঁইয়া হ, লুঙ্গিতে ফিরে যা, প্রোলেতারিয়েতরা হাজার বছর ধরে বাঙাল আর মুসলমান দু পরিচয়ই স্বচ্ছন্দে বয়ে চলছে কোন দ্বৈততা ছাড়াই, কোন হীনন্মন্যতা ছাড়াই। তোরা বাঙালি, পশ্চিমা, ইসলামিক, মডারেট, রুচিশীল সব একসাথে বেশি বেশি হতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে জগাখিচুড়ি পাকাচ্ছিস আর হূদা ইস্যু নিয়ে মাথা গরম করছিস। নমশুদ্র হলে অন্যকিছু হওয়ার ঝামেলা থাকেনা, অন্য সবকিছু নমশুদ্র-প্রোলেতারিয়েত পরিচয়ের কাছে বিলীন হয়ে যাবে, তখন তোর একটা মেরুদন্ড থাকবে, স্বাধীন আত্মপরিচয় গড়ে উঠবে, সাম্রাজ্যবাদী কর্পোরেইট বেনিয়াদের সামনে শাভেজের মত খাড়া হয়ে দাড়াতে পারবি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনল না, তারা শুনল ভুট্টো সাহেবের কথা!

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।