আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংকীর্ন ব্যক্তিস্বার্থের কোন্দলে আম এবং ছালা দুইটাই যাচ্ছে..

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি বাংলাদেশের গনতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় আবারো অশনিসংকেত দেখা যাচ্ছে। অগনতান্ত্রিক শক্তি আবারো নিজেদেরকে সংগঠিত করছে। যদি এই অবস্থা চলে - অর্থাৎ বিবাদমান দুইটা পরাশক্তি নিজেদের মাঝে সমযোতায় আসতে ব্যর্থ হয় - তবে আবারো বাংলাদেশে আরেকটা অগনতান্ত্রিক শাসন দেখার জন্যে সবাইকে তৈরী হতে হবে। এই শাসন ১/১১ থেকে আর নির্মম এবং দীর্ঘতর হবে বলাই বাহুল্য। ১/১১ এর মুল ভিকটিম ছিলো রাজনীতিবিদরাই।

ব্যবসায়ীদের কাউকে কাউকে ধরে আই ওয়াশ দেওয়া হলেও - প্রকৃত পক্ষে তা ছিলো সম্পদের হাতবদল। যারা ক্ষমতায় ছিলো সেই সময় তারা প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়ে গেছে শুধুমাত্র ভয়ভীতি দেখিয়ে চেক সই করিয়েই। অন্যদিকে সামরিক-বেসামরিক আমলাদের মাঝ থেকে হাতে গোনা দুইচারজন ছাড়া সবাই ছিলো নিরাপদ। শুধুমাত্র তিতাসের কিছুটা নাড়াচাড়া হলেও বাকী সকল প্রতিষ্ঠানে আন্ডারগ্রাউন্ড ডিলের মাঝ দিয়ে দূর্নীতি বিরোধী অভিযানের সমাপ্তি ঘটেছিলো। অন্যদিকে অপ্রস্তুত দুদককে শিখন্ডী বানিয়ে নেপোরা দই মেরে দিয়েছিলো।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে - এতো বড় নির্যাতন আর অপমানের থেকেও রাজনীতিবিদরা নিজেদের সংশোধনের জন্যে কোন শিক্ষা নেননি। সরকারী দল শুরুতে দূর্নীতি থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করলেও দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান নিতে ব্যর্থতার কারনে আমরা দেখছি সোনালী ব্যাংক বা সড়ক বিভাগের থেকে দূর্নীতির বিড়াল না শুধু পুরো রয়েল বেঙ্গল টাইগার বের হচ্ছে। অন্যদিক রাজনৈতিক সমযোতার দিকে এরা কোন ভাবে সফল হতে পারেনি। আর বিরোধী দল শুরু থেকেই অগনতান্ত্রিক পথকেই বেছে নিয়েছে - সংসদ সদস্যপদ টিকিয়ে রাখা ছাড়া নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে সংসদকে অকার্যকর করে ফেলেছে। সরকারের ভুল এবং ব্যর্থতার বিপরীতে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনার মাঝেই নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে।

আর দূর্নীতির বিরুদ্ধে বিরোধীদলে সমালোচনাগুলো নৈতিক মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে - কারন দূর্নীতিতে তাদেরও যথেষ্ঠ ভয়ঙ্কর রেকর্ড মানুষ ভুলতে পারেনি। কার কতটুকু ব্যর্থতা সেই বিষয়টি একাডেমিক এবং গবেষকদের উপর ছেড়ে দিয়ে মোটাদাগে বলা যায় - বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হয়েছে আবারো। তারা গনতন্ত্রকে কার্যকর করতে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থকে বিসর্জন দিতে পারেনি। অথবা বলা যায় জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার অভাবে এরা পুরোনো রেসিপিতেই রান্নায় ব্যস্ত ছিলো এবং আশা করছে জনগন হয়তো তাদের উপর আবারো আস্থা রাখবে। এদিকে যে শক্তি ১/১১ এর পিছনে আর্কিটেকচারের ভুমিকায় ছিলো - তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে।

ড. কামাল হোসেনকে খুবই সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। ডেইলি স্টার-প্রথম আলো গ্রুপ যথারীতি সক্রিয় - অন্যদিকে টিআইবি অন্ভুদ পদ্ধতিতে জরীপ করে রাজনীতিবিদদের বিষয়ে ঢালাও অনাস্থা তৈরী করছে - কুটনীতিকদের দৌড়ঝাপ অনেক বেড়ে গেছে। আর স্টানবাই হিসাবে উত্তরপরাড়া তো রয়েছেই। এর মাঝে দুইটা বিবাদমান রাজনৈতিক শিবিরের ভিতরেও তৃতীয় শক্তির প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকারী দলের ভিতরে ভিন্নমতের না একদল রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে - আর বিরোধী দলের ভিতরের থেকে একদল দলকে বিভ্রান্ত করছে - এরা বিরোধীদলের কর্মকান্ডকে জনগনের সামনে মিস্টিরিয়াস করে তুলছে যাতে তাদের প্রতিও জনগনের কোন আস্থা তৈরী হতে না পরে।

সবকিছু বিবেচনা করে বলা যায় - দুই দলের কোন্দলের কারনে রাজনীতিকরা আবারো তাদের অবস্থান হারাবে। গনতন্ত্র ভেকেশানে যাবে - লং টার্ম ভেকেশানে এবং একটা অগনতান্ত্রিক সরকার আসবে - যারা দেশের মৌলিক চরিত্র পরিবর্তনের চেষ্টা করবে। তবে এখনও সময় আছে রাজনীতিকরা যদি রাজনীতির মুল শক্তি হিসাবে জনগনের কথা বলা শুরু করে - জনগনকে আস্থায় নিতে সচেষ্ট হয় এবং বিবাদমান বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে মিমাংশা করে একটা শান্তিপূর্ন নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারে - তবে তৃতীয় শক্তি কোন অজুহাত খুঁজে পেতে ব্যর্থ হবে এবং দেশের গনতান্ত্রিক ধারা অব্যহত থাকবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।