নিজের ভাবনা অন্যকে জানাতে ভালো লাগে। স্রোতের বিপরীতে দাড়িয়েঁ লেখা বেশ বিপদজনক। এটা আমি বুঝেছি গত বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপ ক্রিকেট নিয়ে লেখতে গিয়ে। কতিপয় বাম বন্ধুসহ ক্রিকেট উন্মাদনায় সকলে যখন স্রোতে গা ভাসিয়েছিল, আমি আমি প্রকৃত সত্যটা তুলে ধরতে চেয়েছিলাম মাত্র। বলতে চেয়ে ছিলাম এই কর্পোরেট দুনিয়াই খেলা এখন স্রেফ বিনোদনের জায়গায় দাড়িয়েঁ নেই, পরিণত হয়েছে বহুজাতিক সংস্কৃকিতির অংশে।
মানুষের নানা ক্ষোভ-বিক্ষোভ থেকে জনগণের দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখার জন্য বহুজাতিক কোম্পানির সহযোগিতায় রাষ্ট্র এই খেলাগুলোর আয়োজন করে। মনে পড়ছে এশিয়াকাপের ফইনালে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে হারার পর সাকিব আল হাসানের কাদোঁ কাঁদো ছবি ছেপে একটা দৈনিক লেখেছিল, ওদের দেশ প্রেম নিয়ে আর কোন সন্দেহ নেই। সন্দেহ নেই তবে প্রশ্ন আছে, আমি এমন অনেকেই বাঙ্গালীকে জানি যারা বিশ্বকাপ ফুটবলে প্রিয় দল ব্রাজিল কিংবা আজেন্টটিনার পরাজয়ে কাদেঁছে, এমন কথাও শুনেছি কারো কারো হার্টফেল করেছে। এখন ওই দৈনিকের কাছে আমরা প্রশ্ন রাখতে পারি এটাকে আমরা কী প্রেম বলবো? অথচ বাস্তব সত্য হচ্ছে চলমান বিশ্বব্যবস্থায় সব জনপ্রিয় ক্রিড়াবীদেই আদপে বহুজাতিক কোম্পানির পণ্য বইকি অন্যকিছু নয়। ভাবলে হতভাগ হয়ে যায় এক এক জন ক্রিড়াবিদের মাসিক আয় দেখে।
য়্যুরোপিয় ফুটবল লীগের অনেক খেলোয়ার আছেন যাদের মাসিক আয় আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের একলক্ষ মানুষের বাষিক গড় আইয়ের সমান। বহুজাতিক কোম্পানির আয়োজিত টি২০ খেলার জন্য ক্যারাবিয়ান অনেক ক্রিকেটার নাকি বোর্ডের সাথে চুক্তি পর্যন্ত করছে না। কী ভাবে করবে! বিশাল অর্থের হাত ছানি আর চরম ভোগ এই দুইয়ের মাঝে পড়ে দেশপ্রেম নামক অনুভূতিটা কত আগেই মরে গেছে! অথচ এর বিপরীত একটা তথ্য আমার কাছে আছে। সক্রটিস, বোদ্ধারা বলেন পেলে উত্তর যুগে শ্রেষ্ঠ ফুটবল প্রতিভা। চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে পাস করে ফুটবল খেলাকেই নিয়েছিলেন পেশা হিসেবে।
খেলা থেকে অবসর নিয়ে বিলিয় বিলিয় ডলার হাত ছানিকে উপেক্ষা করে কোচিং ক্যারিয়ারে না গিয়ে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম। পত্রিকায় কলাম লেখে সমাজতন্ত্রের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। লেখেছেন, রাজনীতি অর্থনীতি, নিয়ে। শেষ কোচিং ক্যারিয়ারে আসলেন, না, য়্যুরোপিয় লীগের বিলিয়ন ডলারের কোচার হয়ে নয়। মাত্র ৩০ ডলার বেতনের কিউবা জাতীয় দলের কোচার হয়ে।
কিউবার কোচ হতে চাওয়ার কারণ সম্পর্কে তার কাছে জানতে চায়লে, তিনি বলেছিলেন, আমি যে সম্যবাদের স্বপ্ন দেখি কিউবা হচ্ছে সেই পথে চলমান বিশ্বের একমাত্র জাতি। আর্দশের জন্য এতবড় ত্যাগ এই কর্পোরেট বিশ্বে সত্যিই বিরল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।