আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণিতের জয়যাত্রা

ছোটবেলায় ‘গণিত’ নিয়ে বসলে সবারই তো গায়ে জ্বর চলে আসার অবস্থা হতো, তাই না! স্কুলে গণিতকে ভয় পায় না এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা নিতান্তই হাতে গোনা। কিন্তু এর মধ্যেও এমন কিছু অসাধারণ শিক্ষার্থী আছে, যারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারা দিন গণিত নিয়েই পড়ে থাকে, গণিতই তাদের সব। খুশির কথা হলো, একসময় যে বিষয়টা নিয়ে সবার মধ্যে অসম্ভব ভয় আর উৎকণ্ঠা কাজ করত, বাংলাদেশে গণিত অলিম্পিয়াড শুরু হওয়ার কারণে অনেক ছেলেমেয়েই গণিতে নিজেদের বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমরা পেয়েও যাচ্ছি নাজিয়া চৌধুরী, সামিন রিয়াসাত, তারিক আদনান ও ধনঞ্জয় বিশ্বসের মতো গণিত প্রতিভাদের। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বাংলাদেশের মুখকে আরও একবার বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল করার গুরুদায়িত্ব পালন করল এমনই আরও কজন।


এবারের এশিয়া-প্যাসিফিক গণিত অলিম্পিয়াডে (এপিএমও) অংশ নিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অর্জন করেছে বিরাট সাফল্য। ঢাকা কলেজের সৌরভ দাস পেয়েছে রৌপ্যপদক। আর ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে আনন্দমোহন কলেজের (ময়মনসিংহ) দুই শিক্ষার্থী জাহিদুল হাসান ও ফাহিম ফেরদৌস, ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের আদিব হাসান, কুমিল্লার ইস্পাহনী পাবলিক স্কুল ও কলেজের নাদিমুল আবরার, ঢাকা কলেজের নূর মোহাম্মদ শফিউল্লাহ ও খুলনার সরকারি এম এম কলেজের তাহমিদ হাসান। বিশেষ সম্মাননা লাভ করে নটর ডেম কলেজের এহসানুল কবির, সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের সৌমিত্র দাস ও সিরাজগঞ্জ বিএল হাইস্কুলের সাজিদ আখতার। এদের সবার সাফল্যের মিলিত যোগফলে ৩৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৬তম স্থান লাভ করে।


নিজ নিজ দেশে বসেই প্রতিযোগীরা অংশ নিতে পারে এ প্রতিযোগিতায়। এবার ৩৪টি দেশের প্রতিযোগীদের নিয়ে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। চার ঘণ্টাব্যাপী পরীক্ষায় পাঁচটি প্রশ্নের বা ভালোভাবে বললে অঙ্কের সমাধান করতে হয়। প্রতিটি অঙ্কে ৭ করে মোট ৩৫ নম্বরের ওপর সম্পন্ন হয় প্রতিযোগিতাটি। সৌরভ ২১-এর বেশি নম্বর পেয়ে রৌপ্যপদক পাওয়ার গৌরব অর্জন করে।

আর যারা ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে, তাদের নম্বর ১৪ বা তার বেশি।
২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ এই প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছে এবং সেই সঙ্গে প্র্রতিবছরই সাফল্যের মুকুটে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন পালক।
গণিতকে ভয় না করে বরং জয় করার এই যে মূলমন্ত্রটি, এটাই এসব খুদে গণিতবিদের সাফল্যের চাবিকাঠি। যুক্তরাষ্ট্র, চীন অথবা রাশিয়ার মতো দেশগুলো, যারা অনেক বছর আগে থেকেই খুব আটঘাট বেঁধে এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে যাচ্ছে, খুব কম সময়ের মধ্যেই আমাদের গণিতবিদেরা তাদের চমকে দিয়েছে।
এ সাফল্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, ‘আমাদের খুদে গণিতবিদেরা ধারাবাহিকভাবে ভালো করে চলেছে।

তাদের এই সাফল্য আমাদের স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে জুলাইয়ে কলম্বিয়ায় অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পয়াডে ছয়জনের পরিবর্তে আমাদের চারজনের দল পাঠাতে হচ্ছে। গণিতের এই সাফল্য ধরে রাখতে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতার বিকল্প নেই। ’
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এপিএমওর স্থানীয় আয়োজক হিসেবে কাজ করেছে। এ আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লি. ও ব্যবস্থাপনায় ছিল প্রথম আলো।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।