আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“মোস্ট ওয়েলকাম” Review

You never get a 2nd chance to make your 1st impression... আমি বাংলাদেশ এর সুপ্রসিদ্ধ একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র। বিগত বেশ কিছুদিন ধরে সবার মুখে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছায়াছবি “মোস্ট ওয়েলকাম” সম্পর্কে অনেক কিছু শুনছিলাম... ছবির প্রধান চরিত্র অর্থাৎ নায়ক অনন্ত জলিল এর ইংরেজি ডায়ালগ-গুলি নাকি অত্যন্ত হাস্যকর। তাই আজ দুপুর এ যখন একটু সময় পেলাম, বহুদিন পর সিনেমা হল এ গিয়ে একটি বাংলা ছবি দেখতে মনস্থির করলাম। উদ্দেশ্য বন্ধুদের বলা কথাগুলির সত্যতা যাচাই করে আসি নিজ চোখে, আর সেই সাথে একটু বিনোদন ও যদি পাওয়া যায়, তবে ক্ষতি কি তাতে? যথারীতি নির্দিষ্ট সময়ে যখন সিনেমা শুরু হল, তাকিয়ে দেখলাম যে পুরো হল এর চার ভাগের এক ভাগ ও দর্শক নেই। এইসব নিয়ে চিন্তা না করে আমি ছবিতে মন দিলাম...এবং শুরুতেই অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম ছবির কারিগরি মান নিয়ন্ত্রণ এর জন্য প্রযোজক বেশ ভালই টাকা খরচ করেছেন।

ছবিটিতে অনেকগুলো জিনিস যেমন আমাকে মুগ্ধ করেছে, তেমনি অবাক ও হয়েছি অনেকগুলো নতুন ধারার সূচনা দেখে। হয়তবা এসব অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে, কিন্তু যেহেতু আমি বাংলা ছবির নিয়মিত দর্শক নই, তাই হয়ত আমার কাছে এসব নতুন বলে মনে হয়েছে। আমি আমার নিজের মত করে জতটা সম্ভব গুছিয়ে বলার চেষ্টা করব। 1. প্রথমেই আসি ছবির মূল প্লট বা কাহিনী বা গল্প, যেটাই বলিনা কেন, একটু হলেও সচরাচর গল্পের থেকে আলাদা ছিল। ছবির নায়ক দুর্নীতি দমন কমিশন এর একজন মেজিস্ত্রেত যে কিনা শুরু থেকেই ঋণখেলাপি নামক শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান এ নামে।

আমার কাছে গল্পের এই দিকটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় লেগেছে। 2. দুর্নীতিবাজ অসৎ ধনীদের সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার গল্প অনেক পুরাতন হলেও এই ছবিতে সেই এক ই গল্প পুনরাবৃত্তি হয়েছে ঠিক ই, কিন্তু একটি নতুন আঙ্গিক এ। 3. কিছুদিন আগে ও যে ধরনের বাংলা ছবির গল্প ছিল... নায়ক অথবা নায়িকা একে অপরের প্রেম এ পাগল, তাদের উদ্ভট প্রেম নিবেদন এবং সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক নাচ-গান। যদি ও নাচ-গান প্রেম নিবেদন সব এ ছিল এই ছবিতে, কিন্তু আমার সেইগুলিকে উদ্ভট বলে মনে হয়নি। কেননা, ছবির গল্পের সাথে সেগুলোকে প্রাসঙ্গিক ই মনে হয়েছে।

এবার কিছু মন্তব্য মিস্টার অনন্ত জলিল সম্পর্কে, যার অভিনয় দেখার জন্য আমার আজকের এই সিনেমা দেখতে যাওয়া। 1. নায়ক অনন্ত সম্পর্কে সবার যে কমন মন্তব্য, উনার উচ্চারণগত দুর্বলতা, সেটা বাংলা হউক, অথবা ইংরেজি। উনি যদি তার পরবর্তী ছবিগুলিতে নিজ কণ্ঠ ব্যাবহার না করে অন্য কাউকে দিয়ে ডাবিং করান, তবে খুব সহজেই তার এই ত্রুটি দূর করা সম্ভব। এটি অবশ্যই কোন অন্যায় কাজ হবেনা, কেননা “শিলা” রূপি যেই ক্যাটরিনা কাইফ কে আমরা চিনি, তার সব হিন্দি ডায়লগ গুলিই যে অন্য কাউকে দিয়ে করানো...কেননা তিনি হিন্দিতে খুব ই দুর্বল, এটা আমরা মোটামুটি সকলেই জানি। 2. ছবিতে ভারতীয় নায়িকা স্নেহা উল্লাল এর উপস্থিতি সত্যি ই প্রমান করে প্রযোজক হিসেবে ও নায়ক অনন্ত জলিল প্রশংসার দাবিদার।

ইতিপূর্বে কোলকাতার কিছু নায়িকা ছাড়া বাংলা ছবিতে হিন্দি ছবির নায়িকাদের উপস্থিতি (???)... অন্তত আমি মনে করতে পারছি না। 3. ছবির গানগুলো অত্যন্ত ভালো লেগেছে... হলে গিয়েছিলাম বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় আমি ও যেন অনন্ত’র বলা কিছু ভুল ইংরেজি শব্দ বলে মজা করতে পারি, তার জন্য নিজের ডিকশনারিটাকে ডেভেলপ করতে, কিন্তু ফিরে এলাম অত্যন্ত কিছু সুন্দর অনুভুতি নিয়ে... বাংলাদেশ এ এখন ভালো মানের ছবি হচ্ছে... আরও ভালো হবে... সেইজন্য দরকার সুধু আমাদের সকলের কিছু ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমি বলছিনা চলেন সবাই কাল থেকেই হলে গিয়ে সিনেমা দেখা শুরু করব, কিন্তু প্রথমিকভাবে... হলে না গিয়েও অন্তত আমরা আমাদের এই ধারনাটুকু তো পাল্টাতে পারি যে... বাংলা সিনেমা মানেই বস্তা পচা কোন কাহিনীর সাথে কিছু মানুষের উদ্ভট নাচানাচি নয়...  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.