আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেলফোনের অপব্যবহারঃ সন্তানের হাতে সেলফোন দেয়ার সঠিক সময় নির্বাচনে উদ্বিঘ্ন অভিবাবক

আমি সত্য জানতে চাই বর্তমান সময়ে সেলফোন এখন অতিপ্রয়োজনীয় একটি যোগাযোগ মাধ্যম। নানা প্রয়োজনে ছোট বড়, ধনী দরিদ্র এবং নানা পেশার মানুষ নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে সেলফোনের উপর। তবে উপকারিতার পাশাপাশি রয়েছে এর কিছু অপকারী দিকও। সেলফোনের যথার্থ ব্যবহার ও অপব্যবহারের রোধে সতর্কহবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্কদের সেলফোন ব্যবহারে সতর্কতার চেয়ে শিশু বা অপ্রাপ্ত বয়স্কদের সেলফোন ব্যবহারে বেশী গুরুত্ব দেবার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

এ কারণেই সন্তানদের হাতে সেলফোন তুলে দেয়ার সঠিক সময় বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খান বেশির ভাগ পিতা-মাতা। এ ছাড়া এর অপকারী দিক থেকে সন্তানকে কীভাবে রক্ষা করা যায় তাও তাদের ভাবনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। (Dr. Wendy Sue Swanson) বিষয়টি নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন সিয়াটল চিলড্রেন হসপিটালের শিশুবিদ উইন্ডে সুয়ে সোয়ানসন (Dr. Wendy Sue Swanson)। অনেক পিতা-মাতার সঙ্গে এটি নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। জেনেছেন মজার কিছু তথ্যও।

তার ভাষায়, ‘অনেক পিতা-মাতাই আমাকে জানান তাদের সন্তানদের প্রিয় খেলার একটি— সেলফোন কানের কাছে নিয়ে কথা বলার অভিনয় করা। চারপাশে সেলফোনের ব্যবহার দেখতে দেখতে তাদের মাথার মধ্যে এমনিতেই সেলফোনের কথা ঢুকে যায়। ’ একটা সময় আসে যখন পিতা-মাতারা চিন্তা করতে শুরু করেন, ঠিক কোন বয়সে তাদের সন্তানের হাতে সেলফোন তুলে দেয়া যায়। তবে ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেলফোনের অপব্যবহার আপনার শিশুকে বিপথে নিয়ে যেতে পারে।

এ ব্যাপারটি প্রাপ্তবয়স্কদের মুভি বা বইয়ের মতো নয় যে, এর কোনো নিদির্ষ্ট আইন আছে। অনেকেই বিশ্বাস করেন, বাচ্চাদের শোবার ঘরে টিভি দেয়া উচিত নয়। যদি তাই হয়, তবে বাচ্চাদের সেলফোন ব্যবহার করাও উচিত নয় বলে মনে করেন সোয়ানসন। স্নায়ুতন্ত্রবিষয়ক গবেষণায় দেখা যায়, শিশু ও কিশোরদের মস্তিস্ক স্মার্টফোন ব্যবহারে যথেষ্ট উপযোগী নয়। সোয়ানসন বলেন, 'আমি পরামর্শ দেব— আপনার শিশুর বয়স ১১-১৩ বছর হলে আপনি তার হাতে সেলফোন তুলে দিতে পারেন।

’ তার মতে, শিশুর ১১-১৩ বছর বয়স তাদের হাতে সেলফোন তুলে দেয়ার উপযুক্ত সময়। ২০০৯ সালে একটি জরিপে জানা যায়, বিশ্বের অনেক জায়গায় ১৩ বছর হলেই শিশুরা একটি করে স্মার্টফোনের মালিক হয়। সেলফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রায়ই দেখা যায় শিশুরা বড়দের স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। কিন্তু সেলফোনের সঙ্গে স্মার্টফোনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে পার্থক্যটা রয়েছে, তা মেনে নিয়ে সবার সেলফোন ব্যবহার করা উচিত।

প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত যেসব বাচ্চা আইফোন ব্যবহার করে, তাদের ফোনের সেটিংসে গিয়ে সীমাবদ্ধ ফিচারগুলো যাচাই করে তা নিয়ন্ত্রণে আনা। সোয়ানসন বলেন, ‘আমরা শিশুদের জন্য একটি বড় অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বিস্ময়কর প্রযুক্তি। আরেকটি বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, ইচ্ছা করলেই এ প্রযুক্তিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। ’ সেলফোন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও খুব সহজ।

অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক ফোনগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তৈরি। তাই অভিভাবকরা সহজেই এ ফোনগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক ফোনগুলোয় প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপসসহ বিভিন্ন অ্যাপস পাওয়া যায়, যা দিয়ে সহজে আপনি আপনার সন্তানের ফোন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইন নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান যেমন— নরটন ও ক্যাসপারিস্কি বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। যেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার শিশুর সেলফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

’ উইন্ডে সুয়ে সোয়ানসন আরো বলেন, ‘প্রত্যেক অভিভাবকের স্মার্টফোনের প্রযুক্তির ব্যাপারে জ্ঞান থাকা উচিত। যদি শিশুরা তাদের পিতা-মাতার চেয়ে বেশি শিখে যায়, তবে তাদের জন্য এটি ক্ষতিকারক। প্রতিটি স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও ট্যাবলেটের ক্ষেত্রে সুব্যবস্থা নেয়া উচিত। সুতরাং আপনার সন্তানের জন্য, তাদের নিরাপ্তার জন্য সেলফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার রোধে সতর্ক হোন, এখনই! সূত্রঃ The New York Times লিংকঃ সন্তানের হাতে সেলফোন দেয়ার সঠিক সময়  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।