https://www.facebook.com/tanvir.mh ব্যাঙ কি শমসের স্যারের বংশধর নাকি?
হইবার পারে শমসেরের সর্দি কেন, কোন ধরনের চুলকানির অসুখও কখনও হইলোনা কোনদিন।
একটা দিন ও হালা ক্লাস মিস দেয়না।
“ব্যাঙটার ওজন ৫ সের
নাম তার শমসের
জোরছে বল শমসের।
আরও জোরে………..
শমসের
শমসের স্যার ক্লাস শুরু হওয়ার আগে তাকে নিয়ে ক্লাস রুমে তুমুল হইহুল্লুর চলে।
তিনি গণিত পড়ান স্কুলে।
বয়স তার ৬০ এর কাছাকাছি। হাতে সবসময় একটা বেত নিয়ে ঘুরেন। নিজের পায়ে আস্তে আস্তে মারতে মারতে বেত নিয়ে হাটেন। যেদিন ছাত্রদের মারতে মন চায় সেদিন তিনি সামান্য অজুহাতে মার দিবেনই। আর পরীক্ষার খাতায় তিনি নাম্বার দেন উত্তর মিলছে কিনা তা দেখে।
এত বড় বড় অংক দেখার সময় তার নেই। ছাত্রদের কাছে তিনি এক আতঙ্কের নাম।
ঐ ঐ স্যার আসতেছে......
শমসের স্যার আজ পরীক্ষার খাতা দিবেন।
অমিত কে ডাক দিয়ে সামনে নিলেন।
কিরে ৪ পৃস্টা খরচ করে কেউ এই অংকটা করতে পারেনাই আর তুই এক লাইন এই শেষ করে দিলি?
তুই কি আমার লগে মশকরা করছ?খালি উত্তর লেখছছ কেন?
স্যার আপনি এত কষ্ট করে এত বড় অংক দেখবেন না তাই উত্তর লেইখা দিয়া দিছি।
আমি মনে মনে অংক কইরা নিছিলাম।
ওরে আইছে মনের মানুষ। ঐ অদৃশ্য চেয়ার এ যা। তারপর তরে পিডা দিমু।
অদৃশ্য চেয়ার হল স্যারের একটা আনকমন শাস্তি।
চেয়ার ছাড়া বসে থাকতে হবে ২ হাত সামনে দিয়ে।
পিছনের চেয়ারে স্যারের চোখ যেতেই দেখে এক ছেলে সানগ্লাস পড়ে আছে।
দৌড়ে তার কাছে গেলো।
ঐ তুই কোন এলাকার আজম খান রে?
বলেই কয়েকটা বারি দিয়ে দিলো।
স্যার স্যার।
আমার চোখ উঠছে।
ঐ ঐ আমার দিকে তাকাবিনা।
বেঞ্চটা উল্টা করে পিছনের দিকে তাকিয়ে বসে থাক। ভুলেও আমার দিকে তাকাবিনা।
যার চোখ উঠে আর সর্দি লাগে তাকে স্যার দেখতেই পারেনা।
পরীক্ষার হলে এই ধরনের রোগী দেখলে স্যার তার পাশেও যেতো না। তাই ইচ্ছা করেই অনেকে রুমাল আর সানগ্লাস ব্যবহার করতো নকল করার জন্য।
শমসের স্যার খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে হোস্টেলের ছাত্রদের সাথে পিটি করে থাকেন।
হোস্টেলের সব রুমে গিয়ে সবাইকে ঘুম থেকে তুলেন বেত দিয়ে মাইর দিয়ে।
সবাই লুকিং গ্লাস লাগায় গাড়িতে কিন্তু হোস্টেলের জানালায় ও লুকিং গ্লাস লাগাতে হয়েছে শমসেরের হাত থেকে বাচার জন্য।
কেউ যদি লুকিং গ্লাসে দেখতে পারে স্যার আসছে তাহলে অন্তত মাইর খাওয়ার হাত থেকে বেচে যাওয়া যায়।
একদিন হোস্টেলের শ্যামল ঘুম থেকে উঠেই না। স্যার তার উপর তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তবু বলে স্যার উঠতাম না।
মাইরেন না স্যার।
কি কইলি তুই?
তারপর আরও জোরে তার তাণ্ডব অব্যহত থাকে।
শ্যামল না পেরে আন্ডারওয়ার পরা অবস্থাতেই দৌড় দেয়।
সেদিন স্যার ও হাসছিল।
আরে শেমইল্লা তুই আগে কইবিনা তোর শরীরে কাপড় নাই?
নাকে বই চেপে ধরে তিনি ক্লাস করিয়ে যান সব সময়।
চকের উচ্ছিষ্ট কখনই তিনি সহ্য করতে পারেন না।
ফকির যদি তার কাছে ভিক্ষা চায় তার একটাই উত্তর “আমি টাকা পাবো কই আপনারে ২ টা অংক করাইয়া দিতে পারবো”।
ফকিরও সয়তান গালি দিতে দিতে তার থেকে চলে যায়।
বৃহস্পতিবার আসলেই ক্লাসে গান কবিতা আর বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করতে হয়।
শমসের স্যার এর ক্লাসে মান্নাদের গান ছাড়া অন্য কেউ কিছু গাইলে তার পশচাদ্দেশে স্যারের বেত্রাঘাত পরবেই।
কি কইলি তুই?
“তু চিজ বারি হে মাস্ত মাস্ত” মান্না দের গান?
হারামজাদা কোথাকার।
স্কুলের পুরাতন ছাত্ররা যখন স্কুলে আসে স্যারের সাথে খুব হেসে খেলে কথা বলে ব্যাপারটা কোন ভাবেই বুঝেনা বর্তমান ছাত্ররা।
এই শমসেরে সাথে মিষ্টি মুখে কথা বলার কি আছে। আমরা তো স্কুল থেকে বের হলেই মাইর দিতে চাইবো এই ৫ সের ব্যাঙ শমসের কে।
একদিন হটাত স্যারের স্কুলে আসা বন্ধ।
সবাই খুব খুশি।
কিন্তু কয়েকদিন পর জানতে পারলো স্যার খুব অসুস্থ।
আগের মত চলাফেরা করতে পারেনা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে হোস্টেলে আসেনা সবার ঘুম ভাঙ্গাতে। এখন সবাই আগে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকে তবু স্যার আসেনা।
ক্লাস রুমে আগের মত মজা হয়না কারণ স্যার এখন আর স্কুলে আসেনা।
তখন সবাই বুঝতে পারে কেন পুরাতন ছাত্ররা স্যারকে এতটা ভালোবাসে।
স্যার এত খারাপ হলেও স্যারের কথা খুব মনে পড়ে সবার। স্যারের বেত্রাঘাত আজ স্যার এর কাছ থেকে চেয়েও পাওয়া যায়না।
তানভীর মাহমুদুল হাসান
২/১০/২০১২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।