আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টর্চার সেন্টার-লজ্জার কি পরিনাম????????

আমি কখনো যায়নি জলে,কখনো ভাসিনি নীলে,কখনো রাখিনি চোখ ডানা মেলা গাঙচিলে আপনি জানেন কি পৃথিবীর ৮০% মানুষের কাছে এটা জীবনের কোন না কোন সময় টর্চার সেন্টার হিসেবে দেখা গিয়েছে। বাদ দেই পৃথিবীর কথা আমাদের দেশে প্রতি ৫ জনে ১ জন এই জিনিসকে টর্চার সেন্টার হিসেবে জানে- আসুন দেখে নেই কেন ? আমরা বাঙালীরা মানুষ হিসেবে খুবই সহনশীল। এর পরিচয় আমরা সবচেয়ে বেশী দেই ডাক্তারের কাছে যাবার ক্ষেত্রে। বিশেষ করে মহিলারা তো এ বিষয়ে ভীষন পটু। সকালে বা দিনের যে কোন সময়ে বাথরুম করতে যেয়ে যদি টের পান ভিষন ব্যাথা বা রক্ত যাচ্ছে তবে আর কাউকে বলবেন না নিজে নিজে ব্যাথা সারাবার চেস্টা করবেন বা ব্যাথানাশক ওষুধ খাবেন।

কিন্তু জানবেন না নিজেকে কি ভয়ন্কর পরিনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন- এনাল ফিশার- মলদ্বারের এই রোগের উপসর্গ শুরু হয় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে......। ১-২ দিন পর দেখা যায় টাটকা রক্ত যাচ্ছে সাথে প্রচন্ড ব্যাথা। সাধারনত পায়খানার পরে টাটকা রক্ত যায় যা টয়লেট পেপারে দেখা যায়। পায়খানার পর অনেকক্ষন টনটনে ব্যাথা থাকে। ২-৩ ঘন্টা পরে ব্যাথা চলে যায়।

আবার পায়খানার বেগের সাথে সাথে ব্যাথা শুরু হয়। আসলে যা হয় তা হলো মলদ্বারের ভিতরে পাতলা মিউকাস মেমব্রেন টি ছিড়ে যায়। আর তাই টাটকা রক্ত আসে আর ব্যাথা করে---------। এনাল ফিশার কোস্ঠকাঠিন্য বা ঘন ঘন ডায়রিয়া থেকেও হতে পারে । আবার ক্রোনস ডিজিজ নামের জটিল এক রোগের লক্ষন হিসেবেও প্রকাশ পেতে পারে।

এনাল পাইলস বা হেমোরয়েডস- এতে এনাল ফিশারের মতো ব্যাথা হয়না । সামান্য ব্যাথা থাকে কিন্তু রক্তপাত হয় । এনাল ফিশারে যেমন পায়খানার পরে রক্ত যায় এমাল পাইলস এ পায়খানার সময়ে বা আগে রক্ত আসে। আমাদের মলদ্বারের মধ্যকার রক্ত নালী গুলো ফুলে উঠে পাইলস তৈরী করে । কোস্ঠকাঠিন্যর সময় এই রক্ত নালী দিয়েই রক্ত আসে।

পাইলস এর পুরোপুরি চিকিৎসা সার্জারী। কিন্তু নিজের যত্ন ও কিছু পরামর্শ মেনে চললে নিয়ন্ত্রনে থাকে। এনো রেক্টাল এবসেস- প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে শুরু হয় সাথে জ্বর থাকে। মলদ্বারের পাশে লাল হয়ে ফুলে যায়। অনেকে ফোড়া ভেবে চেপে বের করার চেস্ঠা করেন কিন্তু পুরোপুরি বের না হলে কস্ট রয়েই যায়।

এবং ভিতরের দিকে ইনফেকশন ছড়িয়ে জটিল পরিস্তিতির সৃস্টি হয় । কারন ফোড়া বের করলে খালি জায়গায় মল লেগে বেশিরভাগ সময়েই ইনফেকশন হয় । তাই এই পরিস্হিতিতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। যা করবেন- ১। প্রথমেই কোস্ঠকাঠিন্য পরিত্যাগ করুন -ইদানিং তরুন তরুনীরা না খেয়ে ডায়টিং করে এবং সবার প্রথমেই কোস্ঠকাঠিন্য বাধিয়ে বসে।

তাই বলে কি ডায়টিং করবেন না ???????অবশ্যই করবেন কিন্তু ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শে। -প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন। -বেশী করে শাক জাতীয় খাবার খান। -ডাল অবশ্যই খাবেন,কোন না কোন খাবারে। -দরকার হলে রাতে একচামুচ ইসবগুলের ভুসি একগ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাবার অভ্যাস করুন।

-রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধ পান করুন। কখোনোই পায়খানার বেগ চেপে রাখবেন না কারন এতে মলের জলীয় অংশ শুষতে থাকে এবং মল আরও শক্ত হয় ,অনেক এনাল ফিশারের রোগী প্রচন্ড ব্যাথার ভয়ে পায়খানার বেগ সামলে রাখে যা রোগটা কে দীর্ঘায়িতই করে। ২। হট বাথ- একটি গামলায় বা যাদের বাথটাব আছে তারা সেখানে হাল্কা সুসুম গরম পানিতে একটু লবন দিয়ে বসবেন ১৫ মিনিট করে দিনে তিন বার । এটা ব্যাথা কমাতে খুবই কার্যকরী ৩।

জাইলোকাইন জেলী- মলদ্বারের বাহিরে লাগান ও এনুস্টেট জেল এপ্লিকেটর দিয়ে মলদ্বারের ভিতরের অংশে দিন। এক্ষেত্রে জাইলোকেইন লাগিয়ে ৫ মিনিট পরে এনুস্ট্যাট লাগালে ভিতরে জেল দিতে ব্যাথা কম পাবেন। লাগাবেন পায়খান করার ৫-১০ মিনিট আগে। তাহলে ব্যাথা কম হবে। ৪।

পায়খানার সময়ে স্ট্রেইন করবেন না ........কখনোই না। এরপরও উপসর্গ না কমলে ডাক্তারের কাছে আসুন কারন আপনার হয়ত অন্যান্য ওষুধ লাগবে বা সার্জারী লাগবে যা রোগের বিবরনী শুনে দেয়া/করা সম্ভব। এই রোগগুলো পুষে রাখেন অনেকেই। তরুন থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সবাই। বিষেশ করে ডায়াবেটিস বা হার্টের কোন রোগ থাকলে এই রোগগুলোর সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

বাথরুমে যেয়ে হার্ট এটাক হয়েছে এমন ঘটনা প্রায়ই শোনা যায় । বাথরুমে যেয়ে যে যে কারনে হার্ট এটাক হয় তার মধ্যে কোস্ঠকাঠিন্য অন্যতম। তাই সঠিক সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন । ওষুধ খান বা লাগলে সার্জারী করান কারন এটা পুষে রাখলে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.