আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বান্দরবান ভ্রমন নিয়ে মেগা ছবিব্লগ।

ব্লগে অনিয়মিত। অনেকদিনের প্লান ছিলো বান্দরবান যাবো। যাবো যাবো করেও যাওয়া হচ্ছিলো না। অবশেষে গত শুক্রবার রাতে শ্যামলী পরিবহনের বাসে চড়ে বসলাম বান্দরবানের উদ্দেশ্য। সাথে স্ত্রী, কন্যা।

সারারাত বাস চললো তুফান মেইলের মত। সকাল ৭ টায় বান্দরবান শহরে পৌছে গেলাম। বান্দরবান যাওয়ার আগে বান্দরবান সংক্রান্ত অনেক ব্লগ পড়েছি। ওখানকার কয়েকটা হোটেলের নাম্বার যোগার করেছিলাম। শহরে পৌছে রিক্সাওয়ালাকে বললাম কয়েকটা হোটেল এর সামনে নিয়ে ঘুরিয়ে আনতে।

২/৩ টা হোটেল ঘুরে প্লাজা বান্দরবান হোটেলটিই ভালো লাগলো। সেখানে একটা রুমে উঠে গেলাম। ডাবল বেডের এসি রুম। ১৫০০ টাকা। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে নাস্তা খেতে বের হলাম।

এবার ও রিক্সাওয়ালার সাহায্য নিলাম। রিক্সাওয়ালাকে বললাম ভালো একটা হোটেলে নিয়ে যেতে। সে বাজারের "আদর্শ ভাত ঘর" হোটেলে নিয়ে গেল। দারুন মজাদার পরোটা সাথে গরুর মাংশ। চা টা ও ভালো ছিলো।

খাওয়া দাওয়া করে হোটেলে ফিরেই দিলাম টানা ঘুম। দুপুরে ঘুম থেকে উঠে গোছল করে আবারো হোটেল থেকে চা পান করে একটা ব্যাটারী অটোরিক্সা নিলাম স্বর্ন মন্দিরের যাবার জন্য। ভাড়া ৮০ টাকা। স্বর্ন মন্দিরে উঠতে হলে বেশ খানিকটা সিড়ি বেয়ে উঠতে হয়। আমার আবার হাটুতে সমস্য।

তারপরেও সাহস করে উঠে গেলাম। ছবিগুলো ক্যানন ৫৫০ডি ও ১৮-৫৫ লেন্স দিয়ে তোলা। লেন্সের সাথে একটা HOYA CPL FILTER লাগানো ছিলো। যার কারনে আকাশের ছবি বেশ নীলচে এসেছে। আমার ব্লগের সব ছবিতেই আকাশ চলে এসেছে।

আকাশ আমার আগে থেকেই অনেক প্রিয় ছিলো, CPL FILTER কেনার পর আকাশের প্রতি ভালোলাগা একেবারে স্হায়ী হয়ে গেল। সামু সার্ভারে আপলোড করে ৫০ টা ছবি দিয়ে ব্লগ দেওয়া অনেক কষ্টকর। তাই ছবিগুলোকে ফ্লিকারে আপলোড করে এখানে এড করা হয়েছে। আমার অতীত অভিজ্ঞতায় বলে, অন্য সাইটে ছবি আপলোড করে সামুতে এড করলে লোড হতে সময় লাগে। তাই ছবি লোড হতে সময় লাগতে পারে।

১> এবার শুরু ছবি ব্লগ। প্রথমেই বেশ খানিকটা দূর থেকে তোলা স্বর্ন মন্দিরের ছবি। ২> ৩> ৪> ৫> আগেই শুনেছিলাম বান্দরবানে প্রায়ই রংধনুর দেখা পাওয়া যায়। আমাকেও হতাশ হতে হয় নি। ৬> ফিরে আসার পথে সান্গু নদীর উপর ব্রীজ থেকে তোলা।

স্বর্নমন্দির থেকে ফিরে আবারো রিক্সাওয়ালাকে বললাম শহরটাকে একটা চক্কর দিতে। সে বাজারে পূর্বপাশে উপজাতী অধ্যুষিত এলাকাতে ঘুরিয়ে নিয়ে এল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে একটা ফাষ্টফুডের দোকানে মিষ্টি পরোটা ফ্রুট কেক আর চা খেলাম। পরের দিন নীলগীরি যাবো। সকাল সকাল যেতে হবে তাই আগের দিন গাড়ী ঠিক করে রাখাটাই ভালো কাজ হবে মনে করে বাস স্ট্যান্ডে গেলাম ।

সেখানে গিয়ে একটা ছোট টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ভাড়া করলাম ৪০০০ টাকা। প্যাকেজ এভাবে, সকালে সরাসরি লীলগিরি, সেখান থেকে আসার পথে চিম্বুক, তারপর শৈলপ্রপাত। বিকালে আবার মেঘলা ও সন্ধ্যায় নীলাচল ভ্রমন। এই সময় পরেরদিন রাতে ঢাকায় আসার টিকেট কেটে রাখলাম শ্যামলী পরিবহনের। ভাড়া ৫৫০ টাকা জন প্রতি।

শহর ছেড়ে বের হতেই এক পাহাড়ীকে দেখলা কলার ছড়ি নিয়ে যাচ্ছে। একদম পাকা কলা। এইমাত্র গাছ থেকে কেটে নামানো হয়েছে। ২ ডজন কলা কিনলাম ৫০ টাকা দিয়ে। সারা রাস্তায় সেই কলা আমি আর আমার মেয়ে খেলাম।

নীলগীরি যাওয়ার পথের স্বর্পিল পথ। আকাবাকা পথের দুপাশে যাই দেখি চোখ জুড়িয়ে যায়। এটি দূর থেকে তোলা পাহাড়ের চুড়ায় নীলাচলের ছবি। ৭> নীলগিরিতে ঢুকতে ১০০ টাকার টিকেট কাটতে হয়। সাথে পার্কিং ফি ১০০ টাকা।

৮> স্বপ্নের নীলগীরি রিসোর্ট। ৯> ১০> ১১> ১২> দূরবীন, ট্রাই করিনি ১৩> হেলিপ্যাড। যেমনটা ব্লগ পড়ে, লোকমুখে শুনেছি। ওখানে মেঘ ছোয়া যায়। নীলগীরি যাওয়ার উদ্দেশ্যও ৯০% এমনটাই ছিলো।

কিন্তু ওখানে গিয়ে কাছকাছি কোন মেঘ দেখতে পাচ্ছিলাম না। হটাৎ দক্ষিন দিকে দেখলাম কালো মেঘ এগিয়ে আসছে। ১৪> মেঘ আর কাছে আসলোই না। এই মেঘকে আর ছুতে পারলাম না। এই নিয়ে আমার বউয়ের কিযে আফসোস।

১৫> ১৬> কি আর করা। আশেপাশে ভয়াবহ সুন্দর দিগন্তের ছবি তুলতে লাগলাম। ১৭> ১৮> ১৯> ২০> ২১> ২২> ২৩> ২৪> ২ ঘন্টা সেখানে ঘুরাঘুরি করে এখন ফিরে আসার পালা। সর্পীল আকাবাকা রাস্তার কথা আগেই বলেছি। রাস্তাটা বেশ ভালো।

খানাখন্দ খুব কম। যাও কিছু আছে, দেখলাম সেনাবাহিনীর লোকজনের তত্বাবধানে মেরামত করা হচ্ছে। এবার সেই রাস্তার কিছু ছবি। ২৫> ২৬> ২৭> ২৮> ২৯> ৩০> ৩১> ৩২> পিক ৬৯। এই পিচঢালা পথটুকু বাংলাদেশের সর্ব উচু গাড়ী চলা পথ।

চিম্বুক পাহাড়ে উঠার আগে গাড়ি থামিয়ে গাছে পাহাড়ী পাকা কলা, পেপে আর কমলা খেলাম। পেপের রং লালচে। আমরা যেরকম হলুদ দেখি, সেরকম না। অনেক মিষ্টি। ৩৩> নিচের ছবিগুলো চিম্বুক পাহাড়ের উপর থেকে তোলা।

৩৪> হটাৎ করেই চিম্বুক পাহাড়ের পশ্চিম দিকে মেঘ জমতে শুরু হলো। হটাৎ করেই বৃষ্টি শুরু হলো। আমার থেকে বেশী হলে ২০০/৩০০ গজ দুরে বৃষ্টি হচ্ছে। ৩৫> ৩৬> বৃষ্টি পশ্চিম থেকে দক্ষিনে চলে গেল। ৩৭> চিম্বুক থেকে নেমে আসার পথে চোখে পড়লো বিশাল এক মাকড়শা।

এত বড় কালারফুল মাকড়শা আমি আগে দেখিনি। ৩৮> পাহাড়ের গায়ে আশ্চর্য এক লতা গাছ দেখতে পেলাম। ফুল আসার আগে এর পাতা ধবধবে সাদা হয়ে যায়, তারপর অদ্ভুত সুন্দর গোলাপী ফুল বের হয়। ৩৯> চিম্বুক থেকে নেমে আসার পর রাস্তা বৃষ্টিতে পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিলো। এই বৃষ্টিভেজা রাস্তায় গাড়ি চালানো অনেক বেশী ঝুকিপৃর্ন।

৪০> শৈলপ্রাপাতের ছবি। যদিও পানি পরিষ্কার থাকে, কিন্তু বৃষ্টি হলে পাহাড়ি মাটি ভেন্গে পানি নেমে আসে, ফলে পানি ঘোলাটে হয়ে যায়। ৪১> ৪২> মেঘলা লেকের উপর ঝুলন্ত সেতু। ৪৩> ৪৪> লেকের উপর ক্যাবল কার। ৪৫> আমাদের ভ্রমনের শেষ স্পট নীলাচল।

৪৬> নীলাচলের উপর থেকে তোলা বান্দরবন শহরের দক্ষিন দিকের ছবি। ৪৭> পাহাড়ের পাদদেশে জমতে থাকা মেঘ। ৪৮> গোধুলী বেলা ৫০> চিম্বুকের উপর থেকে পৃর্বদিকের একটা প্যানোরমা ভিডিও তুলেছি। সেটা ফ্লিকারে আপলোড করে দিলাম। ভালো লাগতেও পারে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।