আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি। ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা বলে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান রচিত, তাতে বলা হয়েছে : যে-কেউ তার মত প্রকাশ করতে পারবেন, তবে অন্যের স্বাধীনতা ুণœ করে নয়। সেই দেশটিতে ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ সা:কে নিয়ে যে ঘৃণ্য ও শিষ্টাচার-বহির্ভূত চলচ্চিত্র ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ করেছে একজন ইহুদি। এ নিয়ে তামাম দুনিয়ায় চলছে ছি ছি, ধিক্কার।
বিশেষ করে ইন্টারনেটের কারণে দুনিয়াজোড়া মানুষের প্রতিক্রিয়া সহজেই সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলা ভাষাভাষীরাও এ প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। সাম হয়্যার ইন ব্লগ ও সোনার বাংলাদেশ ব্লগে গতকাল এ নিয়ে একাধিক ব্লগার তাদের মতামত তুলে ধরেছেন। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, গুগল প্লাসসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন সাইটেও এ নিয়ে নিন্দার ঝড় বইছে।
মিসরের প্রধানমন্ত্রী হিশাম এর নিন্দা করে সহিংসতা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর নিন্দা জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে। গতকাল হজযাত্রীদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এমনটি বলেছেন।
ভিডিও শেয়ারের অন্যতম প্রধান ওয়েব পোর্টাল ইউটিউবে দেখা গেছে, কয়েক লাখ মানুষ চলচ্চিত্রটির কিপিংস দেখেছেন। এতে সর্বাধিক সাড়ে ১৩ মিনিটের যে ট্রেলরটি দেখানো হচ্ছে, তাতে নবী মুহাম্মদ সা:, নবীর প্রথম স্ত্রী খাদিজা রা: এবং ইসলাম সম্পর্কে কুৎসিত ও অশ্রাব্য মন্তব্য করা হয়েছে।
কোনো সুস্থ মস্তিষ্ক থেকে এমনটা আশা করা কঠিন উল্লেখ করে একজন ব্লগার লিখেছেন আমি অনেকটা নাস্তিক।
তবে ট্রেলরটি দেখে আমার খুবই কষ্ট হয়েছে। একজন নবীকে এভাবে আক্রমণ করা কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। অন্তত জীবনে যারা একবার কালেমা পড়েছেন তারা এটি করতে পারেন না।
ফেসবুকে একজন প্রথিতযশা কবি ও কথাশিল্পী লিখেছেন এ নির্মাতাকে পশুর সাথে তুলনা করলে পশুদের অপমান করা হবে। নির্মাতাকে ‘বেয়াদব’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিশ্বের শান্তিই নষ্ট করবে নাÑ একই সাথে ধর্মের সাথে ধর্মের সংঘর্ষ বাড়াবে।
চলচ্চিত্রটির ট্রেলারে দেখানো হচ্ছে একটি পর্নো কিপও। এতে বলা হচ্ছে, ইসলামের অনুসারীরা টেররিস্ট (সন্ত্রাসী)। একই সাথে তারা আড়ালে চরিত্রহীন। যেটি তারা ধর্মের লেবাসে ঢেকে রাখে। ফিলিস্তিনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সেখানে মুসলমানেরা খ্রিষ্টানদের ক্রুশ চিহ্ন দেখা মাত্রই হত্যা করছেন বলে চিত্রায়িত করা হয়েছে।
নবী মুহাম্মদ সা: সম্পর্কে এমন সব মন্তব্য ও সংলাপ রয়েছে, যেটি লেখা সম্ভব হচ্ছে না।
তারা নবী মুহাম্মদ সা: ও বিয়ে নিয়ে শ্লেষাত্মক মন্তব্য করেছে চলচ্চিত্রটিতে। এতে ইসলামের মূল কথা কুরআনই মুসলমানদের সংবিধান ও নবী মুহাম্মদ সা: আল্লাহর প্রেরিত পুরুষÑ এটি উল্লেখ করা হয় কয়েকজন উগ্রবাদীকে দিয়েÑ যারা হত্যা ও লুটের সাথে জড়িত। এ চলচ্চিত্রে নবী সা:-এর সময়কার বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। ঘোড়াকে প্রশ্ন করা হয়, সে মুসলিম কি না? তার নাম কী?
মোট কথা চলচ্চিত্রটির ট্রেলর দেখে যে-কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য আয়োজনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন এটি খুবই স্বাভাবিক।
তবে ব্লগ, ফেসবুক ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এর সহিংস প্রতিবাদ কতটা বাঞ্ছনীয়। এর জবাবও তুলে ধরেছেন ব্লগারেরা। তারা বলেছেন, এ ঘটনা নিয়ে কাউকে হত্যা অবশ্যই অপরাধ। কিন্তু এ রকম একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে শিষ্টাচার-বহির্ভূতভাবে যে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছেÑ এটি বিশ্বের দেড় শ’ কোটিরও বেশি মুসলমানকে আঘাত করেছে। এতে অনেকে ক্ষিপ্ত হতে পারেন এবং সহিংস হতে পারেন।
এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে এখনই চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করা উচিত।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে পুলিশ চলচ্চিত্রটির প্রযোজক নাকৌলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ ব্যক্তি ব্যাংক জালিয়াতির দায়ে দণ্ডিত। বর্তমানে সে জামিনে মুক্ত রয়েছে। সেখানকার পুলিশকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমগুলো খবর প্রচার করছে, তাকে মূলত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে যে, সে জামিনের কোনো শর্ত লঙ্ঘন করেছে কি না।
এতে ইন্টারনেট ব্যবহারকরীদের অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ইউটিউব-জুড়ে কেবল সিনেমাটির ট্রেলর নয়, এর পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন বক্তব্যও আপলোড করা হচ্ছে। এতে বিশ্বের দেশে দেশে মুসলিমদের ুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও তার ভিডিওচিত্র আপলোড করে এটাকে জঙ্গি উত্তেজনা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে সেটাকেও মোকাবেলা করছেন মুসলিমদের অনেকে। তারা বলছেন, এটি একটি স্বাভাবিক প্রতিবাদ।
এটা ভুলে গেলে চলবে না, যাকে নিয়ে এ শিষ্টাচার-বহির্ভূত চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে তিনি মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:।
তথ্যজ্ঞান ও বিজ্ঞানময়তার এ যুগে এ রকম একটি জঘন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ হতে পারে তা অনেককে অবাক ও বিস্মিত করেছেন। বিশ্বের ুদ্রতম সংবিধান দিয়ে পরিচালিত বৃহৎ যুক্তরাষ্ট্রের এ কলঙ্কময় কর্মকাণ্ডে তাই বিশ্বজুড়ে বিবেকবান মানুষ বিুব্ধ। সবারই আশা যুক্তরাষ্ট্র সরকার এর এমন একটি সমাধান বের করবে যাতে মুসলিম সমাজের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।