আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বুয়েটের আন্দোলন ও প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গ

আমি সকল ধর্মের উদ্ধে উঠে মানবতাকে আলিঙ্গন করতে চাই। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) বাংলাদেশের ১ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। বুয়েটের লেখাপড়ার মান নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সম্প্রতি বুয়েট গরম হয়ে যাওয়া এবং ইহা নিয়ে সরকারের অনীহা ও আপত্তিকর বক্তব্য দেখে সবার মনেই এক প্রশ্ন জাগ্রত হচ্ছে কি এমন হল বুয়েটে! আমার নিজস্ব মন্তব্য ও কাছের কিছু বন্ধু আর পত্রিকার কিছু অংশ আলোচনার মাধ্যমে এই লেখাটি উপস্থাপনার চেস্টা করব। সাধারণত অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যেমন দুই দিন পরপরই মারামারি-কাটাকাটি, খুন এসব ঘটনা ঘটে থাকে বুয়েটে কিন্তু কখনই এমনটা ঘটে না।

বরং বুয়েটের ছাত্ররা অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনাই শান্ত হয়ে থাকে। কিন্তু কি এমন ব্যাপার ঘটলো যে কারণে বুয়েট আজ অশান্ত? স্বাভাবিক ভাবেই মনে প্রশ্ন জাগার কথা। কারণ বড় কিছু না ঘটলে এরকম ঘটার কোনো কারণই নেই। যেই বুয়েটের এত সুনাম সেই বুয়েটের শিক্ষকেরা উপাচার্য অপসারণের জন্য আন্দোলনে নামে প্রথম। তারপর ছাত্র-ছাত্রীরাও যোগ দেয়।

এর পিছে উপাচার্যের দোষ না থাকার কোনো কারণ আমি দেখি না। কারণ বুয়েটে আগে কখনো এমন হয়েছে বলে কেও শুনেনি। সুতরাং প্রশ্ন শিক্ষক বা ছাত্রদের দিকে না উঠে উপাচার্যের দিকেই উঠা উচিৎ। শিক্ষক নিয়োগ সহ অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি সকল পাবলিক ইউনিভার্সিটিতেই বিদ্যমান। কিন্তু এই রীতি বহু বছর ধরে লালিত হয়ে আসছে বলে ছাত্র-শিক্ষক কারোরই মাথাব্যথা নেই।

কারণ ঐ ভার্সিটির শিক্ষক ঐ নিয়মেই শিক্ষক পদ লাভ করেছেন আবার ঐ ছাত্ররাও ঐ নিয়মেই শিক্ষক হবে। কিন্তু বুয়েটে এইসব নিয়মের ব্যাপারে সব সময়ই কঠোর ছিল। তাই এই উপাচার্য যখন নিয়ম ভাংতে গেল তখনই বিপত্তি। কারণ এখানে ঐ নষ্ট নিয়মের প্রাক্টিস চলে না যা অন্য সব ভার্সিটি গুলোতেই চলে থাকে। সুতরাং এর প্রতিবাদ করা দোষের কিছু নয়।

কিন্তু সরকার এই আন্দোলনের পক্ষে নয় কারণ তারা নিজেদের লোক নিয়োগ দিতে পারছেনা এই পদ্ধতির মাধ্যমে সুতরাং দুর্নীতিই একমাত্র উপায়। তাই ভিসি নিয়োগ যেহেতু তাদের হাতে ছিল সেই সুযোগটিই তারা নিতে চেয়েছিল। এটি দিনের আলোর মতই পরিষ্কার। এরপর আসি আন্দোলনের ধরন প্রসঙ্গে। আন্দোলন হতে পারে সহযোগ বা অসহযোগ।

আবার অসহযোগ আন্দোলন দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে অসহযোগের দিকেও ধাবিত হয়। বুয়েটে ঠিক এমনটিই হয়েছে। শুরুতেই যদি তারা ভাংচুরের দিকে যেত তাহলে তাদের দোষ দেওয়া যেত, কিন্তু তারা শুরুতে মৌন অবস্থানে থেকে সরকারের নিকট অনুরোধ করেছে। যখন সরকার তাদের হতাশ করেছে তখন আন্দোলন এক্সট্রিম পর্যায়ে গিয়েছে। তাই আমি মনে করি সরকারের এই আন্দোলনের নিন্দা করার কোনো অধিকার নেই।

কারণ তারা তাদের কোনো সহযোগীতাই করেন কোনো কথাও তারা রাখেনি। বরং প্রধাণমন্ত্রীর মুখের ভাষা ছিল আপত্তিকর। সুস্থ মানুষের বক্তব্য এরকম হতে পারেনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কঠোর পদক্ষেপের বদলে আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সমাধান করতে চাই। তবে কীভাবে কঠোর হতে হয়, সেটাও আমাদের জানা আছে।

’ তার মানে কি তিনি বুয়েটের ছাত্রদের হুমকি দিলেন? তিনি কি বোঝাতে চাইলেন তার কথা না শুনলে বুয়েটের কমার্সে পড়ুয়া তার পোষা কুকুর বাহিনী নিরীহ ছাত্রদের উপর লেলিয়ে দিবেন? বাহ এই হল আমাদের দেশের মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী। তালি। তিনি বুয়েটের এই বিদ্রোহকেও কটাক্ষ করেছেন। বিদ্রোহ প্রকাশের নিজস্ব কোনো সংগা বা ধরাবাধা নিয়ম নেই। প্রত্যেকের নিজস্ব নিয়োম রয়েছে তার ক্ষোভ প্রকাশের।

সেই ক্ষোভ প্রকাশের জন্যই সিরিঞ্জে করে রক্ত নিয়ে সিড়িতে ঢেলেছিল বুয়েটের ছাত্ররা। এতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানসিক বিকৃতি দেখতে পান কিন্তু আমি সাহসীকতাই দেখতে পাই। যেখানে বেশি ভাগ মানুষ তার রক্ত পরীক্ষা করতে গিয়ে রক্ত দিতে ভয় পায় সেখানে তারা ক্ষোভ প্রকাশের জন্য বাহবা পাওয়ারই কাজ করেছে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে এসব বুঝিয়ে কোনো লাভ নেই কারণ তিনি তার গোড়ামি অবস্থানে অনড়ই থাকবেন। যেন তাল গাছ আমার।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সবচেয়ে জঘন্য কাজ হচ্ছে, একটি ছেলে একটি মেয়ের গা থেকে রক্ত নিচ্ছে। এর মধ্যে কী বাহবা আছে, আমি বুঝতে পারি না! সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত নিয়ে সিঁড়িতে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের বিকৃত মানসিকতা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কীভাবে আসে?’ এই ধরনের ক্ষোভ শিক্ষার্থীরা প্রকাশ করায় কই আমাদের প্রধানমন্ত্রী লজ্জিত হবেন বরং আপত্তিকর কথা বলে বেরাচ্ছেন। বরং তার কথা শুনে জাতিই যেন লজ্জা পেল। ভিসির উদ্দেশ্যেও কিছু কথা বলা প্রয়োজন।

তার যদি ন্যূনতম চক্ষু লজ্জা থাকত তাহলে বহু আগেই পোস্ট ছেড়ে দিত। কিন্তু এমন বেহায়া যে কিনা বলে বাহির হতে শিক্ষক আনিয়ে ক্লাস করাবে। মান ইজ্জত কিছুই তো আর রাখলো না। :/ এবার আমার নিজের অবস্থান আমি পরিষ্কার করি। আমি বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থী নই।

আমি রাবি এর একজন সাধারণ ছাত্র। আমি সুধু এই পোস্টটি করেছি আমার বন্ধুদের ভুগতে দেখে। তাদের পাশে বাহিরের ছাত্ররাও নিঃস্বার্থ ভাবে যাতে তাদের এই দু;সময়ে দাঁড়ায় এজন্য সবাইকে আহবান জানাতে। তবে অনেককে এই বিষয় নিয়ে অনেক নেগেটিভ কমেন্টও করতে শুনেছি। তাদের উদ্দেশ্য আমার মন্তব্য তারা বুয়েট নিয়ে জেলাস।

এই কারণেই তারা বুয়েটের এই অবস্থা দেখে মনে মনে খুশি। কিন্তু তারা যদি সুযোগ পেত তারাও এই একই অবস্থানে থাকত আজ যেমন অন্য বুয়েটিয়ানরা আছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.