আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অভিশপ্ত 'ম্যানিলা ফিল্ম সেন্টার' ও স্বৈরাচারী মার্কোসের পতন

মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! অভিশপ্ত 'ম্যানিলা ফিল্ম সেন্টার' ও স্বৈরাচারী মার্কোসের পতন --------------------------------------------- ডঃ রমিত আজাদ ফিলিপাইনের একটি মর্মান্তিক ঘটনার কথা মনে পড়লো। ১৯৮১ সালের ১৭ নভেম্বরের কথা। ফিলিপাইনের রাষ্ট্রক্ষমতায় তখন ছিলো জান্তা ফার্দিনান্দ মার্কোস। দেশের জনগণের কাছে যার কোন জনপ্রিয়তাই ছিলনা। তারপরেও বহাল তবিয়তে সিংহাসনে বসে ছিলো খুটির জোড়ে।

একবার তার খ্যাতির লক্ষ্যে ভাবলেন, তাক লাগানো একটি ফিল্ম সেন্টার তৈরী করবেন তিনি। যথারীতি শুরু করলেন ব্যয়বহুল 'ম্যানিলা চলচ্চিত্র কেন্দ্র'-এর নির্মাণ। নির্মাণ চলাকালীন সময়ে তিনি এবং তার রূপসী স্ত্রী ইমেল্দা মার্কোস কয়েকদফা নির্মাণ পরিকল্পনা পরিবর্তন করেন। এর ফলে একদিকে যেমন কাজে বারবার বাধা আসছিলো আবার সেই বাধা মেক-আপ করার জন্য আসন্ন ফিল্ম ফেস্টিভালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য করে বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য তাড়াহুড়োও করা হচ্ছিলো প্রচুর। এসময় দুর্ভাগ্যবশত একটি scaffold ধ্বসে পড়ে, আর শ্রমিকরা পতিত হয় ভেজা সিমেন্টের মধ্যে যার উপরে ধ্বসে পড়েছিলো ভারী ভারী ইস্পাতের বার।

অনেকেরই জীবন্ত কবর হয় ওখানে। বেঁচে থাকা অনেকেই ট্র্যাপ্টড হয়ে যায় । যেহেতু মৃতদেহ ও জীবিতদের উদ্ধার করতে যথেস্ট সময়ের প্রয়োজন ছিলো, তাই ইমেল্দা মার্কোস নির্দেশ দিলো, "উদ্ধার করার প্রয়োজন নেই, দেহগুলোকে সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দাও। কন্সট্রাকশন ওয়ার্ক চলুক। " এই দুর্ঘটনায় ১৬৯ জন মারা যায়।

এবং তাদের দেহাবশেষ ঐ ইমারতেই রয়ে যায়। এই ভয়াবহতা ও নির্মমতার সংবাদ সকল ম্যানিলাবাসীই জানতো। কিন্তু প্রেসিডেন্ট মার্কোসের নির্দেশে ফিলিপিনি কোন সংবাদ মাধ্যেমেই তা প্রচারিত হয়নি। হায়রে নিস্ঠুরতা! স্বৈরাচার থাকলে যা হয় আরকি!! ঐ অভিশপ্ত ভবনটির চারপাশ দিয়ে ভয়ে কেউ হাটতে চাইতো না। লোকে বলতো, নিহত হতভাগ্য শ্রমিকদের আত্মার দীর্ঘশ্বাস শোনা যায় ওখানে।

পুরো ভবনের বাতাস ভারী হয়ে থাকে অকালে ঝরে পড়া অতৃপ্ত আত্মাদের চাপা কান্নার শব্দে। এর ফল অবশ্য ক্ষমতার দাপটে অন্ধ মার্কোস পরিবার পেয়েছিলো। কয়েক বৎসর পরে এই সাধারণ মানুষগুলোই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ক্ষমতা থেকে ফেলে দিয়েছিলো ফার্দিনান্দ মার্কোস ও ইমেল্দা মার্কোসকে। ক্ষমতার জোরে অনেকেই অনেক কিছু করে আর বেমালুম ভুলে যায় ইতিহাসের শিক্ষা যে, ‘ক্ষমতা চিরকাল থাকেনা’। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।