আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেলের ভাড়া বাড়ছে ৫০%। দুর্নীতি= %?!

এস এম আরিফ প্রায় বিশ বছর পর বাংলাদেশ রেলওয়ে ভাড়া বাড়ানোর সিন্ধান্ত নিয়েছে। প্রস্তাবিত বৃদ্ধির হার পূর্বের চেয়ে ৫০% বেশি। তার মানে হচ্ছে ১০০ টাকার টিকেট এখন থেকে কিনতে হবে ১৫০ টাকায়। সরকারের অনেক লোকসানি খাতের একটি রেল। এর ভাড়া বাড়ানোর উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং সময়োপযোগী।

তবে সেটা ৫০% হওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত? এটা ঠিক ৫০% বাড়ালেও তা অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় কমই থাকে। তবে কথা হচ্ছে, সাধারণ যাত্রী এই বৃদ্ধিকে কীভাবে নেবে? রেলওয়ে বাংলাদেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারি খাত। এই দুর্নীতিতে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাধারণ যাত্রী এমনকি মন্ত্রী পর্যন্ত জড়িত। যদিও দুদক মন্ত্রীকে দুর্নীতির সাথে জড়িত নয় বলে চার্টিফাই করেছে। রেল যাত্রীদের একটা বড় অংশ হচ্ছে ছাত্র এবং ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ।

একটা সময় ছিল যখন এই শ্রেণীর মানুষেরা ব্যাপক ভাবে বিনা টিকিটে রেলে ভ্রমণ করত(অন্যরা যে করত না তা নয়)। কয়েক বছর যাবত সেই প্রবণতাটা অনেক অনেক কমেছে। সেটা যতটা না রেলের সুমতিতে তার চেয়ে বেশি সাধারণ মানুষের পরিবর্তনে। তারপরও কিন্তু রেলওয়ে লোকসানের পরিমাণটা কমাতে পারেনি। ভাড়া ৫০% বৃদ্ধি করলেই কি লোকসান কমে যাবে? সেবার মানোন্নয়নের কথা না হয় বাদই দিলাম।

১০০ টাকার টিকিট ১৫০ টাকায় করতে গিয়ে না মানুষ আবার আগের অবস্থানে চলে যায়, সে ভয় হওয়ায়ই স্বাভাবিক। এবার দেখুন রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির রকমফেরটা। যারা নিয়মিত রেলে ভ্রমণ করেন তারা নিশ্চয় টিকিটের দুষ্প্রাপ্যতার কথা জানেন। এই দুষ্প্রাপ্যতার একটি কারণ যেমন বেশি যাত্রী তেমনি আরেকটি কারণ টিকিট কালোবাজারি। আপনি অনেক সময় তেলমালিশ করে একটু উৎকোচ দিলেই পেয়ে যাবেন দুষ্প্রাপ্য টিকিট! আবার আপনি যদি বড় স্টেশনগুলোতে ট্রেন ছাড়ার আগের মুহূর্তে টিকিট কাটতে যান, তাহলে দেখবেন টিকিটদাতার শ্লথ গতি।

এর একটা কারণ হচ্ছে অদক্ষ কর্মী, আরেকটি হচ্ছে ওরা আপনাকে টিকিট দেবে না। কারণ ওদের লোকজন প্লাটফরমে এবং ট্রেনের ভিতরে আপনারই অপেক্ষায় থাকবে। যেখানে আপনি টিকিট দেখাতে না পারার কারণে ঘুষ দিতে বাধ্য হবেন, না হয় দিতে হবে দেড়গুণ ভাড়া(রেলের আইন অনুসারে)। অবৈধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে এর চেয়ে বেশি কী আপনি আশা করতে পারেন? এরা যে অবৈধ তা প্রমাণ করে গেছেন সাবেক রেলমন্ত্রী। যদিও আপনি কিছু ব্যতিক্রম দেখাতে পারবেন।

এমতাবস্থায় ভাড়া ৫০% বাড়ালে হিতে বিপরীতও হতে পারে। বৃদ্ধির হারটা আরেকটু কম হলে কি চলত না? দুই-চার বছর পরে আবার না হয় বাড়ানো যেত। ততদিনে যাত্রীরা ব্যাপারটার সাথে পরিচিত হয়ে যেত। তাছাড়া বর্তমানকালে এটা মনে হচ্ছে যে, সাধারণ মানুষের আয় বেড়েছে। তা ঠিক, তবে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কিন্তু খুব একটা বৃদ্ধি পায়নি।

বর্তমান মূল্যস্ফীতির হারটাও কিন্তু ১০.৬২%। সবশেষে প্রশ্ন, রেলের ভাড়া বাড়ছে ৫০%। দুর্নীতি= %?! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.